বাড়ির সামনের ফুটপাত ভাড়া! রামপুরহাটে লক্ষ লক্ষ টাকার কারবার, ক্ষোভ
বর্তমান | ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪
বলরাম দত্তবণিক, রামপুরহাট: খাতায় কলমে রামপুরহাট শহরের সব ফুটপাতের মালিক পুরসভা। সারা বছর ফুটপাতের রক্ষণাবেক্ষণ করতে তারা কোটি কোটি টাকা খরচও করে। আর সেই ফুটপাতই বহিরাগতদের ভাড়ায় দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা রোজগার করছেন কিছু অসাধু মানুষ। তার প্রভাব পড়ছে রাস্তায়, তুমুল যানজটে নাকাল হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। ঘটছে দুর্ঘটনা। রামপুরহাটের জনবহুল হাটতলা, এমএনকে রোড, দেশবন্ধু রোডে এমনই ছবি দেখা যাচ্ছে। বুধবার মহকুমা শাসকের দপ্তরে এই সংক্রান্ত অভিযোগ জমা করেছেন শহরের এক নাগরিক।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে হকারদের সার্বিক অবস্থা খতিয়ে দেখতে শহরজুড়ে সমীক্ষা শুরু করেছে পুরসভা। রাস্তায় ঘুরে ঘুরে হকারদের সম্পর্কে তথ্য জোগাড় করছেন পুরকর্মীরা। এরই মধ্যে এক শ্রেণির অসাধু লোক বাড়ি ও স্থায়ী দোকানের সামনে ফুটপাত ভাড়ায় দিয়ে ঘরে বসে রোজগার করছেন। যাদের ভাড়া দেওয়া হচ্ছে তাঁদের অধিকাংশই ভিনজেলার বাসিন্দা। বাড়ির ও স্থায়ী দোকানের সামনের ফুটপাত সব্জি, ফুলের চারা, মাছ, ব্যাগ, শীতের পোশাক বিক্রেতাদের ভাড়া দেওয়া হচ্ছে। তার বিনিময়ে হকার পিছু মাসে ১০-১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করছেন ওই সমস্ত বাসিন্দা। কেউ কেউ আবার সকাল বিকেলে দুই শিফটে ফুটপাত ভাড়ায় খাটাচ্ছেন।
দেশবন্ধু রোডের বাসিন্দা জামালউদ্দিন শেখ বুধবার মহকুমা শাসকের কাছে করা অভিযোগে জানিয়েছেন, এই রাস্তার উপর ফুটপাতে এক ব্যক্তি তাঁর বাড়ির সামনে বেশ কিছু অস্থায়ী দোকান বসতে দিয়েছেন। বিক্রেতাদের থেকে দিন পিছু ৫০০ থেকে ৩০০ টাকা ভাড়া নিচ্ছেন। ওইসব বিক্রেতাদের পসরা ফুটপাত থেকে রাস্তার উপর চলে এসেছে। এতে রাস্তা আরও সংকীর্ণ হয়ে পড়ছে। যানজট তো হচ্ছেই, নিত্যদিন দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন পথচারীরা। অভিযোগকারীর দাবি, পুরসভা সব জেনেও চোখে পট্টি বেঁধে রেখেছে। কোনও পদক্ষেপ করছে না। বিনা পুঁজিতে মোটা টাকা আয়ের নেশায় বাড়ি ও দোকানের সামনে ফুটপাত ভাড়া দেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে শহরে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাজনৈতিক নেতা থেকে স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় চলছে এই কারবার। টাকার মেশিন হয়ে উঠেছে ফুটপাত। পুরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন ভকত বলেন, ফুটপাতের মালিক পুরসভা। যাঁদের বাড়ির সামনে ফুটপাত, তাঁরা কখনওই মালিক নন। ফুটপাত ভাড়া দেওয়া সম্পূর্ণ বেআইনি। ফুটে যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে অস্থায়ী কাঠামো গড়ে ব্যবসা করছেন তাঁদের বিষয়টি আলাদা। কিন্তু বাড়ির সামনের ফুটপাত দখল করে দোকানদারদের বসিয়ে অর্থ উপার্জন করবেন সেটা মানা হবে না। খুব শীঘ্রই পদক্ষেপ করব। মহকুমা শাসক সৌরভ পান্ডে বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।