• পিজি হাসপাতালে ডাক্তারদের তোলা চাঁদায় হাঁটু প্রতিস্থাপন রোগিণীর
    এই সময় | ১২ ডিসেম্বর ২০২৪
  • এই সময়: গল্প–উপন্যাস–সিনেমায় এমন হয়। কখনও অবশ্য বাস্তবেও হয়। তবে বিরল। এবার সেই বিরল নজিরেরই সাক্ষী থাকলো পিজি হাসপাতাল। সরকারি সরবরাহের ইমপ্ল্যান্ট সময়ে না আসায়, চাঁদা তুলেই সেখানকার একদল চিকিৎসক রোগীর আংশিক হাঁটু প্রতিস্থাপন বা পার্শিয়াল নি রিপ্লেসমেন্টের জন্য কৃত্রিম অঙ্গ কিনলেন এবং সফল অস্ত্রোপচারও হলো যথাসময়ে। অনেকটা সেরে উঠে আপাতত ছুটির অপেক্ষায় মুর্শিদাবাদের ওই রোগিণী। অভিভূত তাঁর পরিবার।

    তৃপ্ত, গর্বিত পিজি হাসপাতালের চিকিৎসকরা। উচ্ছ্বসিত স্বাস্থ্যকর্তারাও। এর আগে ‘টোটাল’ হলেও সরকারি পরিষেবায় এমন ‘পার্শিয়াল’ হাঁটু প্রতিস্থাপন এই প্রথম। পিজি–র অ্যানেক্স হাসপাতাল শম্ভূনাথ পণ্ডিতে অর্থোপেডিক বিভাগের ফিমেল ইন্ডোর ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন পঞ্চাশোর্ধ্ব পারভিন বেগম (নাম পরিবর্তিত)।

    বেশ কয়েক বছর ধরেই হাঁটতে গেলে যন্ত্রণায় প্রবল কষ্ট পেতেন তিনি। ডান পায়ের হাঁটুর কার্টিলেজ ক্ষয়ে গিয়ে কিছুটা বেঁকেও গিয়েছিল পা। পিজি–র অস্থি–শল্য বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা তাই ভর্তি করে নিয়েছিলেন পারভিনকে। চিকিৎসকরা ঠিক করেন, আংশিক হাঁটু প্রতিস্থাপন করা হবে। প্রথম বারের জন্য আংশিক প্রতিস্থাপনের ইমপ্লান্টের দরখাস্ত করা হয় কর্তৃপক্ষের কাছে।

    কিন্তু সরকারি সরবরাহের সেই ইমপ্লান্ট আসতে সময় লাগছিল। অস্থি–শল্য বিভাগের চিকিৎসকরা তখন ঠিক করেন, তাঁরা নিজেরাই চাঁদা তুলে ৭০ হাজার টাকা দিয়ে কিনে নেবেন ইমপ্লান্ট।

    বিভাগীয় প্রধান মুকুল ভট্টাচার্যের সঙ্গে তাঁর সহকর্মী চিকিৎসকরা আলোচনা করে ঠিক করেন, দেরি করা যাবে না অস্ত্রোপচারে। নির্দিষ্ট উৎপাদক সংস্থা থেকেই কেনা হয় সেই ইমপ্লান্ট। মুকুলের পাশাপাশি ওই বিভাগের চিকিৎসক দিব্যেন্দু বিশ্বাস, সুপ্রিয় সরকার, অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়, দেবজ্যোতি সরকাররা এগিয়ে আসেন।

    তাঁদের আর্থিক অনুদানে কেনা হয় টাইটেনিয়ামের ইমপ্লান্ট। গত ২ ডিসেম্বর অস্ত্রোপচার করে আংশিক নতুন হাঁটু প্রতিস্থাপিত হয় পারভিনের পায়ে। এসএসকেএম সূত্রে খবর, রোগিণী এখন ভালো আছেন। দ্রুত সুস্থ হচ্ছেন। কয়েক দিনের মধ্যেই তাঁকে ছুটি দেওয়া হবে।
  • Link to this news (এই সময়)