• রাজ্যের নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে ভিন রাজ্যে আলু, রামপুরহাটে গ্রেপ্তার ৫ অভিযুক্ত
    বর্তমান | ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: রাজ্য সরকার নিষেধাজ্ঞা জারি করার পরও একটি চক্র ভিন রাজ্যে আলু ‘পাচার’ করছিল। বৃহস্পতিবার এই খবর ‘বর্তমান’ পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পর নড়েচড়ে বসে রাজ্য পুলিস। এদিন বিকেলে রামপুরহাট মহকুমায় পুলিস অভিযান চালিয়ে মূলচক্রী সহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে। মূলচক্রীর বাড়ি মেদিনীপুরে। আলু পাচার করার জন্য সে রামপুরহাটে ‘ডেরা’ বেঁধেছিল। বীরভূমের পুলিস সুপার রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় বলেন, ধৃতদের মধ্যে বাইরের অভিযুক্ত রয়েছে। রাজ্যের কৃষি বিপণন দপ্তরের মন্ত্রী বেচারাম মান্না বলেন, আমজনতার কথা ভেবেই ভিনরাজ্যে আলু পাঠাতে নিষেধ করা হয়েছে। তারপরও একটি চক্র তা করছিল। পুলিসকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছিল। ওরা চক্রটিকে পকড়াও করেছে। রাজ্য সরকারও কিছু ব্যবসায়ী ও হিমঘর মালিককে চিহ্নিত করেছে। তারা নিজেদের স্বার্থে ভিনরাজ্যে আলু পাঠাচ্ছে। 


    প্রশাসন তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে, ডালখোলা, রামপুরহাট, চিরকুণ্ডা  সীমানা দিয়ে সবচেয়ে বেশি আলু ভিনরাজ্যে যাচ্ছে। কৃষি বিপণন দপ্তর থেকে ওই সব এলাকার তালিকা পুলিস কর্তাদের কাছে পাঠানা হয়। তারপরই বিভিন্ন জেলার পুলিস নড়েচড়ে বসে। পুলিস জানতে পেরেছে, রামপুরহাট থেকে পাকাড়াও চক্রটি আটটি ট্রাকে করে আলু ভিন রাজ্যে পাঠিয়েছে। ট্রাক যাতে ভালোভাবে অন্য রাজ্য পৌঁছে যেতে পারে তারজন্য সে বেশকিছু এজেন্ট ছড়িয়ে রেখেছিল। তারজন্য গাড়ি পিছু ৫০হাজার টাকা খরচ করতে হতো। আধিকারিকরা তদন্তে নেমে জানতে পেরেছেন, ৩ ডিসেম্বর ৯টি, ৪ তারিখ সাতটি এবং ৫ ডিসেম্বর ছয় ট্রাক আলু নিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে ভুবনেশ্বরে গিয়েছে। অন্যান্য বছর এইসময় পর্যাপ্ত পরিমাণ নতুন আলু বাজারে চলে আসে। কিন্তু এবছর বাজারে পর্যাপ্ত নতুন আলু আসতে জানুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ গড়িয়ে যাবে। গত বছরের তুলনায় রাজ্যের হিমঘরগুলিতে অনেক কম পরিমাণ আলু মজুত হয়েছিল। তারপরও প্রচুর আলু ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড সহ বিভিন্ন রাজ্যে ও বাংলাদেশে পাঠানো হয়। হিমঘরে মজুত আলু কমে আসায় বাইরে নিয়ে যাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। সঠিক সময়ে নিষেধাজ্ঞা জারি না হলে এই সময় আলুর দাম আরও অনেকটাই বেড়ে যেত বলে আধিকারিকদের দাবি। 


    ভিনরাজ্যে আলু পাঠানো বন্ধ করতে কৃষি বিপণন মন্ত্রী বেচারাম মান্না নিজে রাজ্যের বিভিন্ন সীমানা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। তারপরও বিভিন্ন কৌশলে একশ্রেণির পাচারকারী ভিনরাজ্যে আলু পাচার করছে। কখনও জঙ্গলের পথ ধরে আবার কখনও উত্তর দিনাজপুরের পাশ দিয়ে যাওয়া বিহারের জাতীয় সড়ক ধরে ট্রাক বিভিন্ন রাজ্যে পৌঁছে যাচ্ছিল। বীরভূমেরও বিভিন্ন পথ দিয়ে ঝাড়খণ্ডে পৌঁছনো যায়। সেই গোপন রাস্তা ধরেও ঝাড়খণ্ডে আলু ভর্তি ট্রাক ঝাড়খণ্ডে পৌঁছে যাচ্ছিল। অবশেষে নির্দিষ্ট একটি ‘ইনপুট’ পেয়ে পুলিস অভিযান চালিয়ে পাচারকারী ‘গ্যাং’ জালে তুলেছে। -ফাইল চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)