নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: পশ্চিমি ঝঞ্ঝা সরে গিয়ে উত্তুরে হাওয়ার দাপট। তার জেরেই রাজ্যজুড়ে জাঁকিয়ে শীত পড়ল ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩.৮ ডিগ্রিতে নেমে মরশুমের শীতলতম দিন কাটাল কলকাতা। চলতি সপ্তাহে কনকনে শীত অব্যাহত থাকবে। তারপর তাপমাত্রা সামান্য বাড়লেও শীতের আমেজ বজায় থাকবে বলেই আশা আবহাওয়াবিদদের। কারণ, আগামী রবিবার পর্যন্ত পুরুলিয়া, দুই বর্ধমান, বাঁকুড়া ও বীরভূম জেলায় মরশুমের প্রথম শৈত্যপ্রবাহের সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে। সমতল এলাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নীচে এবং তা স্বাভাবিকের থেকে অন্তত ৪.৫ ডিগ্রি কম হলে আবহাওয়াগতভাবে শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়। পাহাড়ের ক্ষেত্রে শর্ত, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা শূন্য ডিগ্রির নীচে নামতে হবে। বৃহস্পতিবার পুরুলিয়া ও বীরভূমের শ্রীনিকেতনে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নীচে রেকর্ড হয়েছে। দার্জিলিং শহরের একটি জায়গায় বৃহস্পতিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১ ডিগ্রি। অন্য একটি জায়গায় ৩.৮ ডিগ্রি। এই পরিসংখ্যানেই আশার আলো দেখছেন আবহবিদরা।
কয়েকদিন আগে একটি পশ্চিমি ঝঞ্ঝা হানা দিয়েছিল পশ্চিম হিমালয় এলাকায়। এর প্রভাবে কাশ্মীর, হিমাচল প্রদেশ ছাড়াও উত্তর সিকিমে ব্যাপক তুষারপাত হয়েছে। ঝঞ্ঝা সরে যাওয়ায় উত্তর ভারতের দিক থেকে কনকনে ঠান্ডা উত্তুরে হাওয়া ঝাড়খণ্ড-বিহার হয়ে রাজ্যে ঢুকছে। তার জেরে এহেন পারা-পতন। বুধবার সর্বত্রই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে কম ছিল। আলিপুর আবহাওয়া অফিসের অধিকর্তা হবিবুর রহমান বিশ্বাস জানিয়েছেন, আজ, শুক্রবার তাপমাত্রা আরও কিছুটা কমবে। কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রির আশপাশে আসতে পারে। ২০১৬ সালে ১৬ ডিসেম্বর কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমেছিল ১২.৭ ডিগ্রিতে। আজ সেই রেকর্ড ভাঙে কি না, সেটাই দেখার।
কয়েকদিন আগে পুবালি বাতাসের জন্য কলকাতা ও উপকূলবর্তী এলাকায় তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও, পুরুলিয়ার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০-১১ ডিগ্রির আশপাশে ছিল। সেই ধারা অব্যাহত রেখে দক্ষিণবঙ্গে বৃহস্পতিবার শীতলতম জায়গা পুরুলিয়া। ৮.১ ডিগ্রির আমেজ নিতে পর্যটকদের ঢল নেমেছে সেখানে। দাপট দেখাতে পিছিয়ে নেই বাঁকুড়া, বীরভূম, বর্ধমান সহ দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলা। কনকনে ঠান্ডার সঙ্গে ভোরের দিকে ঘন কুয়াশায় একেবারে নাজেহাল দশা। বেলা কিছুটা বাড়লে তবেই বেরচ্ছেন লোকজন।