বারুইপুরের ওই মাঠে প্রতি বছরই শীতের শুরুতে ‘মিলন মেলা’ বসে। এ বছরেও প্রায় এক মাস ধরে সেই মেলা চলছে। হরেক দোকানপাটের পাশাপাশি রয়েছে টয় ট্রেন, বৈদ্যুতিক নাগরদোলা-সহ একাধিক ‘জয়রাইড’। এ সবের টানে রোজই ভিড় হচ্ছে মেলায়। বুধবারেও বহু মানুষ এসেছিলেন।
প্রতিবেশী লক্ষ্মী ও আজমিরাও ওই দিন নিজেদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মেলায় আসেন। পরিবারের অন্যেরা রাইডে না উঠলেও তাঁরা দু’জন ‘রাশিয়ান জয়রাইড’ নামে একটি রাইডে চাপেন। এই রাইডে এক-একটি আসনে দু’জন করে বসা যায়। কার্যত ঝুলন্ত আসনগুলি নাগরদোলার মতোই চক্রাকারে ঘোরে। লক্ষ্মী ও আজমিরা একটি আসনে বসেছিলেন। ঘোরা শুরু হওয়ার কিছু ক্ষণের মধ্যেই ছিটকে পড়েন দু’জন। বারুইপুরে কুলপি রোডের ধারেই এই মাঠ। মাঠের ধার ঘেঁষে বসেছে জয়রাইড। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চলন্ত রাইড থেকে ছিটকে মেলার বাইরে রাস্তায় গিয়ে পড়েন লক্ষ্মী ও আজমিরা। দ্রুত তাঁদের বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
এই ঘটনার পরে মেলায় রাইডগুলির নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয়েরা জানান, এই মেলায় রাশিয়ান জয়রাইড-এর থেকেও বড় এবং দ্রুতগামী রাইড রয়েছে। সেই সব রাইডে দুর্ঘটনা ঘটলে আরও বড় বিপদ হতে পারত। মিলন মেলার আহ্বায়ক সঞ্জীব সরকারের অবশ্য দাবি, মেলার রাইডগুলির নিরাপত্তার দিকে কড়া নজর রাখা হয়। তিনি বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে মেলা চলছে। কখনও কোনও বিপদ হয়নি। এ দিনের ঘটনাতেও রাইডের কোনও গাফিলতি নেই। আসনে বসার পরে, সামনে একটি রড টেনে সেটি আটকে দেওয়া হয়। তার পরেই রাইড চালু হয়। মনে হচ্ছে, ওই দিন নিজস্বী তুলতে গিয়ে বা অন্য কোনও কারণে চলন্ত অবস্থায় ওই রডটি খুলে ফেলেছিলেন লক্ষ্মী ও আজমিরা। তার জেরেই দুর্ঘটনা ঘটে।” আপাতত ওই রাইডটি বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সঞ্জীব।