অক্ষয় তৃতীয়ার দিন উদ্বোধন হবে দিঘার জগন্নাথ মন্দির। বুধবার দিঘা থেকেই এই ঘোষণা করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও দিধার জগন্নাথ ধাম নির্মাণ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনা করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর দাবি, পুরীর জগন্নাথ ধামের গরিমা নষ্ট করার চেষ্টা করছেন মমতা। শুভেন্দু সরাসরি অভিযোগ করেছেন, মমতা সরকার পুরীর ধামের মতো স্থাপত্য তৈরি করতে চাইছে, যা তিনি হিন্দু ধর্মের অপমান বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, 'চারধামের একধাম পুরীধাম। পুরীধামকে নকল করার অধিকার কোনও হিন্দু আপনাকে দেয়নি। গীতার মতো পুরীধামেরও বিকল্প হতে পারে না।'
বুধবার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন কলকাতা ইসকনের ভাইস প্রেসিডেন্ট রাধারমণ দাস। তাঁর উপস্থিতির প্রসঙ্গও তোলেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, 'আমার লজ্জা লেগেছে মাননীয় রাধারমণ দাসকে দেখে। ইসকনের প্রতিষ্ঠাতা প্রভুপাদ চৈতন্যদেবের ভাবধারাকে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দিয়েছেন। ইসকনের রাধারমণ দাস এই বিষয়ে কোনও প্রতিবাদ না করে চুপ করে থেকেছেন। চৈতন্যদেবের পুরীধামের ভাবমূর্তি নষ্ট করার বিরুদ্ধে রাধারমণের আপত্তি জানানো উচিত ছিল।'
শুভেন্দুর মন্তব্য নিয়ে রাধারমণ দাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল bangla.aajtak.in। তিনি বলেন,'আমরা ভগবানের সেবক। আমরা দাস। যেখানেই ভগবানের সেবার সুযোগ আছে, আমাদের ডাকা হলে আমরা সবসময় উপস্থিত থাকি। দিঘার জগন্নাথ ধাম পুরীর জগন্নাথ ধাম হয়ে গিয়েছে, এটা কখনই বলা হচ্ছে না। দুটো আলাদা মন্দির। পুরীর মন্দির সবার প্রথমে। পুরীর মন্দিরের স্থান কেউ নিতে পারবে না। জগন্নাথের মন্দির সারা বিশ্বে আছে। তার মানে এটা হয় না যে পুরীর নকল হচ্ছে বা পুরীর জগন্নাথ ধামের অপমান করা হচ্ছে। জগন্নাৎ মানে জগতের নাথ। তাই তাঁর মন্দির সব জায়গাতেই হতে পারে। আমরা সেবক, যেখানেই ডাকা হবে আমরা সেবার জন্য তৈরি আছি।' শুভেন্দু অধিকারী কি রাজনীতি করছেন? জবাবে রাধারমণ দাস বলেন, 'আমি এটার উত্তর দেব না। আমি আধ্যাত্মিক সংগঠন, ভগবানের সেবাতে নিয়োজিত। তাই এনিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।'
একেবারের পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের আদলে দিঘায় ২০ একর জায়গা নিয়ে তৈরি হচ্ছে জগন্নাথ মন্দির। এই বিশাল প্রকল্পের কাজ কতদূর এগিয়েছে, তা দেখতেই ৩ দিনের দিঘা সফরে গিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্মীয়মাণ জগন্নাথ মন্দির পরিদর্শন করে মুখ্যমন্ত্রী জানালেন, ২০২৫ সালের রথযাত্রায় তিনি থাকবেন দিঘায়। যেহেতু ওই জগন্নাথ মন্দিরের এটিই হবে প্রথম রথযাত্রা। মমতার কথায়, 'অক্ষয় তৃতীয়ার দিন উদ্বোধন হবে। এবং এবারেই প্রথম রথযাত্রা হবে। রথাযাত্রায় একটি সোনার ঝাড়ু থাকে আপনারা জানেন, ওইটি আমার তরফ থেকে ৫ লক্ষ টাকা দেব। এবার যে সোজা রথ হবে, প্রথমবার বলে এখানে এবার আমি থাকব। আমরা পুজোর ৪৮ ঘণ্টা আগেই চলে আসব। এটা আগামী কয়েক হাজার বছর ধরে এটি একটি চিরস্থায়ী জগন্নাথ ধাম বাংলায় সমুদ্রতীরে তৈরি করা হল। হাজার হাজার বছর ধরে এটা থাকবে।'