• কলকাতা সর্বনিম্ন ১৩.৮০: ঠান্ডায় ফুরফুরে শহরের মেজাজ
    বর্তমান | ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: সকালের রোদ মিঠে। গায়ে পড়লে আরাম। পাতলা একটা সোয়েটার গায়ে থাকলেও মন্দ হয় না। রাতে কিন্তু উল্টো ছবি। টুপি-মাফলারে ঢেকে তবে শান্তি। ডিসেম্বরের মাঝে কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দমদমে ১৩। 


    মনোরম ঠান্ডা কতদিন থাকবে? শহর স্পষ্ট জানে না। তাই সময় নষ্ট করার কোনও মানেই নেই। ফলে সপ্তাহের মাঝেই দেখা গেল, শহর জমজমাট। শহরতলি থেকে আসছেন অনেকে। কলকাতার তরুণ-তরুণীরাও ঠান্ডা চেটেপুটে উপভোগ করতে চললেন ময়দান, রবীন্দ্র সদন, পার্ক স্ট্রিট, এসপ্ল্যানেড। আলমারিতে তুলে রাখা বাহারি শীতবস্ত্রগুলি গায়ে তোলার সুযোগ হাতছাড়া করা উচিত নয়। তা পরে একটু হাঁটা। হাতে ফুল নিয়ে দুটো ছবি তোলা। একটু কফি, একটু গরম মোমো। ডিসেম্বর আসতে না আসতেই ফুল ‘এনজয়’ মুড শহরবাসীর।


    ময়দান মেট্রো থেকে নামতেই একদল ফুল বিক্রেতা ছেঁকে ধরল যুগলকে। ফুল নিতেই হবে। হাতে তাঁদের সূর্যমুখী, লাল গোলাপ। নাবালক বিক্রেতারা বলছে, ‘আমরা দেখে বুঝতে পেরে যাই, কে ঘুরতে এসেছেন, আর কে অফিসে যাচ্ছেন?’ তা বুঝে গিয়েই ফুল হাতে এগিয়ে আসছে তারা। বারুইপুর থেকে এসেছিলেন তরুণ-তরুণী। ট্রেনে নিউ গড়িয়া মেট্রো স্টেশন, তারপর সেখান থেকে ময়দান। নাম তাঁরা বলতে চান না। তরুণ বলেন, ‘কলেজের কাজ আছে বলে বেরিয়েছি। একটু ঘুরব। ছবি তুলব।’ গড়ের মাঠে বিকেল পাঁচটার পর আর খালি মাথায় থাকা যাচ্ছে না। মাথায় হিম পড়ছে। ঠান্ডা হাওয়া দিচ্ছে। ফলে হুডি উঠছে সবার মাথায়। গড়ের মাঠের মতোই ভিড় ভিক্টোরিয়ার পার্কে। শেক্সপিয়র সরণিতে অফিস শৌভিক মিত্রর। দুপুরে খেতে বেরিয়েছিলেন। বললেন, ‘আবহাওয়া কি ভালো…। কি সুন্দর হাওয়া…। তাই ভাবলাম, মিনিট পনের হেঁটে নি। এমন আবহাওয়া পাওয়া ভাগ্যের বিষয়।’ 


    কলকাতার পারদ ১৩.৮। পাল্লা দিচ্ছে শহরতলিও। শহরের উপকণ্ঠে সল্টলেক। সেখানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৫। ক্যানিং আর ডায়মন্ডহারবারে যথাক্রমে ১৩ ও ১৩.৫ ডিগ্রি। বারাকপুর পিছিয়ে। সেখানে ১৬। হুগলির মগরা আর উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটে যথাক্রমে ১২ ও ১২.৬। ডিসেম্বরের শুরুতেই শীতের এমন ঝোড়ো ব্যাটিং দেখে অনেকেই এখন থেকেই পিকনিকের পরিকল্পনা শুরু করে দিয়েছেন। নিউ মার্কেট চত্বরে দেদার বিক্রি হচ্ছে শীতবস্ত্র। কেনার জন্য ভিড় জমাচ্ছে মানুষ। নৈহাটি থেকে এসপ্ল্যানেড এসেছিলেন স্বর্ণালী গোস্বামী। বললেন, ‘এই মাসের শেষে সিকিমে যাওয়ার কথা। গরম পোশাক কিনতেই হবে। এখানে দেখছি বেশ ভালো স্টক।’ শুধু জামাকাপড় নয়, লেপ-কম্বলের বাহারি স্টক নিয়েও হাজির বিক্রেতারা। ঘুরতে বেরিয়ে একটু উইন্ডো শপিং আর রোদ পড়লে ধোঁয়া ওঠা কাপে চুমুক। আর করজোড়ে ঠান্ডার উদ্দেশে প্রার্থনা, ‘হঠাত্ করে চলে যাস না বাবা। আরও কিছুদিন থাক।’ 
  • Link to this news (বর্তমান)