এই ঘটনার খবর জানাজানি হতেই বৃহস্পতিবার সকালে কচ্ছপ দেখতে ভিড় জমান এলাকার স্থানীয় মানুষজন। কচ্ছপটিকে এদিন উদ্ধার করা হয় ফুলিয়া ভাগীরথীর তীরবর্তী পুমলিয়া গ্রামে। আজ, বৃহস্পতিবার সকালে শান্তিপুর থানার ফুলিয়া পুমলিয়া গ্রামের এক বাসিন্দা সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আমবাগানের মধ্যে একটি বিশালাকার কচ্ছপ দেখতে পান। আর এই খবর জানাজানি হতেই কচ্ছপ দেখতে বাগানে ভিড় জমান স্থানীয় মানুষজন। পরে বন দফতরকে খবর দেওয়া হলে ঘটনাস্থলে পৌঁছন বন দফতরের কর্মীরা। তাঁরা এসে কচ্ছপটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যান। বন দফতর সূত্রের খবর, উদ্ধার হওয়া পূর্ণবয়স্ক এই কচ্ছপটির ওজন প্রায় তিন কেজি!
প্রসঙ্গত, কদিন আগেই হাওড়ার বাগনানে উদ্ধার হয়েছিল বিরল প্রজাতির এক কচ্ছপ। বাগনানের বৈদ্যনাথপুর গ্রামের এক স্কুলছাত্রী পরীক্ষা দিতে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিল। হঠাৎই জানলা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে সে অবাক হয়! সে দেখতে পায় একটি বিশালাকার কচ্ছপ তথা কাছিম পাশের ডোবা থেকে উঠে রাস্তা পার হচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে সে তার মাকে সঙ্গে নিয়ে গিয়ে রাস্তা থেকে ওই কাছিমটিকে তুলে বাড়ি নিয়ে আসে। এরপরই তাদের চেষ্টায় দ্রুত খবর দেওয়া হয় 'হাওড়া জেলা যৌথ পরিবেশমঞ্চ'কে। ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন পরিবেশকর্মী চিত্রক প্রামাণিক, ঝিন্দন প্রধান ও সুপ্রকাশ আদকেরা। তাঁরা গিয়ে এর পরিচয় দেন। গ্রামবাসীদের জানান, এটিকে 'ইন্ডিয়ান পিকক সফ্টশেল টার্টল' বা 'ভারতীয় ময়ূরী কাছিম' বলে। তাঁরা বিলুপ্তপ্রায় এই কচ্ছপ রক্ষা বিষয়ে সচেতনও করেন গ্রামবাসীকে।
এরপর বন বিভাগের সঙ্গে পরামর্শ করে বৈদ্যনাথপুর গ্রামেরই একটি জলাভূমিতে ময়ূরী কাছিমটিকে সাময়িক ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। বন্যপ্রাণ সংরক্ষণকারী চিত্রক প্রামাণিক বলেছিলেন, ময়ূরী কাছিম বা 'পিকক সফটশেল টার্টেল' '২০২২ ভারতীয় বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ পরিমার্জিত আইন' অনুযায়ী সর্বোচ্চ সংরক্ষণের আওতায়, তফসিলি-১-এর অন্তর্ভুক্ত। একে শিকার করলে বা বাড়িতে আটকে রাখলে কয়েক বছরের জেল ও জরিমানা হয়। ওঁরাই ব্যাখ্যা করেন, ক্রমাগত জলাভূমি নষ্ট ও শিকারের কারণে এই কচ্ছপের সংখ্যা কমছে। 'আইইউসিএন রেড লিস্টে' এই 'ইন্ডিয়ান পিকক সফ্টশেল টার্টল' বা 'ভারতীয় ময়ূরী কাছিম'কে 'ভালনারেবল স্পিসিস' হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেছিলেন তাঁরা। এই ঘটনার পরই আজ আবার গ্রামীণ নদিয়া থেকে আর এক কচ্ছপ উদ্ধার।