চিলাপাতায় কাঠ সংগ্রহে গিয়ে হাতির হামলায় মৃত্যু তিন মহিলার
বর্তমান | ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪
সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার: বৃহস্পতিবার জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের চিলাপাতা রেঞ্জের জঙ্গলে জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ করতে গিয়ে হাতির হামলায় তিন মহিলার মৃত্যু হয়েছে। বনদপ্তর ও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতরা হলেন, সুখরামণি লোহার (৫৫), রেখা বর্মন (৫০) এবং চান্দামণি ওরাওঁ (৬০)। হাতির হামলায় গুরুতর জখম হয়েছেন আরও এক মহিলা। হাত-পা ভেঙে যাওয়া জখম নিমা খাঁড়িয়াকে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হতাহতরা সকলেই কালচিনি ব্লকের দক্ষিণ মেন্দাবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা। মর্মান্তিক ঘটনার পর এলাকায় গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
দক্ষিণ মেন্দাবাড়ি গ্রামের পাশেই চিলাপাতার বানিয়া বিটের জঙ্গল। সংরক্ষিত ওই জঙ্গলের পাঁচ নম্বর কম্পার্টমেন্টের জঙ্গলে এদিন দুপুরে দক্ষিণ মেন্দাবাড়ির ৮-১০ মহিলা জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ করতে যান। কিন্তু বিকেল পর্যন্ত মহিলাদের দলটি না ফেরায় চিন্তিত হয়ে পড়েন বাড়ির লোকজন। ঠিক তখনই জঙ্গল থেকে গ্রামে ফিরে মহিলাদের দলের বাকিরা এসে হাতির হামলার খবর দেন। সেই খবর চাউর হতেই নিমতি ফাঁড়ির পুলিস ও চিলাপাতা রেঞ্জের বনকর্মীরা ঘটনাস্থলে যান। উদ্ধার করা হয় জখম নিমা খাঁড়িয়াকে। কিন্তু জঙ্গলের ভিতর থেকে মৃত তিন মহিলার দেহ বের করতে সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত
হয়ে যায়।
হাতির হামলায় তিন মহিলার দেহ সম্পূর্ণ ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছিল দেহাংশ। পুলিস জঙ্গলের ভিতর থেকে দেহগুলি উদ্ধার করে।
জেলার পুলিস সুপার ওয়াই রঘুবংশী বলেন, বনদপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় রেখে মৃতদেহগুলির ময়নাতদন্ত করা হবে। জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের ডিএফও প্রবীণ কাসোয়ান বলেন, সংরক্ষিত জঙ্গলে জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ করতে গিয়ে হাতির হামলায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। দেহগুলির ময়নাতদন্ত হবে।
সংরক্ষিত জঙ্গলে বন্যপ্রাণীর হামলায় কেউ মারা গেলে সরকারি ক্ষতিপূরণ মেলে না। ফলে হাতির হামলায় মৃতদের পরিবারগুলির সরকারি ক্ষতিপূরণ মিলবে কি না, তা এখনও জানা যায়নি। এদিন খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যান এলাকার বাসিন্দা জেলা পরিষদের সভাধিপতি স্নিগ্ধা শৈব। সভাধিপতি ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে থেকে বনদপ্তর ও পুলিসের সঙ্গে দেহগুলি উদ্ধারের কাজ তদারকি করেন। রাতে সভাধিপতি জেলা হাসপাতালে এসে জখম মহিলার স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নেন। সভাধিপতি বলেন, মর্মান্তিক ঘটনা। বনদপ্তরের আইন অনুসারে হতাহতদের পরিবারগুলি সরকারি ক্ষতিপূরণ পাবে কি না, বুঝতে পারছি না। আমরা পরিবারগুলির পাশে আছি।