• সিবিআইকে ডেকে এনে কী মিলল? প্রশ্ন তৃণমূলের
    বর্তমান | ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: সিবিআই ব্যর্থ। কলকাতা পুলিসের তদন্তই সঠিক ছিল। দাবি তৃণমূলের। কেন্দ্রীয় এজেন্সির গায়ে ‘অপদার্থ’ তকমা সেঁটে দিয়েছে সিপিএম। বিজেপি বলছে, কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে অনেক নিয়ম মেনে চলতে হয়।


    আর জি কর কাণ্ডে শুক্রবার জামিন পেয়েছেন সেখানকার প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডল। তাঁরা জামিন পাওয়ার পর থেকে কেন্দ্রীয় এজেন্সির কার্যক্রম নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। রাজনীতির কারবারিরা প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন, আর জি করের ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে গ্রেপ্তার করেছিল কলকাতা পুলিস। কিন্তু সিবিআইয়ের হাতে তদন্তভার যাওয়ার পর কী পাওয়া গেল? 


    এবার সন্দীপ, অভিজিৎ জামিন পাওয়ার পর কেন্দ্রীয় এজেন্সির বিরুদ্ধে সুর আরও চড়িয়েছে রাজ্যের শাসক দল। মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, আর জি কর কাণ্ডের তদন্তভার রাজ্যের পুলিসের হাতে থাকলে তদন্ত দ্রুততা ও স্বচ্ছতার সঙ্গেই হতো। ‘সিট’ এই ঘটনার তদন্ত করলে দোষীর এতদিনে ফাঁসির সাজা হয়ে যেত। সিটে অনেক দক্ষ অফিসার আছেন। তাঁদের হাতে তদন্তভার থাকলে কাজটা তাড়াতাড়িই হতো।


    এই প্রসঙ্গেই তৃণমূল তুলনা নিয়ে এসেছে জয়নগর ও ফরাক্কার ঘটনার। ওই দুই কাণ্ডে ফাঁসির সাজা ঘোষণা হয়েছে দু’মাসের মধ্যে! রাজ্য পুলিস দ্রুততার সঙ্গে তদন্ত করেছে। সেখানে আর জি করের ঘটনায় ৯০ দিনের মধ্যেও চার্জশিট দিতে পারেনি সিবিআই। রাজ্য পুলিসের প্রশংসা করে কেন্দ্রীয় এজেন্সির সমালোচনা করেছে তৃণমূল। 


    দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘আর জি কর কাণ্ডে নিমন্ত্রণ করে সিবিআইকে ডেকে এনেছিলেন কয়েকজন। কিন্তু সিবিআইকে ডেকে এনে কী পাওয়া গেল? এটা প্রমাণ হল যে, কলকাতা পুলিসের তদন্ত সঠিকই ছিল।’


    তৃণমূল আরও বলছে, রাজ্য বিধানসভায় পাস হয়েছে ধর্ষণ বিরোধী ‘অপরাজিত’ বিল। এটি আইনে পরিণত হলে বিচারের ক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী অধ্যায় রচিত হবে।


    অন্যদিকে এদিন সন্দীপ ও অভিজিৎ জামিন পাওয়ার প্রেক্ষিতে সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে আঙুল তুলেছে সিপিএম’ও। সুজন চক্রবর্তী বলেন, একটি ঘটনা নিয়ে সিবিআই বছরের পর বছর ধরে তদন্ত চালাতে পারে না। একের পর এক অভিযুক্ত জামিন পেয়ে যাচ্ছেন! তাহলে তদন্তকারী সংস্থা কি তদন্ত করতে ভুলে গিয়েছে? তারা ব্যর্থ, অযোগ্য, অপদার্থ হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করছে। পাশাপাশি, আর জি কর কাণ্ডে দু’জনের জামিন—‘ন্যায়বিচারের প্রতি জঘন্য উপহাস’ বলে বিবৃতি দিয়েছেন এসইউসির সাধারণ সম্পাদক প্রভাস ঘোষ।


    তবে সন্দীপ ও অভিজিৎ জামিন পেলেও সিবিআইয়ের উপর আস্থা ছাড়ছে না বিজেপি। তাদের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে নির্দিষ্ট নিময়কানুন মেনে তদন্ত করতে হয়। সেভাবেই সিবিআই তদন্ত করছে। তিনি যুক্তি দিয়েছেন, জামিন কিন্তু সিবিআই দেয়নি, দিয়েছে আদালত। একদিকে সিবিআইয়ের হাতে প্রচুর মামলা, অন্যদিকে প্রয়োজনের তুলনায় তাদের অফিসার কম। তাই সময় লাগছে।


    সিবিআইয়ের কাজকর্ম নিয়ে হতাশ জুনিয়র ডাক্তারদের সংগঠন। ব্যর্থতার দায় কেন্দ্রীয় এজেন্সিরই ঘাড়ে চাপিয়েছে তারা। ‘আন্দোলনের মুখ’ ডাক্তার অনিকেত মাহাত বলেন, কেন্দ্রীয় এজেন্সি যদি ব্যর্থ হয়, তাহলে সাধারণ মানুষ বিচার চাইবে কোথায়!
  • Link to this news (বর্তমান)