পার্থের জামিনের বিরুদ্ধে এত দিন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অন্যতম প্রধান যুক্তি ছিল, তিনি প্রভাবশালী। জামিনে মুক্তি পেয়ে গেলে তিনি নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তকে প্রভাবিত করতে পারেন। সাক্ষীদের উপরও প্রভাব খাটাতে পারেন। নষ্ট করতে পারেন তথ্যপ্রমাণ। তবে শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট পার্থের জামিন মঞ্জুর করে। ইডির মামলায় জামিন চেয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। চলতি মাসের ৪ ডিসেম্বর সেই মামলার শুনানি শেষ হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। শুক্রবার জামিন মঞ্জুর করে সুপ্রিম কোর্ট জানায়, কোনও সাক্ষীর উপর প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করতে পারবেন না পার্থ। শুধু তা-ই নয়, নিম্ন আদালতের প্রতিটি শুনানিতে হাজির থাকতে হবে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে। কোনও অপ্রয়োজনীয় কারণে শুনানি পিছনোর আবেদন গ্রাহ্য হবে না। যদি দেখা যায় তিনি অহেতুক শুনানি দীর্ঘায়িত করছেন, তবে পার্থের জামিন বাতিল হবে। প্রতি শুনানিতে সশরীরে নিম্ন আদালতে হাজির থাকতে হবে তাঁকে।
পার্থের জামিন মামলার রায়ে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে জামিন দিতে হবে। ইডি এই মামলায় ইতিমধ্যেই চার্জশিট পেশ করেছে। তবে এখনও চার্জ গঠন হয়নি। ডিসেম্বরের মধ্যেই নিম্ন আদালতে চার্জ গঠন করতে হবে। জানুয়ারির দ্বিতীয় এবং তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে মামলার গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করতে হবে বলেও জানায় সুপ্রিম কোর্ট। ১ ফেব্রুয়ারির আগে যদি চার্জ গঠন এবং সাক্ষীদের বয়ান গ্রহণ হয়ে যায়, তবে তার আগেও জামিন পেতে পারেন পার্থ। জামিন পেলেও কোনও সরকারি পদে থাকতে পারবেন না পার্থ, জানিয়েছে শীর্ষ আদালত। তিনি বেহালা পশ্চিমের বিধায়ক। ট্রায়াল কোর্টে বিচার চলাকালীন একমাত্র ওই পদেই তিনি থাকতে পারবেন।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে পার্থের ঘনিষ্ঠ অর্পিতার বাড়ি থেকে ৫০ কোটি টাকার বেশি নগদ উদ্ধার হয়েছিল। অর্পিতার পাশাপাশি পার্থকেও গ্রেফতার করা হয়। সেই থেকে জেলে রয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। কেন্দ্রীয় সংস্থার দাবি, নিয়োগ মামলায় দুর্নীতির অন্যতম মূলচক্রী পার্থ। সম্প্রতি অর্পিতা জামিন পেয়ে বাড়ি ফিরেছেন। ইডির মামলায় পার্থের জামিন মঞ্জুর হল।