• পাণ্ডুয়ার গ্রামে হামলায় মৃত যুবক, জনরোষে পুড়ল বাড়ি, ধানের গোলা
    বর্তমান | ১২ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: মুরগির খামার নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের জেরে জখম এক যুবকের মৃত্যু হল। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বুধবার তীব্র উত্তেজনা ছড়ায় পাণ্ডুয়ার সিমলাগড়-ভিটাসিন গ্রাম পঞ্চায়েতের পোটবা গ্রামে। ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের একাংশ স্থানীয় চারজন যুবকের বাড়িতে হামলা চালায়। তাদের বাড়ি ভাঙচুরও করা হয়। অভিযোগ, দু’জনের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে উত্তেজিত জনতা। সেই আগুনে পুড়ে গিয়েছে খড়ের পালুই, ধানের গোলা। পরিস্থিতি সামাল দিতে বুধবার দুপুরে গ্রামীণ পুলিসের অতিরিক্ত সুপার কল্যাণ সরকারের নেতৃত্বে বিরাট পুলিস বাহিনী ঘটনাস্থলে যায়। পাশাপাশি, দমকলের দু’টি ইঞ্জিন গিয়ে আগুন নেভানোর কাজ করে। এই ঘটনায় নতুন করে কেউ হতাহত না হলেও এলাকায় তীব্র উত্তেজনা রয়েছে।  

    পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত যুবকের নাম আজিজুল মল্লিক (৩৮)। তিনি ওই গ্রামেরই বাসিন্দা। গত সোমবার গ্রামবাসীদের সঙ্গে মুরগি খামারের মালিকপক্ষের সংঘর্ষ হয়। সেই সময় জখম হন আজিজুল। পরে তাঁকে কলকাতার একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। এদিন দুপুরে তিনি সেখানেই মারা যান। সেই খবর ছড়িয়ে পড়তেই পোটবার মুসলিমপাড়া অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। হুগলি গ্রামীণ জেলা পুলিস জানিয়েছে, ঘটনাস্থলে পুলিস পিকেট বসানো হয়েছে। আগেই পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ঘটনার তদন্ত চলছে। বেশ কয়েকজন অভিযুক্ত পলাতক। ছেলের মৃত্যুর খবর আসার পর থেকে উন্মাদের মতো করছেন আজমেরা বিবি। তিনি বলেন, আমার ছেলের সঙ্গে মারামারির কোনও সম্পর্ক ছিল না। ও শুধুমাত্র দু’পক্ষের মধ্যে বিবাদ মেটানোর চেষ্টা করেছিল। ছেলেটা ‘এসে রুটি খাব’ বলে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। সেই রুটি এখনও ঘরে পড়ে রয়েছে, আর আমার ছেলেটা ফিরল না। আজিজুল এলাকায় পরোপকারী ছেলে হিসেবে পরিচিত ছিল।

    স্থানীয় ও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, পোটবায় জামশেদ আলির একটি মুরগি খামার রয়েছে। ওই খামারের আশপাশের বাড়ির লোকজন দূষণ ছড়ানোর অভিযোগ তুলেছিলেন খামার মালিকের বিরুদ্ধে। গত সোমবার সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখতে সরকারি প্রতিনিধিরা এসেছিলেন। তারপরেই জামশেদ আলি ও তাঁর চার প্রতিবেশীর মধ্যে প্রথমে বচসা, পরে সংঘর্ষ হয়। মৃত আজিজুল নিজেও ছোটখাট একটি মুরগির খামার চালাতেন। সেদিন তিনি জামশেদের খামারেই ছিলেন। বচসার সময় তিনি দু’পক্ষকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। অভিযোগ, সেই সময় তাঁর মাথায় আঘাত করা হয়। এদিন তার মৃত্যুর খবর গ্রামে আসতেই একদল বাসিন্দা জামশেদের চার প্রতিবেশী যুবকের বাড়িতে হামলা চালায়। পরে পুলিস গিয়ে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার দিন থেকেই ওই চার যুবক পলাতক। তাদের বিরুদ্ধে স্থানীয় মসজিদের জমি দখলের অভিযোগ রয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)