ডিজে নিষিদ্ধ হতেই উদয়নগরে ফিরে আসছে পরিযায়ী পাখিরা
বর্তমান | ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪
সংবাদদাতা, রামপুরহাট: বছর দশেক আগের কথা। শীতের সময় নলহাটির উদয়নগর গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ব্রাহ্মণী নদীতে হাজার হাজার পরিযায়ী পাখির দল আসত। শীত শেষে তারা উড়ে যেত। কিন্তু মাঝে পিকনিকের ধুম, ডিজে বক্সের আওয়াজে তারা উদয়নগর থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। বছর তিনেক ধরে প্রশাসন ডিজে বাজানো নিষিদ্ধ করেছে। নদীতে এঁটো শালপাতা, প্লাস্টিকের গ্লাস প্রভৃতি ফেলা রোধেও প্রশাসন কড়া পদক্ষেপ করেছে। তাতেই ছবিটা বদলাচ্ছে। এখন আবার পরিযায়ী পাখির কলরবে মুখরিত হয়ে উঠেছে উদয়নগর গ্রাম।
ব্রাহ্মণী নদীর ধারে ঝাড়খণ্ড ঘেঁষা প্রাচীন গ্রাম উদয়নগর। একসময় শীতের শুরুতে নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে পরিযায়ী পাখির দল আসত। আশপাশের গ্রামের মানুষ এই পাখিদের দেখতে ভিড় জমাতেন। পাখিদের যাতে কেউ বিরক্ত না করে, সেজন্য গ্রামবাসীরা সজাগ ছিলেন। কিন্তু নদীর ধারে শালবন, তার উপর ঝাঁকে ঝাঁকে পাখির কলরব। মনোরম পরিবেশের কারণে এখানে পিকনিকের ধুম পড়ে যায়। এরপর যত দিন গিয়েছে, চোরাশিকার বেড়েছে। নদীচর দখল হওয়ায় পাখিদের প্রজননস্থল ধ্বংস হয়েছে। এছাড়া, পিকনিকে ডিজে বক্সের আওয়াজ, নদীর চরে পলিব্যাগ ও থার্মোকলের থালা পড়ে থাকায় পরিযায়ী পাখিরা ধীরে ধীরে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল।
তিনবছর আগে এখানে বনভোজনে ডিজে ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়। কাগজ, থার্মোকলের থালাবাটি ফেলে এলাকার পরিবেশ যাতে দূষিত না হয়-সেজন্য পুলিস সচেতনতা প্রচারে নামে। পরিবেশ ফিরতেই এই গ্রামে ফের প্রচুর পরিযায়ী পাখি এসেছে।
উদয়নগর গ্রামের বাসিন্দা তথা নলহাটি-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আসাদুজ্জামান বলেন, প্রশাসনের তরফে দূষণ রোধ ও ডিজে বাজানো নিষিদ্ধ করার ফল মিলছে। ফের পরিযায়ী পাখির আনাগোনা শুরু হয়েছে। সবার কাছে আবেদন, আপনারা বেশি কোলাহল না করে, পরিবেশ রক্ষা করে পিকনিক করুন।
গ্রামের প্রবীণ বাসিন্দারা জানান, ইউরোপ, আমেরিকা, সাইবেরিয়া, চীন থেকে এখানে পরিযায়ী পাখিরা আসে। চোরাশিকারিদের হাত থেকে এই পাখিদের বাঁচাতে পুলিসের পদক্ষেপ করা দরকার। নলহাটি থানার পুলিস জানিয়েছে, ওই পিকনিক স্পটে যাতে ডিজে না বাজানো হয়, সেবিষয়ে তারা সচেষ্ট থাকবে। সেখানে সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন করে নজরদারি বাড়ানো হবে।