সংবাদদাতা, লালবাগ: মোতিঝিল রেলগেট বন্ধ করে তৈরি হয়েছে আন্ডারপাস। সেই আন্ডারপাসই স্থানীয়দের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত দু’ মাস ধরে আন্ডারপাসে হাঁটু অবধি জল জমে রয়েছে। ওই জলকাদার মধ্যে দিয়ে চলাচল মুশকিল হয়ে পড়েছে। প্রায়শই সাইকেল ও মোটরসাইকেল আরোহীরা পড়ে গিয়ে জখম হচ্ছেন। তা সত্ত্বেও দ্বিতীয় কোনও পথ না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছে মানুষ। রেলের উদাসীনতায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বলেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।
পূর্ব রেলের শিয়ালদহ-লালগোলা শাখার কাশিমবাজার ও মুর্শিদাবাদ স্টেশনের মাঝে রয়েছে মোতিঝিল রেলগেট। লালবাগ মহকুমার বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ ওই রেলগেট পেরিয়ে আয়েসবাগ হয়ে খুব সহজে বহরমপুরে পৌঁছতে পারতেন। তাছাড়া মুর্শিদাবাদ ঘুরতে আসা পর্যটকদের একটা অংশও ওই রেলগেট দিয়েই লালবাগে আসতেন। ওই রেলগেট বন্ধ করে মাস কয়েক আগে আন্ডারপাস চালু হয়েছে। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, ওপরের আচ্ছাদন ভেদ করে এবং প্রাচীর চুইয়ে বর্ষায় জল ঢুকেছে। সেই জমা জলে প্রতিদিন ট্রাক্টরে মাটি নিয়ে যাওয়ার সময়ে মাটি পড়ে ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিদিন দু’-চারজন পড়ে জখম হচ্ছেন। এদিকে পায়ে হেঁটে পারাপারের কোনও উপায় না থাকায় বাধ্য হয়ে রেললাইন টপকে ঝুঁকির পারাপার চলছে। সন্ধের পরে অন্ধকারে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়। আন্ডারপাসে ঠিক রেল লাইনের নীচে কয়েকটি টিউব লাইট লাগিয়ে দায় সেরেছে রেল। কিন্তু টার্নিংয়ে সেই আলো পৌঁছয় না। ঘুটঘুটে অন্ধকারে ঈশ্বরের ভরসায় আন্ডারপাস পার হতে হয়। নিষাদবাগের বাসিন্দা অধীর বিশ্বাস বলেন, দিন কয়েক আগে মোটরসাইকেল নিয়ে যাওয়ার সময়ে থকথকে কাদায় পিছলে পড়ে যাই। হাত পায়ে চোটের পাশাপাশি গাড়িরও ক্ষতি হয়। ফুলবাগানের বাসিন্দা অশোক পাল বলেন, আন্ডারপাস এলাকাবাসীর কাছে মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। বর্ষার শুরু থেকে দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছি। সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ ও সমস্যা নিয়ে রেল উদাসীন। আয়েশবাগের বাসিন্দা সুব্রত নন্দী বলেন, এখান দিয়ে মেয়েকে সহজে স্কুলে নিয়ে যাওয়া যায়। কিন্তু মাস দুয়েক ধরে এই পথ বিভীষিকা হয়ে গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা আসারুল শেখ, অনুপ বিশ্বাস বলেন, প্রতিদিন দুর্ঘটনায় চার-পাঁচজন জখম হচ্ছেন। পর্যাপ্ত আলো না থাকায় রাতে আরও সমস্যা হয়। সমস্যা সমাধানে রেল দ্রুত এগিয়ে না এলে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।