• যকৃতের অসুখ নিয়ে উন্নত গবেষণার নয়া কেন্দ্র সোনারপুরে
    আনন্দবাজার | ১২ ডিসেম্বর ২০২৪
  • যে কোনও রোগের চিকিৎসা মানুষের উপযোগী করে তুলতে প্রতিনিয়ত উন্নত গবেষণার প্রয়োজন। যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা চিকিৎসক-গবেষকদের জ্ঞান দেশ তথা এলাকার পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবহার করতে হয়। সেই লক্ষ্যেই যকৃতের অসুখের দ্রুত চিহ্নিতকরণ, নিরাময় এবং তার উৎস খুঁজে বার করার জন্য আমেরিকার একটি সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে গবেষণা কেন্দ্র তৈরি করল ‘লিভার ফাউন্ডেশন’।

    বুধবার সোনারপুরে ‘ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব লিভার ডিজ়িজ় অ্যান্ড ডাইজেস্টিভ সায়েন্সেস’ (আইআইএলডিএস) চত্বরে সেই ‘জন সি মার্টিন সেন্টার ফর লিভার রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশনস’ নামের গবেষণা কেন্দ্রের উদ্বোধন করলেন ক্যানসার-শল্য চিকিৎসক আর রবিকান্নান। ছিলেন আমেরিকার ধনকুবের ব্যবসায়ী তথা বায়োটেকনোলজি সংস্থা ‘গিলিয়েড সায়েন্সেস’-এর প্রাক্তন চেয়ারম্যান জন সি মার্টিনের স্ত্রী লিলিয়ান লু, ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেল্‌থ’-এর অধ্যাপক হেনরি মাসুর, জার্মানির ‘হ্যানোভার মেডিক্যাল স্কুল’-এর গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি ও হেপাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান হেইনার ওয়েডেমেয়ার, মেরিল্যান্ডের ‘ইনস্টিটিউট অব হিউম্যান ভাইরোলজি’-র অধিকর্তা শ্যাম কোট্টিলিল-সহ অন্যেরা। আইআইএলডিএস-এর উপদেষ্টা, চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরী বলেন, ‘‘বিনিয়োগ নয়, মানবিক অনুদাননিয়ে মানুষের স্বার্থে এই গবেষণা কেন্দ্র গড়া হয়েছে। যেখানে পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতের লোক-স্বাস্থ্যেরপরিপ্রেক্ষিতে যকৃতের অসুখ নিয়ে গবেষণা চলবে। সঙ্গে শিক্ষাদান ও প্রশিক্ষণও চলবে।’’

    ২০১৬ সালে পথ চলা শুরু করে ‘আইআইএলডিএস’। সেটি তৈরিতে ৩০ লক্ষ আমেরিকান ডলার দিয়ে প্রথম সহযোগিতার হাত বাড়ান জন সি মার্টিন। এ দিন লিলিয়ান বলেন, ‘‘অভিজিতের সঙ্গে পরিচয় হয় ১৩ বছর আগে। তার পরে ওঁরা হাসপাতাল তৈরি করলেন। ক্রমে সেটির ব্যাপ্তি ঘটেছে। যকৃতের উন্নত চিকিৎসা প্রান্তিক স্তরে পৌঁছনোর এই প্রচেষ্টাকে স্বাগত। আশা করি, যকৃতের চিকিৎসার অনেক নতুন দিক এই কেন্দ্র থেকে বেরোবে।’’ গবেষণা কেন্দ্র তৈরি, গবেষণার কাজ ও কর্মীদের বেতন-সহ পরিকাঠামোর উন্নয়নে জন সি মার্টিনের সংস্থা ৭৫ লক্ষ ডলার দিচ্ছে। আগামী ছ’বছরে ধাপে ধাপে তা দেওয়া হবে।

    অভিজিৎ জানান, যকৃতের অসুখ নিয়ে তাঁরা বীরভূমের ৩৫১টি গ্রামে সমীক্ষা চালিয়েছেন। ওই গ্রামগুলির মোট জনসংখ্যার অন্তত ১০শতাংশের পেটের রোগ রয়েছে। অভিজিতের কথায়, ‘‘অন্যান্য কারণের পাশাপাশি স্থূলতা এবং অপরিমিত মদ্যপান, এই দুই কারণে একটি বড় অংশের মানুষ যকৃতের অসুখে আক্রান্ত। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ওই মদ্যপায়ীদের আলাদা চোখে দেখা হয়। তা না করে তাঁদের যকৃতের অসুখের নিরাময়ের পথ বার করতে হবে।’’

    এই কেন্দ্রে একক কোষ সিকোয়েন্সিং এবং কী ভাবে প্রাথমিক স্তরে গলব্লাডার ক্যানসার চিহ্নিত করা যায়, সেটি-সহ যকৃতের বিরল অসুখের নিরাময়ের পথ খোঁজার কাজ চলবে।

  • Link to this news (আনন্দবাজার)