• সরকারি প্রকল্পের কাজে গতি সারপ্রাইজ ভিজিটে খতিয়ে দেখলেন জেলাশাসক
    বর্তমান | ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আরামবাগ: সরকারি প্রকল্পের কেমন রূপায়ণ হয়েছে? এলাকা উন্নয়নে আর কী কী প্রয়োজন? সরেজমিনে তা দেখতে সমগ্র হুগলি জেলা প্রশাসনকে নিয়ে মাঠে নামলেন জেলাশাসক মুক্তা আর্য। সপ্তাহে দু’দিন জেলার সব ব্লকে সারপ্রাইজ ভিজিট করে দেখা হবে প্রকল্পের কাজকর্ম। বৃহস্পতিবার গোঘাট-১ ব্লক দিয়ে ওই কর্মসূচি শুরু করে প্রশাসন। এদিন সকাল থেকে গোঘাটের একাধিক কাজকর্ম খতিয়ে দেখেন বিভিন্ন দপ্তরের জেলা আধিকারিকরা। জেলাশাসকের সঙ্গে ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি রঞ্জন ধাড়া সহ পঞ্চায়েত সমিতি ও পঞ্চায়েতের জন প্রতিনিধিরা। পরিদর্শন শেষে গোঘাটের দমদমায় আদিবাসী কমিউনিটি হলে একটি রিভিউ বৈঠক হয়। সেখানে স্কুলের পরিকাঠামোগত ও পড়ুয়াদের ভাতা সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে শিক্ষাদপ্তরের আধিকারিকদের একাংশকে ভর্ৎসনা করেন জেলাশাসক। এমনকী বৈঠকে শিক্ষাদপ্তরের কর্তাদের ভূমিকা নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন জন প্রতিনিধিদের একাংশও। যদিও জেলাশাসক  দ্রুত সমস্যা সমাধানের নির্দেশ দেন। 


    হুগলি জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ সুবীর মুখোপাধ্যায় বলেন, অনেকেই কন্যাশ্রী-২, স্কলারশিপ পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন। তাছাড়া স্কুলের পরিকাঠামোগত কিছু দাবিও ওঠে। আমরা হতবাক মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাত্রছাত্রীদের পাশে দাঁড়িয়ে নানা সুবিধা দিচ্ছেন। কিন্তু, এক শ্রেণির সরকারি আধিকারিক, তা পৌঁছে দিতে অসহযোগিতা করছেন। এদিনের বৈঠকে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসায় জেলাশাসক তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন। জেলাশাসক বলেন, এদিন গোঘাটে আইসিডিএস সেন্টার সহ নানা সরকারি প্রকল্পের কাজ দেখা হয়েছে। কোথাও কিছু দরকার আছে কি না তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কোথাও কোনও সমস্যা রয়েছে কি না, তা দেখছি। যা যা দাবি রয়েছে সেগুলি খতিয়ে দেখা হবে। সব দপ্তর যেন সমন্বয় করে কাজকর্ম করে, তা নিশ্চিত করতে বলেছি। গোঘাট-১ পঞ্চায়েত সমিতির জন্যস্বাস্থ্য পরিবেশ কর্মাধ্যক্ষ প্রদীপ রায় বলেন, এদিন বৈঠকে আমরা নানা বিষয়ের উপর জেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। গোঘাট প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে জেনারেটর, পাঁচিলের ব্যবস্থার জন্য বলেছি। উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে পরিকাঠামো গড়ার দাবি জানিয়েছি। সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্প আরও ভালো করে চালাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবিও জানিয়েছি। তাছাড়া তারাজুলি, আমোদর খাল সংস্কার ও একটি ব্রিজ তৈরির প্রস্তাব জেলাশাসককে দিয়েছি। এই কাজগুলি হলে এলাকায় সেচ কাজের উন্নতি হবে। তারসঙ্গে নতুন কর্মসংস্থানও সম্ভব। এদিন জেলাশাসক গোঘাটে একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে যান। সেখানে খাদ্য সামগ্রী খতিয়ে দেখেন। একটি স্কুলেও যান। কথা বলেন পড়ুয়াদের সঙ্গেও। তাদের কিছু প্রয়োজন কি না জেলাশাসক তা জানার চেষ্টা করেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের সঙ্গে জেলাশাসকের কথা হয়েছে। সরকারি প্রকল্পের সুবিধা তাঁরা পাচ্ছেন কি না, তাও খোঁজ নেন। 


    দুয়ারে রেশন প্রকল্পের পরিষেবাও দেখেন। একটি আদিবাসী গ্রামেও বাসিন্দাদের অনুষ্ঠান দেখেন। বৈঠকে বিভিন্ন প্রকল্পের কথা হয়। জন প্রতিনিধিরা নানা বিষয় নিয়ে জানান। এক্ষেত্রে গ্রামে গ্রামে জল প্রকল্পের সুবিধা পৌঁছনোর আর্জি জানানো হয়। আবাস নিয়েও যাতে প্রকৃত যোগ্যরা বাড়ির বরাদ্দ পান, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। বৈঠকে ওঠা নানা দাবি প্রসঙ্গে জেলাশাসক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। গোঘাট-১ এর পাশাপাশি জেলাশাসক এদিন গোঘাট-২ ব্লকেও যান। সেখানেও তিনি বৈঠক করেন। 


    সভাধিপতি বলেন, জল প্রকল্পকে গুরুত্ব দিয়ে এদিন বৈঠক হয়। আশা করছি এপ্রিল মাসের মধ্যে প্রকল্পের অগ্রগতি অনেকটাই হয়ে যাবে। তাছাড়া অন্যান্য দপ্তরের কাজকর্ম নিয়েও আলোচনা করেছি।
  • Link to this news (বর্তমান)