• প্রেমিকা সেজে ফোনে ডেকে দুষ্কৃতীকে ধরিয়ে দিল মুর্শিদাবাদের বধূ, কুর্নিশ নবদ্বীপ পুলিসের    
    বর্তমান | ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, নবদ্বীপ: গৃহবধূকে মারধর ও শ্লীলতাহানির অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হল এক যুবককে। এই গ্রেপ্তারির ঘটনায় গৃহবধূর বুদ্ধির তারিফ করেছে পুলিস। বুধবার বিকালে মুর্শিদাবাদ থানার সালারের এক গৃহবধূ নবদ্বীপ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে এদিন রাতেই নবদ্বীপ স্টেশন সংলগ্ন এলাকা থেকে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিস জানিয়েছে, ধৃতের নাম শেখ সারুক আলি। বাড়ি হুগলির হরিপাল থানার আলিপুর নয়ানগরে। বৃহস্পতিবার অভিযুক্তকে নবদ্বীপ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে পাঠানো হয়। 


    পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদের সালার থানা এলাকার ওই গৃহবধূর স্বামীর ট্রান্সপোর্টের ব্যবসা আছে। অভিযুক্ত শেখ সারুক আলি দিন ১৫ আগে ট্রান্সপোর্ট সংস্থার মাধ্যমে অন্য এক ব্যক্তির একটি ধান বোঝাই লরি নেয়। এরপর গন্তব্যস্থলে পৌঁছে দেওয়ার নাম করে বেরিয়ে পড়ে। কিন্তু পরে সারুক বেপাত্তা হয়ে যায়। বারবার ফোন করলেও সে ফোন তুলছিল না। বিভিন্ন জায়গায় সারুকের খোঁজ করেও কিছুতেই পাওয়া যাচ্ছিল না তাকে। এরপর ট্রান্সপোর্ট ব্যবসায়ীর স্ত্রী ওই গৃহবধূ, সারুকের ফোন নম্বর জোগাড় করে ফোন করে। আস্তে আস্তে সারুকের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতায় ওই গৃহবধূ। এমনকী তাকে বিভিন্ন রকম কথা বলে নবদ্বীপ স্টেশন রোডের কাছে আসতে বলে। আর গৃহবধূ, তাঁর স্বামী এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে নবদ্বীপে চলে আসেন। ইতিমধ্যে ওই যুবক মহিলার কথায় প্রভাবিত হয়ে যথারীতি নবদ্বীপে চলেও আসে। পরিকল্পনা অনুযায়ী যুবকের সঙ্গে গৃহবধূর দেখা হয়। অভিযোগ, এরপরই সারুক গৃহবধূকে কুপ্রস্তাব দিয়ে খারাপ উদ্দেশ্যে জোরপূর্বক অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। গৃহবধূ তাতে রাজি না হওয়ায় অভিযুক্ত সারুক তার সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে। এমনকী গৃহবধূকে মারধর এবং শ্লীলতাহানি করা হয় বলে অভিযোগ। তৎক্ষণাৎ নবদ্বীপ থানায় খবর দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিস নবদ্বীপ স্টেশনে এলাকা থেকে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে। জানা গিয়েছে, ওই ধান বর্ধমানের কোন মিলে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। ঘটনার কয়েকদিন পর বর্ধমান থেকে লরিটি উদ্ধার করা হয়েছে। তবে  হারিয়ে যাওয়া ধানের এখনও কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি।


    নবদ্বীপ থানার আইসি জলেশ্বর তেওয়ারি বলেন, প্রেমের নাটকের ফাঁদে পড়ে চোর ধরা পড়ল। এ ব্যাপারে ওই গৃহবধূর কৃতিত্ব অস্বীকার করা যাবে না। ফোনে ওই মহিলা যুবকটির সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হওয়ার অভিনয় করে। ওকে নবদ্বীপের ডেকে পাঠায়। যুবকটি কুপ্রস্তাব দেয়। সেই পরিপ্রেক্ষিতে অভিযোগ আসে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 
  • Link to this news (বর্তমান)