• রক্ষাকবচের অধিকারীই নন ক্ষমতার অপব্যবহারে অভিযুক্ত পুলিসকর্মীরা, মত সুপ্রিম কোর্টের
    বর্তমান | ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নয়াদিল্লি: ভুয়ো মামলা দায়ের, তথ্যপ্রমাণ গরমিলে অভিযুক্ত পুলিস আধিকারিক কোনওভাবেই পেশাগত রক্ষাকবচ পাওয়ার অধিকারী নন। এক মামলার শুনানিতে এমনই মত প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৯৭ ধারায় সরকারি কর্মীদের কিছু রক্ষাকবচ দেওয়া হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, সরকারি দায়িত্ব পালনের সময় কোনও অপরাধ করলে সরাসরি তাঁকে শান্তি দেওয়া যায় না। সেক্ষেত্রে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তর বা মন্ত্রকের অনুমতি প্রয়োজন। শুক্রবার এসংক্রান্ত এক মামলায় বিচারপতি জে বি পারদিওয়ালা ও বিচারপতি মনোজ মিশ্রর বেঞ্চ তার পর্যবেক্ষণে জানিয়েছে, মিথ্যা মামলা রুজু, তথ্যপ্রমাণ বা নথি গরমিলে যুক্ত কোনও পুলিস আধিকারিক এই সুবিধা পাওয়ার যোগ্য নন। কারণ তিনি সরকারি পদ ও ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। আইন কখনই এধরনের কার্যকলাপের অনুমতি দেয় না। 


     প্রায়শই পুলিসের বিরুদ্ধে বয়ান রেকর্ড করতে হুমকি দেওয়া, সাদা কাগজে সই করিয়ে নেওয়া, বেআইনিভাবে আটক, তথ্যপ্রমাণে গরমিল, হেনস্তা করতে তল্লাশির মতো একাধিক অভিযোগ ওঠে। সেগুলির উল্লেখ করে আদালত স্পষ্ট জানিয়েছে, কোনও সরকারি আধিকারিক এই ধরনের কাজে যুক্ত থাকতে পারেন না। এরকম গুরুতর অভিযোগ সত্ত্বেও পেশাগত রক্ষাকবচ পেলে তাঁরা পদ ও ক্ষমতার অপব্যবহার করবেন। 


    জানা গিয়েছে, উত্তরপ্রদেশে খুনে অভিযুক্ত এক ব্যক্তিকে বাঁচাতে ভুয়ো মামলা দায়েরের অভিযোগ উঠেছিল মধ্যপ্রদেশ পুলিসের বিরুদ্ধে। সেই সংক্রান্ত মামলার শুনানিতেই শুক্রবার ওই তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেছে শীর্ষ আদালত। সূত্রের খবর, ২০০৭ সালের ১২ অক্টোবর উত্তরপ্রদেশে সুমন প্রকাশ যাদব নামে এক শিক্ষক খুন হন। অভিযুক্তদের তালিকায় নাম ছিল সুরেন্দ্র সিং গুজ্জর, বীরবান গুজ্জর, অশোক দীক্ষিত, পাপ্পু দীক্ষিত, সঞ্জয় দীক্ষিত সহ আরও তিনজনের। ঘটনাচক্রে সেদিনই মধ্যপ্রদেশ পুলিস খুনের মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত অশোকের নামে মাদক আইনে মামলা দায়ের করে। তাঁকে গ্রেপ্তারও করা হয়। কিন্তু, সেদিনই জামিন পেয়ে যান তিনি। তদন্তে নেমে উত্তরপ্রদেশ পুলিস জানতে পারে, খুনের ঘটনা থেকে অশোককে বাঁচাতে মধ্যপ্রদেশে ওই ভুয়ো মামলা দায়ের হয়েছে। গোটা পরিকল্পনা নেপথ্যে ছিলেন মধ্যপ্রদেশ পুলিসে থাকা অশোকের এক আত্মীয়। ওই ব্যক্তি সহ তিন পুলিস আধিকারিকের বিরুদ্ধে বিচারপ্রক্রিয়া থমকে রয়েছে। ২০১২ সালে অশোক সহ ১২ জনকে খুনের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত করে স্থানীয় আদালত।   
  • Link to this news (বর্তমান)