সাজাপ্রাপ্ত আসামির নাম বাপ্পাদিত্য পান। তাঁর বাড়ি হুগলির গোঘাট থানার বেলুন গ্রামে। বাপ্পাদিত্যের শাস্তি প্রসঙ্গে সরকারি আইনজীবী উদয় কোনার জানান, ২০১৭ সালের ৪ অক্টোবর সকালে মাধবডিহি থানার নন্দনপুর ঢালে নয়ানজুলির পাশ থেকে এক ব্যক্তির বস্তাবন্দি পচাগলা দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। মৃতের ডান হাতের কব্জির উপরে উল্কিতে লেখা ছিল ‘তাপসী’। সেখান থেকে পুলিশ জানতে পারে, দেহটি গোঘাট থানা এলাকার পানপাতা গ্রামের বাসিন্দা খোকন মাঝির।
৩৬ বছরের খোকনের স্ত্রীর নাম তাপসী। পেশায় দিনমজুর ছিলেন খোকন। স্ত্রী এবং দুই নাবালিকা সন্তানকে নিয়ে তাঁর সংসার। তাঁকে কেউ কেন খুন করতে যাবেন? তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে খোকন এবং বাপ্পাদিত্যের সুসম্পর্কের কথা। দু’জনের দীর্ঘ দিনের বন্ধুত্ব ছিল। দু’জনেরই পরস্পরের বাড়িতে অবাধ যাতায়াত ছিল। কিন্তু খোকনের স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন বাপ্পাদিত্য। স্ত্রী এবং বন্ধুর ঘনিষ্ঠতার কথা জানতে পেরে প্রতিবাদ করেন খোকন। তার পর থেকে শুরু হয় স্বামী-স্ত্রীর অশান্তি।
২০১৭ সালের দুর্গাপুজোর দশমীর দিন খোকনের বাড়িতে আড্ডা বসে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বাপ্পাদিত্যও। কথায় কথায় তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে বাপ্পাকে খোঁচা দেন খোকন। শুরু হয় দুই বন্ধুর ঝগড়া এবং মারামারি। পুলিশি তদন্তে উঠে আসে, খোকনকে গামছা দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করেন বাপ্পা। তার পর প্রমাণ লোপাটের জন্য দেহটি বস্তায় পুরে সাইকেলে চাপিয়ে নন্দনপুর ঢালে নয়নজুলির কাছে গিয়ে ফেলে দেন। সেই। গামছা এবং সাইকেলটি উদ্ধার করেছিল পুলিশ। গ্রেফতার হয়েছিলেন বাপ্পা এবং তাপসী। তবে খুনের ঘটনায় মৃতের স্ত্রীর জড়িত থাকার কোনও তথ্যপ্রমাণ পায়নি আদালত। তাই তাঁকে বেকসুর খালাস ঘোষণা করেন বিচারক। তবে বাপ্পাদিত্যের আইনজীবী জানিয়েছেন, রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আবেদন করবেন তাঁরা।