• ‘মায়ের দান’, ঘাটালের বরাদ্দ ঘোষণা মানসের
    আনন্দবাজার | ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪
  • যুগ-যুগান্তরের চর্চায় আপাতত ইতি টানল রাজ্য সরকার! দুই মেদিনীপুর ও হুগলির বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বন্যা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে আগামী ফেব্রুয়ারিতে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের কাজ শুরুর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলেন সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। মোট ১২৩৮ কোটি টাকার প্রকল্পের কথা জানিয়ে বিধানসভায় মন্ত্রী বললেন, “এ মমতাময়ী মায়েরই (মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) দান!”

    অতিরিক্ত বর্ষা বা বাঁধের বাড়তি জল ছাড়া হলে শিলাবতী, ঝুমি ও কংসাবতীর জলে গামলাকৃতির ঘাটাল-সহ সংশ্লিষ্ট এলাকা প্লাবিত হয়। এই সঙ্কট থেকে মুক্তির জন্য বাম আমল থেকেই নানা স্তরে আলাপ-আলোচনা জারি আছে। বিধানসভায় বুধবার সেই পর্বে আপাতত ইতি টেনে সেচমন্ত্রী ঘোষণা করলেন, “প্রাথমিক ভাবে ১২৩৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করে ফেব্রুয়ারিতে এই কাজ শুরু করবে রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যে ৩৪১ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে।” মানস জানিয়েছেন, সংস্কার, মেরামতির জন্য পলাশপাই খালে ৭৩ কোটি, দুর্বাচটি খালে ৮৬ কোটি ১৪ লক্ষ, চন্দ্রেশ্বর, গোমরাই এবং পায়রাসি খাল ৩১ কোটি ৭২ লক্ষ, নিউ কোশী নদী খননে ৮৬ কোটি এবং ক্ষীরপাই-বকসি নদী খননে ৬৩ কোটি টাকা খরচ হচ্ছে।

    এ বারেও লোকসভা ভোটের আগে বন্যা নিয়ন্ত্রণে এই মাস্টার প্ল্যান কার্যকর করার প্রতিশ্রুতি নিয়ে দড়ি টানাটানি হয়েছিল তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে। তৃণমূল সাংসদ দেব ২০১৯ সালে এই প্রকল্প রূপায়ণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু তার পরের পাঁচ বছরে তিনি তা করে উঠতে পারেননি। তৃণমূলের অন্দরে জল্পনা, স্থানীয় মানুষের প্রতিক্রিয়া এবং বিরোধীদের সমালোচনার মুখে তাই গত লোকসভা ভোটে প্রার্থীই হতে চাননি তিনি। তৃণমূল নেত্রীর আশ্বাসে রাজি হন। সেই মতোই আগামী বিধানসভা ভোটের আগে তিনটি জেলার বিস্তীর্ণ এলাকার ভোটারদের প্রতিক্রিয়ার কথা চিন্তা করে এ বার প্রকল্পের পরিকল্পনা বিধানসভায় ঘোষণা করেছে সরকার। এ নিয়ে বিরোধীদের কটাক্ষের মুখে পড়েন সেচমন্ত্রী। জবাবে প্রকল্পটি নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের কৃতিত্ব মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে সমর্পণ করে প্রবীণ মানস স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে দু’হাত জড়ো করে কপালে ঠেকিয়ে বলেন, “আপনারা নিশ্চয়ই ‘বাবা’র কথা বলেন? কিন্তু আমরা তো মায়ের কথাই বলি!”

    প্রকল্প রূপায়ণে গঠিত কমিটিতে বিজেপির প্রতিনিধি না রাখা নিয়েও তরজা চলছে। সেচমন্ত্রীর বক্তব্য, “বিজেপি কেন্দ্রের কাছ থেকে এই প্রকল্প আদায়ে কোনও সাহায্য করেনি। এখন তারা প্রতিনিধিত্ব চাইছে কেন?” বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর পাল্টা, “ওটা কি মানস ভুঁইয়ার পৈতৃক সম্পত্তি নাকি? তৃণমূল সরকারের সবটাই ফর দ্য পার্টি, বাই দ্য পার্টি, অব দ্য পার্টি! চিরকাল কারও সমান যায় না! পরিবর্তনেরও পরিবর্তন হবে। আর সে দিন আপনাদের এই আচরণ তাঁদের কাছে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।”

  • Link to this news (আনন্দবাজার)