জল চুরি: মালদহে ২৭০০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের পিএইচই’র
বর্তমান | ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদহ: মালদহ জেলায় জল জীবন মিশন প্রকল্পের পাইপ কেটে জল চুরির ভুরিভুরি অভিযোগ সামনে এসেছে। এনিয়ে ২৭০০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে মালদহ জেলা জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দপ্তর (পিএইচই)। জেলার ১৫টি ব্লকের মধ্যে জল চুরির অভিযোগ সবচেয়ে বেশি কালিয়াচকের তিনটি ব্লকে। মালদহের জেলাশাসক নীতিন সিঙ্ঘানিয়া বলেন, যাঁরা বেআইনিভাবে জলের সংযোগ নিয়েছেন তাঁদের সংযোগ কাটা হচ্ছে এবং তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। সরকার কঠোরভাবে বিষয়টি দেখছে।
সম্প্রতি জল চুরির বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর নড়েচড়ে বসে জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দপ্তর। জানা গিয়েছে, মালদহের বিভিন্ন থানায় এনিয়ে ৫৬টি চিঠি করা হয়েছে। মালদহ জেলা জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দপ্তরের নির্বাহী আধিকারিক প্রশান্ত সরকার বলেন, এখনও পর্যন্ত ২৭০০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে পাইপ ফুটো করে জল চুরির অভিযোগ রয়েছে।
গ্রামাঞ্চলে জল জীবন মিশন প্রকল্পের ওভারহেড রিজার্ভারের কাছাকাছি থাকা বাড়িগুলির বিরুদ্ধে জল চুরির অভিযোগ সামনে আসছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যাচ্ছে পানীয় জল সরবরাহকারী মূল পাইপ ফুটো করে জল বের করে নেওয়া হচ্ছে। ফলে ওভারহেড রিজার্ভার থেকে দূরে অবস্থিত বাড়িগুলি জল পাচ্ছে না। গ্রামে জল জীবন প্রকল্পের সুবিধা থাকলেও বাসিন্দারা পরিস্রুত জল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অনেক ক্ষেত্রে এমনও লক্ষ্য করা গিয়েছে পাইপ ফুটো করে সেখানে মোটর বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সেই মোটর দিয়ে নিজেদের বাড়ির জন্য জল তুলে ট্যাঙ্কি ভরে রাখা হচ্ছে। কেউ কেউ আবার সেই জল দিয়ে বাগান পরিচর্যা করছেন, সব্জি চাষ করছেন। কেউ আবার জল চুরি করে গাড়ি ধোয়ার ব্যবসা শুরু করেছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, কালিয়াচক -১, ২ এবং -৩ নম্বর ব্লকে সবথেকে বেশি জল চুরির অভিযোগ সামনে এসেছে। এছাড়াও পুরাতন মালদহ, সামসি, চাঁচল এবং রতুয়া -১ ব্লকেও জল চুরির প্রচুর অভিযোগ রয়েছে। শুধুমাত্র ইংলিশবাজার থানাতেই ৫০ জনের বিরুদ্ধে এনিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছে পিএইচই।
এদিকে প্রয়োজনীয় নথি জমা দেওয়ার পরেই পাইপ লাইনের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। সেই জল সংযোগ এখন কেন কেটে দেওয়া হচ্ছে, কেনই বা অভিযোগ দায়ের করা হচ্ছে তা নিয়ে একাংশ বাসিন্দা প্রশ্ন তুলেছেন। এনিয়ে শুক্রবার বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন ইংলিশজবাজার ব্লকের বিনোদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সাতটারি, নয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দারা। এদিন তাঁরা লক্ষ্মীপুরে জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ দেখান। ইংলিশবাজার পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য ঔরঙ্গজেব হোসেন এদিন বলেন, গ্রামবাসীদের দাবি তাঁরা নির্দিষ্ট নথি জমা করে তবেই জলের সংযোগ পেয়েছেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এনিয়ে থানাতেই আমি জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দপ্তরের নির্বাহী বাস্তুকার আলোচনায় বসি। তিনি আমাকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।