নাবালিকাকে উদ্ধারে গিয়ে আক্রান্ত পুলিস, গাড়ি ভাঙচুর করে কেড়ে নিল যুবকের পরিবার, নলহাটিতে ধৃত ২
বর্তমান | ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪
সংবাদদাতা, রামপুরহাট: ন’মাস আগে রামপুরহাট থেকে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল এক নাবালিকা। তাকে উদ্ধারে গিয়ে বুধবার মধ্যরাতে নলহাটির পূর্ব কানুপুর গ্রামে আক্রান্ত হল পুলিস। প্রথমে বিক্ষোভ, তারপর পুলিসকে ধরে মারধর ও গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এমনকী, নাবালিকাকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়। ঘটনায় এক মহিলা এএসআই ও এক মহিলা এনভিএফ কর্মী জখম হয়েছেন। পরে আরও পুলিস পৌঁছে অভিযুক্ত যুবকের দুই আত্মীয়কে গ্রেপ্তার করে। তবে অপহৃত নাবালিকার কোনও হদিশ মেলেনি। পুলিস জানিয়েছে, অপহরণকারী যুবক, পুলিসকে মারধর ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় বাকি অভিযুক্তদের খোঁজ শুরু হয়েছে।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছর ২২মার্চ রামপুরহাটের বছর সতেরোর ওই নাবালিকা ব্যাঙ্কে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়। বিকেল গড়িয়ে গেলেও মেয়ে ফিরে না আসায় ওইদিন রামপুরহাট থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন নাবালিকার মা। পরে তিনি জানতে পারেন তাঁর মেয়েকে অপহরণ করছে নলহাটির পূর্ব কানুপুর গ্রামের বছর উনিশের যুবক সুদীপ লেট। তিনি থানায় বিষয়টি জানান। তদন্তে নেমে পুলিস ওই যুবকের বিরুদ্ধে নাবালিকাকে অপহরণের মামলা শুরু করে। পুলিস জানতে পারে, নাবালিকাকে নিয়ে নানা জায়গায় গা-ঢাকা দিয়ে থাকছিল অভিযুক্ত। শুক্রবার ওই নাবালিকা যুবকের বাড়িতে রয়েছে বলে জানতে পারে পুলিস। এরপরই ঘটনার তদন্তকারী অফিসার এএসআই তাপসী টুডু রামপুরহাট ও নলহাটি থানা মিলিয়ে আটজনের ফোর্স নিয়ে ওই যুবকের বাড়িতে হানা দেন। পুলিস দেখে পালিয়ে যায় অভিযুক্ত। নাবালিকাকে উদ্ধার করে বেরনোর সময় যুবকের আত্মীয়দের বিক্ষোভের মুখে পড়ে পুলিস। মেয়েটি এখন সাবালক, সুদীপ তাকে বিয়ে করেছে বলে বিক্ষোভকারীরা দাবি করতে থাকে। তাকে নিয়ে যাওয়া যাবে না বলে জানায়। তদন্তকারী অফিসাররা আপত্তি না শোনায় পুলিসকে ঘিরে ধরে শুরু হয় মারধর। ওই এএসআই ও এনভিএফ কর্মীকে কিল, ঘুষি মারতে মারতে গাড়ি থেকে নামানো হয়। পুলিসের গাড়ির কাচ ভাঙচুর করা হয়। নাবালিকাকে পুলিসের হাত থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়। প্রাণ বাঁচাতে কোনওরকমে গ্রাম ছাড়ে পুলিস। জখমদের লোহাপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা করানো হয়। খবর পেয়ে আরও বেশি সংখ্যক পুলিস গ্রামে পৌঁছয়। ততক্ষণে নাবালিকা, অভিযুক্ত যুবক ও তার পরিবারের সদস্যরা গা-ঢাকা দেয়। পুলিস যুবকের আত্মীয় মধুমালা লেট ও শিখা লেটকে গ্রেপ্তার করে।