এবার ব্লক হাসপাতালেও সস্তায় ওষুধের দোকান, মিলবে প্রচুর ছাড়
বর্তমান | ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪
বিশ্বজিৎ দাস, কলকাতা: ফের স্বাস্থ্যে বড়সড় মাস্টারস্ট্রোক দিতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরের বছরই, ২০১২ সালে দূরদর্শী নেত্রী হাসপাতালে হাসপাতালে ন্যায্যমূল্যের ওষুধের দোকান বা ফেয়ার প্রাইস শপ চালু করার পরিকল্পনা নেন। সে প্রকল্প বাস্তবায়িত হতে না হতেই একেবারে সুপারহিট! তারপর মুখ্যমন্ত্রী এনেছেন সম্পূর্ণ বিনামূল্যের চিকিৎসা বা ফ্রি মেডিসিন, স্বাস্থ্যসাথী সহ একের পর এক নয়া প্রকল্প। পরম নিন্দুকরাও স্বীকার করেন, ২০১১ সালের পর, পরপর দু’বার ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে মমতার ক্ষমতায় আসার অন্যতম কারণ হল স্বাস্থ্যক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নতি। এবার রাজ্যের গ্রামীণ এলাকার মানুষের জন্য বড় সুখবর হল, ’২৫ সালের মধ্যে বাংলার ৩৪৭টি ব্লক এবং গ্রামীণ হাসপাতালও পেতে চলেছে ন্যায্যমূল্যের ওষুধের দোকান। দোকানগুলির সংখ্যা বেড়ে হবে ৪৬০টিরও বেশি। কমপক্ষে ১৪০টি ওষুধ সুলভ মূল্যে ব্লক হাসপাতালগুলিতে দিতেই হবে।
মাসে কমপক্ষে দেড় থেকে দু’হাজার টাকার ওষুধ লাগে না, এমন বাঙালি গৃহস্থ এখন খুঁজে পাওয়াই দুষ্কর। পরিবারপিছু মাসে চার থেকে পাঁচ হাজার টাকার সুগার, প্রেশার, হার্ট, নার্ভ, পেট, কিডনি, নিউরো বা চোখের ওষুধ বা জরুরি ইঞ্জেকশন লাগে লক্ষ লক্ষ মানুষের। কোথায় বেশি ছাড় মিলবে, ঘুরে ঘুরে খুঁজতে থাকেন রোগীর বাড়ির লোকজন। এমনই একটা পরিস্থিতিতে, তাঁদের বিরাট স্বস্তি দিতে পারে নতুন সিদ্ধান্ত। কারণ, রি-টেন্ডার হওয়া পুরানো ন্যায্য মূল্যের দোকানগুলিতে অন্তত ৫০ শতাংশ ছাড়ে ওষুধ পাবেন রোগীরা। সর্বোচ্চ ‘ডিসকাউন্ট’ প্রায় ৮৬ শতাংশ। ব্লক হাসপাতালগুলিতে দোকান হলে এর সমান বা হয়তো বেশিই ছাড় মিলবে। ফলে উপকৃত হবেন বাংলার কোটি কোটি মানুষ। স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রের খবর, বাংলায় বর্তমানে মেডিক্যাল কলেজ, জেলা, মহকুমা, স্টেট জেনারেল এবং হাতেগোনা একটি-দুটি গ্রামীণ হাসপাতাল মিলিয়ে ১১৭টি ন্যায্যমূল্যের দোকান আছে। বিভিন্ন বেসরকারি ওষুধের দোকান সেগুলি চালায়। সেখানে ২০১২-’২২—টানা ১০ বছর ধরে চলেছে আগের চুক্তি। করোনার দাপাদাপি চলায় রাজ্য ২-৩ বছর তা নবীকরণ করতে পারেনি। সম্প্রতি ফের টেন্ডার হয়েছে। চুক্তি হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ১০৫টি দোকানের জন্য নতুন একাধিক সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ১২টি জায়গায় টেন্ডার হওয়া বাকি। প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে, ব্লক হাসপাতালগুলিতে টেন্ডার হলে আরও বেশি ছাড় দিতে পারে সংস্থাগুলি। কিন্তু গুণমানের সঙ্গে যাতে কোনও আপস না হয়, সেদিকেও নজর রাখছে রাজ্য। স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম বলেন, ‘রাজ্যের সব ব্লক হাসপাতালে ন্যায্যমূল্যের ওষুধের দোকান হবে। শীঘ্রই এ নিয়ে টেন্ডার হবে।’