'সঙ্কটের সময় BJP-কে অক্সিজেন দেয় তৃণমূল' INDIA জোটে বিবাদ তুঙ্গে
আজ তক | ১২ ডিসেম্বর ২০২৪
ইন্ডিয়া জোটকে নেতৃত্ব দেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইন্ডিয়া জোটের কয়েকটি শরিক দলও মমতাকে সমর্থন করেছেন। এনিয়ে এবার নিজের মত জানালেন বাংলার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার। সমর্থনের বার্তা দিয়েও খোঁচা দিয়েছেন তিনি। তাঁর দাবি, বিজেপিকে খারাপ সময়ে অক্সিজেন দেয় তৃণমূল। তিনি বলেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই দাবি করেছেন যে তিনি ইন্ডিয়া জোটের নেতৃত্ব দেবেন। এতে কোনও সমস্যা নেই। ইন্ডিয়া জোটের যে কোনও অংশীদারের এটি প্রাপ্য, কিন্তু যে সময়ে সংসদ চলছে, প্রতিদিন মাঠ ছেড়ে বিজেপি পালিয়ে যাচ্ছে। যখনই বিজেপি কোনও সমস্যাতে পড়ে সেই সময়ে তাদের ও কেন্দ্রীয় সরকারকে অক্সিজেন দেয় তৃণমূল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদক্ষেপ বেশ কয়েকবার বিজেপিকে অক্সিজেন সরবরাহ করেছে এবং বিজেপি যখন সঙ্কটে রয়েছে তখন ঐক্যবদ্ধ বিরোধী ফ্রন্টকে লাইনচ্যুত করেছে।'
শুভঙ্কর আরও লেখেন,'যখন বিজেপি তার সাংবিধানিক লঙ্ঘন, আদানি দুর্নীতি এবং নির্বাচনী অপব্যবহারকে ন্যায্যতা দেওয়ার চেষ্টা করছে। তখন নেতৃত্বের দাবি বিজেপিকে সুবিধা দেওয়ার জন্য একটি বিভাজনমূলক ব্যবস্থা ছাড়া আর কিছুই নয়। I.N.D.I.A জোটের 'I' মানে অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং জোটের প্রতিটি সিদ্ধান্ত একটি সাধারণ ন্যূনতম কর্মসূচির মাধ্যমে ঠিক হওয়া উচিত।'
শুক্রবার এক টেলিভিশন সাক্ষাত্কারে তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো বলেন, ইন্ডিয়া ব্লকের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য তিনি। তাই সুযোগ হলে বিরোধী জোটের দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইন্ডিয়া জোট সম্পর্কে বলেন, ”আমি তো ইন্ডিয়া অ্যালায়েন্স তৈরি করে দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই জোট একজোট হতে পারছে না তো আমি কী করব? আই অ্যাম নট লিডিং দ্যাট ফ্রন্ট। যারা লিডার, তাদের এটা দেখা উচিত। তবে আমার সঙ্গে সমস্ত আঞ্চলিক ও জাতীয় দলের যোগাযোগ রয়েছে। আই মেনটেন দ্য বেস্ট রিলেশন।” তবে ইন্ডিয়া জোটের নেতৃত্বে কি তাঁকে দেখা যেতে পারে? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "যারে দেখতে নারি তার চলন ব্যাঁকা। আমাকে দেখতেই পারে না, তবে আমি দায়িত্ব পেলে এটুকু বলতে পারি, যদিও আমি তা চাই না, বাংলার মাটি ছেড়ে কোথাও যেতে চাই না। এখানেই জন্মেছি, শেষ নিঃশ্বাস এখানেই ত্যাগ করব। কারণ বাংলাকে আমি এতটাই ভালোবাসি। কিন্তু এটুকু আমি মনে করি, এখানে বসেও আমি এটা চালিয়ে দিতে পারি।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বের ক্ষমতাকে ইতিমধ্যে স্বীকৃতি দিয়েছেন এনসিপি নেতা শরদ পওয়ার । তিনি বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্যই এই জোটের নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন। তিনি দেশের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা। তাঁর নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্যতা আছে।” এই পরিস্থিতিতে, আরজেডি (রাষ্ট্রীয় জনতাদল) প্রধান লালু প্রসাদ যাদবও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। তিনি কংগ্রেসকে সরাসরি খোঁচা দিয়ে তাদের আপত্তিগুলিকে অমূলক ও ভিত্তিহীন বলে উল্লেখ করেছেন। শিব সেনা (ইউবিটি) নেতা সঞ্জয় রাউতও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বকে সমর্থন জানিয়ে বলেছেন, “আমরা চাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ইন্ডিয়া জোটের মূল অংশীদার হিসেবে দেখতে। আমরা খুব শিগগিরই কলকাতায় এনিয়ে কথা বলতে যাচ্ছি।” সিপিআই সাধারণ সম্পাদক ডি রাজাও কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের কাছে প্রশ্ন তোলেন, “কংগ্রেস কি ইন্ডিয়া জোটের নেতৃত্ব নিয়ে যে উদ্বেগ উত্থাপন হয়েছে তার সমাধান করবে?”