• ‘অনুন্নত স্মার্টফোনে’ই স্প্যাম কল ঢুকছে বেশি, মূল টার্গেট পুরুষরা
    বর্তমান | ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: অনুন্নত স্মার্টফোনের মালিকরাই বেশি পান স্প্যাম কল। সম্প্রতি বেসরকারি একটি টেলিকম পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থার সমীক্ষায় এই তথ্যই উঠে এসেছে। স্প্যাম কল বলতে মূলত অনাকাঙ্ক্ষিত ফোন কলকে বোঝায়, যা বিজ্ঞাপন বা প্রতারণার জন্য করা হয়। প্রতারণার বিভিন্ন ধরন হয়। তার মধ্যে ফিশিং, ম্যালওয়্যার সফটওয়্যার প্রোগ্রাম যা মূলত হ্যাকিং ও নজরদারির জন্য ব্যবহার করা হয়। এছাড়া, ব্যাঙ্ক সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে কোনও ব্যক্তিকে সর্বস্বান্ত করে দেওয়ার প্রাথমিক সূত্রও হয় এই ধরনের স্প্যাম কল। আশার কথা, দেশের স্প্যাম মানচিত্রে পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা খুবই ভালো।


    সাধারণত মনে করা হয়, দামী এবং উন্নত ফোন ব্যবহারকারীদের কাছে এই কল বেশি আসবে। কারণ, ধরে নেওয়া যেতে পারে এমন মানুষের আর্থিক অবস্থা, সামাজিক সম্মান প্রভৃতি উঁচুর দিকেই থাকে। তাই এঁদের শিকার করতে পারলে সাইবার দুষ্কৃতীদের লাভও বেশি। তবে, বাস্তব অন্য কথা বলছে। এই ধরনের কল বেশি আসে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা দামের ফোনে। সাইবার বিশেষজ্ঞদের মতে, এর পিছনে দুটি কারণ থাকতে পারে। প্রথমত, এই ধরনের ফোন যাঁরা ব্যবহার করেন, তাঁদের উচ্চশিক্ষিত এবং প্রযুক্তিগতভাবে ওয়াকিবহাল হওয়ার সম্ভাবনাও বেশি। কোনও ধরনের প্রতারণার ফাঁদ তাঁরা সহজেই ধরে ফেলতে পারেন। আবার উন্নত স্মার্টফোনের ডিজিটাল সিকিউরিটিও উন্নত হয়। চট করে সেগুলি হ্যাক করা সম্ভব হয় না। সেই কারণেই সম্ভবত স্প্যামারদের বেশি পছন্দ মাঝারি বা কম উন্নত স্মার্টফোন। তারা ধরে নেয়, এর ব্যবহারকারীরা প্রযুক্তির খুঁটিনাটি কম বোঝেন। তাই তাঁদের ফাঁদে ফেলাও সহজ। আর ফোনের সিকিওরিটি কম থাকায় স্প্যামারদের কাজেও সুবিধা হয়।


    সংস্থাটির সমীক্ষায় আরও বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য তথ্য উঠে এসেছে, স্প্যাম কল মহিলাদের তুলনায় বেশি পান পুরুষরা। ৭৯ শতাংশ স্প্যাম কলই যায় পুরুষের কাছে। ৩৬ থেকে ৬০ বছর বয়সসীমার গ্রাহকই বেশি কল পান। ৪৮ শতাংশ কল করা হয় এই বয়সিদের। তার পরেই রয়েছেন ২৬-৩৫ বছর বয়সি গ্রাহকেরা (২৬ শতাংশ)। আর দেশের অধিকাংশ স্প্যাম কলই হয় ল্যান্ডফোন থেকে। তবে দিল্লি, মুম্বই, কর্ণাটক এবং অন্ধ্রপ্রদেশে ছবিটা ভিন্ন। সেখানকার স্প্যাম কলগুলি যায় মোবাইল থেকে।


    এবার আসা যাক দেশের স্প্যাম মানচিত্রের প্রসঙ্গে। প্রতিবেশী রাজ্য বিহার ছাড়াও উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু স্প্যাম কলের ঘাঁটি। কেরল, ওড়িশা, গুজরাত, পাঞ্জাব, হিমাচল প্রদেশ, জম্মু ও কাশ্মীর এবং উত্তর-পূর্বের সাতটি রাজ্যে স্প্যামের সংখ্যা বেশ কম। তবে, সবচেয়ে কম রাজ্যগুলির মধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। এই তালিকায় আরও রয়েছে তেলেঙ্গানা, ছত্তিশগড়, হরিয়ানা, উত্তরাখণ্ড এবং ঝাড়খণ্ড। আমাদের রাজ্যের মধ্যে সুন্দরবন এলাকায় কিন্তু স্প্যাম কলের সংখ্যা খানিকটা বেশি।
  • Link to this news (বর্তমান)