উচ্চমাধ্যমিকের সিলেবাস সংশোধন করল উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। সংশোধিত সিলেবাসগুলো আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে কার্যকর হবে।
শুক্রবার একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির বেশ কয়েকটি বিষয়ে সংশোধিত সিলেবাস প্রকাশিত করেছে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। ২০২৫-র শিক্ষাবর্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট সিলেবাস কার্যকর হবে বলে জানা গিয়েছে। এদিন এই সংশোধিত সিলেবাসের নির্দেশিকা জারি করেছে সংসদ। সেখানে প্রথম ভাষা এবং দ্বিতীয় ভাষা-সহ বেশ কয়েকটি বিষয়ে বদল করা হয়েছে। যা একাদশ শ্রেণির সেমিস্টার ১ ও সেমিস্টার ২ এবং দ্বাদশ শ্রেণির সেমিস্টার ৩ এবং সেমিস্টার ৪-এ বদল করা হয়েছে।
নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, ইংরেজি বি, ইংরেজি এ, বিকল্প ইংরেজি, বাংলা এ, হিন্দি এ, হিন্দি বি, ইতিহাস, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, অ্যাকাউন্টেন্সি, কস্টিং অ্যান্ড ট্যাক্সেশন, বিজনেস স্টাডিজ, এডুকেশন, সায়েন্স অফ ওয়েল-বিং স্ট্যাটিসটিকস, দর্শন, পরিবেশ বিজ্ঞান, অর্থনীতি, ভূগোল এবং জৈবিক বিজ্ঞানের সিলেবাসে সামান্য রদবদল করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট নির্দেশে জানানো হয়েছে যে, প্রত্যেকটি বিষয় পাঁচটি করে বিকল্প দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে থেকে তিনটে বেছে নিতে হবে স্কুলগুলোকে। পাশাপাশি স্কুল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, পরীক্ষার্থীদের এই বিষয়ে সেমিস্টারগুলোর আগেই জানিয়ে দিতে হবে। সেক্ষেত্রে শিক্ষক-শিক্ষিকারা আগে এই নয়া সিলেবাস ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াবেন। এরপর পড়ুয়ারা কী পড়লেন বা কী বুঝলেন, সেটা এক-একজন পড়ুয়াকে পুরো ক্লাসের সামনে উপস্থাপন করতে হবে। এমনকী, গ্রুপ ডিসকাশনও করতে হবে ছাত্র-ছাত্রীদের। শুধু তা-ই নয়, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পড়ুয়াদের উপস্থিতির হারও রেকর্ড রাখতে হবে। সংসদের তরফ থেকে আরও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, সমস্ত বিষয়গুলোর মধ্যে যে বদল করা হয়েছে, সেগুলো পাঠ্য পুস্তকের চতুর্থ সংস্করণে প্রকাশিত করা হবে। এমনকী, সংশোধিত সিলেবাসগুলো মডেল প্রশ্নপত্রের আকারেও বের করা হবে। সংসদের তরফ থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছে যে, সংশ্লিষ্ট নির্দেশিকায় একাদশ শ্রেণির সিলেবাসে যে বদল আনা হয়েছে, যাঁরা ইতিমধ্যে একাদশ শ্রেণির দ্বিতীয় সেমিস্টারের জন্য পড়াশোনা করছেন, তাঁদের কোনও অসুবিধা হবে না। এছাড়াও সংশ্লিষ্ট নির্দেশিকায় যে বদলের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, সেগুলো আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে লাগু হবে বলে জানিয়েছে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ।
এ প্রসঙ্গে শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী বলেন, ‘সিলেবাস বদলের দাবি জানিয়ে আমরা লিখিতভাবে সংসদ সভাপতির কাছে যে পরামর্শ দিয়েছিলাম, সেগুলির কিছুটা মান্যতা পেয়েছে। যদিও একাদশ শ্রেণির ইংরেজির ক্ষেত্রে কিছু অধ্যায় যুক্ত করে বিদ্যালয়েগুলিকে পছন্দ মতো তিনটি অধ্যায় বেছে নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। ফলে, বিদ্যালয়েগুলি কঠিন এবং বড় অধ্যায় বাদ দেওয়ার সুযোগ পাবে। তবে সারা রাজ্যে একাদশে একই ধরনের সিলেবাস থাকবে না। দ্বাদশ শ্রেণির ‘তারা’ নাটকটি বাতিলের জন্য জোরালো দাবি রেখেছিলাম। সেটি বাতিল করা হয়েছে। বাংলার ক্ষেত্রে টপিক একই রেখে দিয়ে সংক্ষিপ্ত করার কথা বলা হলেও বাস্তবে তা কতটুকু হবে, সেটি বই প্রকাশিত না-হলে, বোঝা মুশকিল। ইতিহাসের সিলেবাসের বোঝা কিছুটা কমানো হয়েছে। সামগ্রিকভাবে সেমিস্টার প্রথায় সিলেবাসের বোঝা আরও কমিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের মনোগ্রাহী করা দরকার ছিল।’