হরিয়ানা এবং মহারাষ্ট্রে মুখ থুবড়ে পড়ার পরে কংগ্রেসকে কোণঠাসা করতে সক্রিয় অ-কংগ্রেসি বিরোধী দলগুলি। বিশেষত আগামী বছর বিহারের বিধানসভা ভোটের টিকিট বণ্টনে বেশি আসনের রাশ নিজের কাছে রাখতে চাওয়া আরজেডি এ ভাবেই শরিক কংগ্রেসকে চাপে রাখতে চাইছে, পর্যবেক্ষণ রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের। আজ তৃণমূলের লোকসভার মুখ্য সচেতক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় লোকসভা মুলতুবি হওয়ার পরে অধিবেশন কক্ষের বাইরে কংগ্রেস ও বিজেপিকে একই বন্ধনীতে রেখে নিশানা করেন। তাঁর দাবি, “কংগ্রেস এবং বিজেপির মেজাজ-মর্জি মাফিক সংসদ চলবে কি চলবে না, তা স্থির হয়। কিন্তু সংসদীয় গণতন্ত্রের খাতিরে এ কথা মনে রাখতে হবে, সমস্ত দলের সাংসদেরাই লোকসভা নির্বাচনে জিতে এখানে আসেন।”
রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়ের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব সংক্রান্ত ‘ইন্ডিয়া’-র সাংবাদিক বৈঠকেও এই সূক্ষ্ম বিভাজনরেখা চোখে পড়েছে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে সেখানে ছিলেন না তৃণমূলের লোকসভা বা রাজ্যসভার নেতারা। কংগ্রেস সভাপতি তথা রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গে যে মঞ্চে মধ্যমণি, সেখানে তৃণমূল পাঠিয়েছে রাজ্যসভার সাংসদ নাদিমুল হক ও সাগরিকা ঘোষকে। ছিলেন না আম আদমি পার্টির কোনও সাংসদও। এসপি-র তরফে রাজ্যসভার দলনেতা রামগোপাল যাদব যাননি, পাঠানো হয়েছে জাভেদ আলি খানকে। তবে কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশ মঞ্চ থেকেই বলেন, “আপ-এর পূর্ণ সমর্থন আমাদের সঙ্গে রয়েছে। আজ তাদের সাংসদেরা আসতে পারেননি, কারণ শেষ মুহূর্তে নির্বাচন কমিশন তাঁদের সময় দিয়েছে। এখন তাঁরা সেখানেই ব্যস্ত।”
গত কাল রাতে শরদ পওয়ারের বাড়িতে অরবিন্দ কেজরীওয়াল এবং কংগ্রেসের অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি-সহ কিছু বিরোধী নেতার বৈঠকে হয়। স্থির হয়, মহারাষ্ট্রে ইভিএম-কারচুপির অভিযোগ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যাবে ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চ। এনসিপি সূত্রে আজ বলা হয়েছে, “বিষয়টি যদিও মহারাষ্ট্রের, কিন্তু আমরা চেষ্টা করছি ‘ইন্ডিয়া’-কে সঙ্গে নিয়ে এগোতে।” কিন্তু এখানেও কৌশলী অবস্থান নিয়েছে তৃণমূল। আজ দলের তরফে বলা হয়, ‘তৃণমূল যদিও ইভিএমে হওয়া ভোটেও জিতেছে, কিন্তু আমরা চাই কাগজের ব্যালটে ভোট হোক।’ তবে তা ‘চাইলেও’ বা এই পদক্ষেপে নীতিগত সমর্থন থাকলেও সদ্য ইভিএমে ছ’টি বিধানসভার উপনির্বাচন জিতে আসা তৃণমূল এখনই ইভিএমের বিরোধিতা করে সটান শীর্ষ কোর্টে যেতে চায় না।
জনাদেশ নিয়ে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে ফেরার শপথ নেওয়া কেজরীওয়াল আজ সকালে ফের স্পষ্ট করেছেন, কংগ্রেসের ‘হাত’ ধরে নয়, দিল্লির আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে একাই লড়বে তাঁর আম আদমি পার্টি!