আগামী বছর ফেব্রুয়ারি মাসে কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ করার কথা নির্মলার। প্রথামাফিক তার আগে প্রত্যেক রাজ্যের সঙ্গে বৈঠক করে তাদের দাবিদাওয়া-চাহিদা ইত্যাদি বুঝে নেয় কেন্দ্র। কেন্দ্রের আর্থিক মানদণ্ড অনুযায়ী রাজ্যগুলি কী ধরনের পদক্ষেপ করছে, চর্চায় থাকে তা-ও। তেমনই আলোচনা হবে জয়সলমেরের ওই বৈঠকে। প্রশাসনিক সূত্রের দাবি, ফের একবার কেন্দ্রীয় বকেয়া নিয়ে ওই বৈঠকেই সরব হবে রাজ্য। তুলে ধরা হতে পারে বিভিন্ন প্রকল্পে বন্ধ থাকা কেন্দ্রীয় বরাদ্দের কথাও। প্রসঙ্গত, বেশ কিছু দিন আগে ষোড়শ অর্থ কমিশনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে নবান্ন সভাঘরে বৈঠক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছিলেন রাজ্য সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দফতরগুলির মন্ত্রী এবং প্রশাসনিক কর্তারা। সেই বৈঠকেও কেন্দ্রের তরফে প্রায় এক লক্ষ ৭১ হাজার কোটি টাকা বকেয়া থাকার অভিযোগ করেছিলেন মমতা। আবাস, একশো দিনের কাজ, জাতীয় স্বাস্থ্যমিশন, গ্রামীণ সড়ক প্রকল্পে কেন্দ্র যে বরাদ্দ বন্ধ রেখেছে, সে কথাও অর্থ কমিশনের প্রতিনিধিদের জানিয়েছিলেন তিনি।
যদিও সেই বৈঠকের পরে কমিশনের চেয়ারম্যান অরবিন্দ পানাগড়িয়া জানিয়েছিলেন, রাজ্যের অভিযোগ নথিবদ্ধ হলেও বকেয়া এবং প্রকল্পের বরাদ্দ সরাসরি তাঁদের আওতাধীন নয়। বরং প্রকল্পের বরাদ্দ নির্ভর করে কেন্দ্রীয় বাজেটের উপর। ফলে আগামী বছর কেন্দ্রীয় বাজেটের আগে নির্মলার ওই বৈঠকে বিষয়টি তুলে ধরতে ফের তৎপর হয়েছে নবান্ন।
আর্থিক বিশ্লেষকদের অনেকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, অতিমারির পরে রাজ্যগুলির রাজকোষ ঘাটতি প্রবল ভাবে বেড়ে দিয়েছিল। অনেক রাজ্য সেই রাজকোষ ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে খরচ কাটছাঁট করে। তা ছাড়া পরবর্তী সময়ে জিএসটি আদায় বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। জিএসটি ছাড়া অন্যান্য কর বাবদ আয়ও বেড়েছে কেন্দ্রের। এই সব আয়ের একটা অংশ (৪১%) রাজ্যগুলিকে ফিরিয়ে দেয় কেন্দ্র। ফলে কেন্দ্রের থেকে আগের তুলনায় বেশি টাকা গিয়েছে রাজ্যগুলির হাতে। এ ভাবেও রাজকোষ ঘাটতি কমানো গিয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় কর্তাদের অনেকে এ-ও জানাচ্ছেন, বিভিন্ন বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা আর্থিক ঘাটতিতে চলছে। আবার ভোট রাজনীতিকে সামনে রেখে অনুদান প্রকল্পগুলির উপর বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ-সহ বিভিন্ন রাজ্য। ফলে সে বাবদ খরচও বেড়েছে। বাড়ছে ঋণ করার প্রবণতা। বিশেষজ্ঞদের অনেকের মত, এতে মূলধনী খরচে হাত পড়ার আশঙ্কাও রয়েছে।