কেরলে কাজে যাওয়া হল না, আগের রাতে বাইক দুর্ঘটনায় মৃত্যু যুবকের
বর্তমান | ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪
সংবাদদাতা, শীতলকুচি: বৃহস্পতিবার কেরলে কাজে যাওয়ার কথা। তার আগের রাতে বন্ধুকে নিয়ে মেলা থেকে ফেরার পথে মৃত্যু হল। বুধবার রাতে শীতলকুচি-মাথাভাঙা রাজ্য সড়কের গোঁসাইরহাট বিএড কলেজ সংলগ্ন এলাকায় দু’টি বাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় এক বাইক আরোহীর। ঘটনায় মারাত্মক জখম আরও তিনজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুলিস জানিয়েছে মৃতের নাম হারাধন শীল (৩২)। গোঁসাইরহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের ছোট ধাপেরচাত্রা গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন তিনি।
মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই রাতে শীতলকুচি গ্রাম পঞ্চায়েতের রথেরডাঙায় রাসমেলা থেকে বন্ধু মৃত্যুঞ্জয় শর্মাকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন হারাধন। অপরদিকে, গোঁসাইরহাটের দিক থেকে মধ্য শীতলকুচি গ্রামে বাইকে বাড়ি ফিরছিলেন সাগর বর্মন ও পার্থ বর্মন। বিএড কলেজ সংলগ্ন এলাকায় মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় দু’টি বাইকের। বিকট শব্দ শুনতে পেয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন স্থানীয়রা। জখমদের উদ্ধার করে মাথাভাঙা মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান তাঁরাই। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় শীতলকুচি থানার ওসি অ্যান্থনি হোড়ো সহ অন্যান্য পুলিস কর্মীরা। দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাইক দু’টি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান তাঁরা। বৃহস্পতিবার হারাধন শীলের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য মাথাভাঙা মর্গে পাঠায় পুলিস। মৃত যুবকের পিসতুতো দাদা লালমোহন শীল বলেন, ওর বাবা মারা গিয়েছে। বাড়িতে মা রয়েছে। তিনিও মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। কয়েকবছর থেকে ভিনরাজ্যে কাজ করে ভাই। সেখানে আর্থমুভার চালাত। বাড়ি ফিরে তিনমাস আগে নতুন বাইক কেনে। বৃহস্পতিবার দক্ষিণ ভারতের কেরলে কাজে যাওয়ার কথা ছিল ভাইয়ের। কাজে যাওয়ার আগে এক বন্ধুকে নিয়ে মেলায় ঘুরতে যায়। বাড়ি ফেরার পথে এমনটা ঘটবে, তা মেনে নিতে পারছি না আমরা।
শীতলকুচি-মাথাভাঙা সড়কে একেরপর এক দুর্ঘটনায় উদ্বিগ্ন বাসিন্দারা। স্থানীয়দের দাবি, মাঝেমধ্যেই এই সড়কে দুর্ঘটনা ঘটছে। বুধবার রাতে ঘন কুয়াশা ছিল। হয়তো কুয়াশার জেরেই দৃশ্যমানতা কম হওয়ায় দুর্ঘটনা ঘটেছে বলেই অনুমান বাসিন্দাদের। প্রসঙ্গত, মাথাভাঙা-শীতলকুচি রাজ্য সড়ক বছর খানেক আগে সংস্কার করা হয়েছে। কিন্তু রাস্তাটি সম্প্রসারণ হয়নি। মসৃণ রাস্তা হওয়ায় ব্যস্ত এই সড়কে যানবাহন বেপরোয়া গতিতে ছোটে। রাস্তা চওড়া কম থাকার জন্যই ওভারটেক করতে গিয়ে মাঝেমধ্যে দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে যানবাহন।
যদিও ট্রাফিক পুলিসের দাবি, দুর্ঘটনা রুখতে অটো, টোটো, বাইক চালকদের সর্তক করা হয়। শীতলকুচি থানার ওসি জানান, যুবকের দেহটি ময়নাতদন্তের পর বৃহস্পতিবারই পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।