• রাজ্যপালের গড়িমসি, তোপ দাগলেন ব্রাত্য
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ১২ ডিসেম্বর ২০২৪
  • রাজ্য আইনসভার বিলে সম্মতি দেওয়া প্রসঙ্গে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের গড়িমসির বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। বুধবার রাজ্যের ৪৫তম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য বিল পাশ করানো হয় বিধানসভায়। সেই বিল সংক্রান্ত আলোচনার সময়েই ঝাঁঝাঁলো ভাষায় রাজ্যপালের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করলেন ব্রাত্য। তাঁর বক্তব্য, ‘আজ চারটে সই করছেন, কাল করছেন না। এটা শিশুসুলভ। বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠনপাঠন পিছিয়ে যাচ্ছে।’

    রাজ্য বিধানসভায় কোনও বিল পাশ হলে যতক্ষণ পর্যন্ত তা রাজ্যপাল (এবং বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি)-এর স্বাক্ষর না পায়, ততক্ষণ পর্যন্ত তা আইনে পরিণত হতে পারে না। আর এই নিয়েই বার বার সংঘাত বাধে রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্য সরকারের। বিধানসভায় বিল পাশ হলেও রাজ্যপালের সম্মতি না মেলায় তা আইন হতে পারছে না, এই অভিযোগ এর আগেও তুলেছে রাজ্য সরকার। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে ৬ জন, পরে ৪ জন এবং আজ আরও ১ জনকে নিয়োগ করেন রাজ্যপাল, যিনি নিজ আসনবলে রাজ্যের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য-ও। দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে আজ নিযুক্ত হন প্রণব ঘোষ। রাজভবনে তাঁকে ডেকে তাঁর হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হয়। দ্রুত কেন সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন না রাজ্যপাল, দ্রুত কাজ হলে তবেই রাজ্যের জন্য তা মঙ্গল – এমনটাই শোনা যায় শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যে। তিনি সোজাসুজি জানান, ‘মুখ্যমন্ত্রী সৌজন্যের রাজনীতি করেন। কেউ কেউ ফুলের ভাষা বোঝেন না, তরবারির ভাষা বোঝেন। গোলাপ ফুল থেকে সরষে ফুল, আমরা ফুলের রাজনীতিই করব। ফুল ফর দি “ফুল”। তিনি আরও জানান, ‘একসঙ্গে সব ক’টা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগে স্বাক্ষর করা উচিত রাজ্যপালের। অন্তত সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে আমি সেটাই বুঝেছি। সুপ্রিম কোর্ট পুরোটাই মুখ্যমন্ত্রীর উপর ছেড়েছে। তারপরও রাজ্যপালের যদি ভিন্ন মত থাকে তবে তিনি সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারেন।’

    প্রসঙ্গত, বুধবারই রাজ্য বিধানসভায় ‘দ্য ভবানীপুর গ্লোবাল ইউনিভার্সিটি বিল, ২০২৪’ পাশ হয় । বিলে সংশোধন প্রয়োজন, এই নিয়ে দাবি জানান বিজেপির বিধায়ক শংকর ঘোষ। তারপরে ব্রাত্য বসু বক্তব্য রাখার সময়েই ‘পারিবারিক সমস্যা’-র কারণে সভাকক্ষ ত্যাগ করেন তিনি। তৃণমূল বিধায়ক দেবাশীষ কুমার এই বিল সংক্রান্ত আলোচনায় জানান, ‘এই প্রথম কলকাতায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর কেন্দ্র ভবানীপুরে হওয়ায় আরও গর্ব আমাদের।’

    নতুন এই বিশ্ববিদ্যালয় টালিগঞ্জের বি.এল.শাহ রোডে ৪.২২ একর জায়গার উপর গড়ে তোলা হবে, এবং এর সদর কার্যালয় হবে ভবানীপুরের ৭০ নং ওয়ার্ডে। এই বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য, ‘ভাষার দিক থেকে সংখ্যালঘু কলেজের এমন বিশ্ববিদ্যালয়ের নজির অন্য রাজ্যে নেই। গুজরাত-উত্তরপ্রদেশ পারেনি।’

     

     
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)