চাঁচলের বাহারাবাদে উত্তপ্ত পরিস্থিতি, নদী থেকে বালি তোলা ঘিরে সংঘর্ষ
বর্তমান | ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪
সংবাদদাতা, চাঁচল: নদী থেকে বালি তোলাকে ঘিরে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠল মালদহের চাঁচল-২ ব্লকের বাহারাবাদ এলাকা। টেন্ডার ডেকে বালি তোলার ফলে এলাকায় নদীর গতিপথ বদলে যাওয়ায় ধস বাড়ছে, এমন অভিযোগ করে বুধবার সেখানে স্থানীয়রা ভূমি দপ্তরের আধিকারিকদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার মহানন্দা নদী থেকে বালি তোলা শুরু হলে বাধা দিতেই গ্রামবাসী ও শ্রমিকদের সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। পরে পুলিস গিয়ে সামাল দেয়। সরকারকে রাজস্ব দিয়ে নিয়ম মেনে বালি কাটা হচ্ছে বলে দাবি দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার। ম্যানেজার শেখ মোহর আলির দাবি, তৃণমূলের স্থানীয় জেলা পরিষদের সদস্যের ইন্ধনেই গ্রামবাসীরা অহেতুক বালি তোলার কাজে বাধা দিচ্ছেন। অন্যদিকে, বালি তোলার ফলে এলাকায় নদীর গতিপথ বদলে ধসের কবলে পড়ছেন বাসিন্দারা বলে দাবি স্থানীয়দের। তাঁরা রুখে দাঁড়িয়েছেন বলে দাবি করেছেন জেলা পরিষদ সদস্য আব্দুল হাই। স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ আমানুল্লার কথায়, বালি তুলে নেওয়ার ফলে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। কোনমতেই নদী থেকে বালি তুলতে দেওয়া হবে না। গায়ের জোরে এদিন বালি কাটা হচ্ছিল। এলাকাবাসী একজোট হয়ে কাজ বন্ধ করেছি।
স্থানীয় সূত্রে খবর, গত কয়েকদিন ধরে বাহারাবাদ এলাকায় মহানন্দা নদীর চর থেকে বালি উত্তোলনের কাজ চলছে। ইচ্ছেমতো বালি তোলার ফলে বর্ষায় নদী ফুলেফেঁপে এলাকায় জল ঢুকে পড়ে। জল কমলে শ্মশান, গোরস্থান সহ বসতবাড়ি ধসে তলিয়ে যায়। এই অভিযোগ করে এলাকাবাসী ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরে অভিযোগ জানান। বুধবার নদীতে পরিস্থিতি দেখতে গিয়ে এলাকাবাসীর বিক্ষোভের মুখে পড়েন আধিকারিকেরা। ফের বৃহস্পতিবার বালি কাটা শুরু হলে এলাকাবাসী রুখে দাঁড়ান। শ্রমিক ও বাসিন্দাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়।
সূত্রের খবর, নদী থেকে বালি তোলার দায়িত্ব পেয়েছে আরামবাগের একটি সংস্থা। তাদের দাবি, রাজ্যস্তরে অনুমতি নিয়ে রাজস্ব দিয়ে বালি কাটা হচ্ছে। সেখানে বাসিন্দাদের খেপিয়ে অহেতুক কাজ আটকাচ্ছেন স্থানীয় জেলা পরিষদ সদস্য। সংস্থার ম্যানেজার মোহর আলি বলেন,আমরা নিয়ম মেনেই কাজ করছি। কিন্তু নিজের মুনাফার জন্য স্থানীয় জেলা পরিষদ সদস্য বালি তোলা বন্ধ করতে ইন্ধন দিচ্ছেন।
যদিও আব্দুল হাই অভিযোগ উড়িয়ে বলেন, বালি কাটার ফলে এলাকার ভূমি মানচিত্রে তার খারাপ প্রভাব পড়ছে। নদীর গতিপথ বদলে যাওয়ায় এলাকার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাই বাসিন্দারা রুখে দাঁড়িয়েছেন। আমারও বাড়ি নদী তীরে হওয়ায় চিন্তা বাড়ছে।
চাঁচল-২ ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের আধিকারিক মোহাম্মদ আবু করিম মুনিরুজ্জামান বলেন, ওই সংস্থা টেন্ডার পেয়েই বালি তুলছে। এর বেশিকিছু বলব না।