• এবার আলিপুরদুয়ারে বাংলাদেশিদের জন্য হোটেলের দরজা বন্ধ
    বর্তমান | ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কোচবিহার ও সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার: মালদহ, বারাসত, শিলিগুড়ির পর এবার আলিপুরদুয়ারও। পড়শি রাষ্ট্র বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য আলিপুরদুয়ারে হোটেলের দরজাও বন্ধ হল। শুক্রবার সাংবাদিক সম্মেলন করে সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিল আলিপুরদুয়ার ডিস্ট্রিক্ট হোটেল অ্যান্ড রিসর্ট অ্যাসোসিয়েশন। অন্যদিকে, একইপথে হাঁটতে চলেছে কোচবিহার। ইতিমধ্যেই তারা ওই দেশের নাগরিকদের হোটেলে রুম দেওয়া বন্ধ রেখেছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে শীঘ্রই বৈঠকে বসতে যাচ্ছে কোচবিহার হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন। 


    আলিপুরদুয়ার জেলা শহর, ফালাকাটা , চিলাপাতা, জলদাপাড়া, মেন্দাবাড়ি ও রাজাভাতখাওয়ায় হোমস্টে সহ চারশোটিরও বেশি হোটেল, রিসর্ট ও লজ আছে। বাংলাদেশিদের দরজা বন্ধ করে দেওয়ার জন্য জেলার হোটেল রিসর্ট সংগঠন সম্প্রতি একটি প্রস্তাব নেয়। পক্ষে ও বিপক্ষে সংগঠনের সদস্যদের মধ্যে শুক্রবার রীতিমতো ভোটাভুটিও হয়। তাতে ৯০ শতাংশেরও বেশি সদস্য বাংলাদেশিদের জন্য হোটেলের দরজা বন্ধ করে দেওয়ার পক্ষে মতামত দেন। 


    শামুকতলা রোডের একটি হোটেলে সংগঠনের সদস্যদের মতামত গ্রহণ শেষে সাংবাদিক সম্মেলন করেন সভাপতি কিঙ্কর রায়। তিনি বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন ও আমাদের দেশের জাতীয় পতাকার অবমাননার ঘটনার প্রতিবাদ জানাই। এরই জেরে বাংলাদেশিদের জন্য আলিপুরদুয়ারের হোটেলের দরজা বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত আমরা নিয়েছি। আমাদের কাছে দেশে আগে। যতদিন না পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে বা বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কোনওরকম ইতিবাচক বার্তা আসে ততদিন এই সিদ্ধান্তের পরিবর্তন হচ্ছে না। 


    সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক পবনকুমার পুরোহিত অবশ্য বলেন, তবে বাংলাদেশের কোনও পড়ুয়া আলিপুরদুয়ারে পড়াশানা করছে বা চিকিৎসার জন্য কেউ আলিপুরদুয়ারে এসেছেন তাঁদের ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হবে। তাও প্রশাসন যদি নির্দেশ দেয়। মানবিক কারণেই এই ছাড় দেওয়া হতে পারে। বাংলাদেশের সঙ্গে ভ্রাতৃত্ব ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক আমরা বজায় রাখতে চাই। কিন্তু আমাদের দেশ ও দেশের মানুষের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক আচরণ মানব না। সেজন্যই আমরা এমন পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছি। 


    বাংলাদেশের অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রভাব এপাড়েও পড়তে শুরু করেছে। সীমান্ত এলাকায় সর্তকতা বৃদ্ধি সহ ইতিমধ্যেই বেশকিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কোচবিহার জেলায় বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে রয়েছে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত। ফলে এখানে পুলিস প্রশাসনেরও কড়া নজর রয়েছে। এরই মধ্যে কোচবিহারের হোটেলগুলিও বাংলাদেশি নাগরিকদের ঘর দেওয়ার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে শীঘ্রই বৈঠকে বসতে যাচ্ছে। কোচবিহার হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক প্রদীপ মৈত্র বলেন, প্রাথমিকভাবে ওই দেশের নাগরিকদের হোটেলে রুম দেওয়া হচ্ছে না। কাউকে সন্দেহ হলে প্রশাসনকে জানানো হচ্ছে। আমরা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। পরিস্থিতির উপর নজর রাখছি। শীঘ্রই বৈঠক করে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব। 


    উল্লেখ্য, প্রতিবছর শীতের মরশুমে বাংলাদেশের প্রচুর পর্যটক চ্যাংরাবান্ধা সীমান্ত দিয়ে জলদাপাড়া, বক্সায় ঘুরতে আসেন। 
  • Link to this news (বর্তমান)