ছেলের হাত থেকে দম্পতিকে বাঁচাতে গিয়ে রক্তাক্ত পুলিস
বর্তমান | ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, বরানগর: চরমে উঠেছিল পারিবারিক অশান্তি। উন্মত্ত ছেলের হাত থেকে মা ও বাবাকে বাঁচাতে দৌড়ে গিয়েছিল বারাসত থানার পুলিস। সশস্ত্র যুবককে বোঝাতে গিয়ে উল্টে আক্রান্ত হলেন এক পুলিসকর্মী। বৃহস্পতিবার রাতের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বারাসতে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। গুরুতর জখম পুলিসকর্মীকে প্রথমে বারাসত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাঁকে বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। অভিযুক্ত যুবক দীপায়ন সরকারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধৃতকে এদিন বারাসত জেলা আদালতে তোলা হলে বিচারক পুলিস হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত দীপায়নের বাড়ি বারাসতের ন’পাড়ার আমতলা এলাকায়। বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটে নাগাদ দীপায়নের মা থানায় ফোন করেন। তিনি বলেন, বাড়িতে ছেলে অত্যাচার চালাচ্ছে। মারধর করছে। মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। দয়া করে আপনারা আসুন। ওই সময় থানায় অন ডিউটিতে ছিলেন দুধকুমার হালদার। তিনি কয়েকজন পুলিস কর্মীকে সঙ্গে নিয়ে ওই বাড়িতে যান। সেখানে পৌঁছে তাঁরা দেখেন, ঘরের দরজার সামনে ধারালো কাটারি নিয়ে দীপায়ন দাঁড়িয়ে রয়েছে। দূর থেকে কথা বলে তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করেন পুলিসকর্মীরা। ঘরের ভিতর থেকে ওই যুবকের মা নানা অভিযোগ করছিলেন। ওই সময় দীপায়নকে বুঝিয়ে শান্ত করতে এগিয়ে যান দুধকুমারবাবু। তিনি ওই যুবকের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁকে নরমে গরমে বোঝাচ্ছিলেন। এরপর আচমকা ওই যুবক তাঁর মাথার পিছনে কাটারি দিয়ে আঘাত করে। এরপর তাঁর বুক লক্ষ্য করে কোপ মারে। কিন্তু পকেটে মোবাইল থাকায় বুক সরাসরি কোপ পড়েনি। মুহূর্তে অন্যান্য পুলিসকর্মীরা গিয়ে ওই যুবককে পাকড়াও করেন।
জখম দুধকুমারবাবু আর দু’বছর পর অবসর নেবেন। আইনশৃঙ্খলাজনিত যে কোনও সমস্যা নিয়ন্ত্রণে আনতে তাঁর অভিজ্ঞতার অভাব নেই। কিন্তু পারিবারিক অশান্তির তদন্তে গিয়ে তাঁকে এমনভাবে আক্রান্ত হতে হবে, স্বপ্নেও ভাবেননি কেউ। বারাসত থানার তরফে জানানো হয়েছে, কর্তব্যরত অবস্থায় পুলিসকর্মীকে প্রাণে মারার চেষ্টা, কাজে বাধা দেওয়া সহ নানা অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।