• বেহাল কোদোপাল ইকো নেস্টে আসে না পর্যটক, প্রভাব স্থানীয় অর্থনীতিতে
    বর্তমান | ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্ৰাম: ঝাড়গ্রামের অন্যতম পর্যটনস্থল সবুজদ্বীপের চারশো একর জায়গা জুড়ে ‘কোদোপাল ইকো নেস্ট’প্রকল্প গড়ে তোলা হয়েছিল। প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য উপভোগ করতে পর্যটকরা এখানে ছুটে আসতেন। সংরক্ষণ ও নজরদারির অভাবে পর্যটনস্থলটি বেহাল হয়ে পড়েছে। ভ্রমণপিপাসুদের আসাও কমেছে। পর্যটনস্থলটিকে নবরূপে সাজিয়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তার জন্য প্রায় ১ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে।


    সুবর্ণরেখা ও ডুলুং, এই দুই নদীর মিলনস্থলে গড়ে উঠেছে সবুজদ্বীপ।সাঁকরাইল ব্লকের রোহিনী গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত কোদোপাল আসলে ডুলুং ও সুবর্ণরেখার মাঝে জেগে ওঠা একটি চর। ব্লক ও  সাঁকরাইল পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে চরভূমীতে বহুমুখী জৈব কৃষি খামার তৈরি করা হয়েছিল। যে উদ্যোগ সাফল্যও লাভ করে। প্রায়  দু’শো একর জমিতেফল ও ভেষজ উদ্ভিদের বাগান তৈরি করা  হয়েছে। পর্যটনের জন্য জঙ্গলমহল অ্যাকশন প্ল্যান ও পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের বরাদ্দ অর্থে ২০১৮ সালে আটটি বিলাসবহুল ট্যুরিস্ট কটেজ ও ওয়াচ টাওয়ার তৈরি করা হয়।কটেজগুলিসৌর বিদ্যুতেআলোকিত করার ব্যবস্থা করা হয়। পর্যটকদের কাছে অল্প সময়ের মধ্যে এই পর্যটনস্থল জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। কোদোপালে পৌঁছতে গেলে আগে নৌকো করে ডুলুং ও সুবর্ণরেখা পেরিয়ে চরে পৌঁছতে হতো। গ্রীষ্মের সময় ডুলুং নদীর উপর কাঠের সেতু তৈরি করা হতো। বাইক ও চার চাকা গাড়ি নিয়ে সহজে কোদাপলে পৌঁছে যাওয়া যেত। করোনা মহামারী কালে পর্যটকদের আসা কমতেই রক্ষণাবেক্ষণ বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে এলাকাটি ঝোপঝাড় ভর্তি।। পর্যটন শিল্পে যুক্তএলাকার বাসিন্দারা কাজ হারিয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দা মুকেশ হাইত বলেন, একসম বহু পর্যটক এখানে আসত। কোদোপালে জৈব কৃষি খামারেও কাজ মিলত। সেসব বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কটেজগুলো বন্ধ হয়ে পড়ে আছে। রক্ষণাবেক্ষণ নেই, তাই পর্যটনস্থলটির বেহাল দশা হয়েছে। গ্ৰামের অপর বাসিন্দা সনাতন দলুই বলেন, কোদোপাল বড় পর্যটনস্থল হিসেবে হয়ে উঠবে বলে আশা করেছিলাম। পর্যটন শিল্পকে কেন্দ্র করে এখানে নতুন নতুন কাজের সুযোগ তৈরি হবে। এলাকার ছেলেমেয়েদের বাইরে যেতে হবে না। নানা কারণে প্রকল্পের লক্ষ্য বাস্তবায়িত হল না। সাঁকরাইল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ঝনু বেরা বলেন, জেলার মানচিত্রে কোদোপাল অন্যতম পর্যটনস্থল হিসেবে জায়গা করে নিয়েছিল। দূরদূরান্ত থেকে পর্যটকরা আসত। 


    পঞ্চায়েতে সমিতির তরফে পর্যটনস্থলটিকে নতুন করেচালু করতে আবেদন করা হয়েছিল। সংস্কার হলে আবার পর্যটকের ভিড় বাড়বে। ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক সুনীল আগরওয়াল বলেন, কোদোপাল ইকো নেস্ট সংস্কারের জন্য ৯৮ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।সংস্কারের কাজ দ্রুত শুরু হবে।  কোদোপাল পর্যটকদের কাছে ফের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠবে। 
  • Link to this news (বর্তমান)