মৃত্যুঞ্জয় দাস: তিন দশক আগে রাজ্য কাঁপিয়ে দিয়েছিল হেতাল পারেখ হত্যাকাণ্ড। গ্রেফতার করা হয়েছিল হেতালের আবাসনের নিরাপত্তরক্ষী ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়কে। তাঁর ফাঁসির দাবিতে রাস্তায় নেমেছিলেন কলকাতার মানুষজন। সেই তালিকায় ছিলেন রাজ্যের তত্কালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্যও। শেষপর্যন্ত ফাঁসি হয়েছিল ধনঞ্জয়ের। এবার তিরিশ বছর আগেকার সেই মামলার ফাইল খুলতে চান ধনঞ্জয়ের এলাকার মানুষজন।
ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যোয় ফাঁসি হয় ২০০৪ সালের ১৪ অগাস্ট। এবার প্রায় ২০ বছর পর হেতাল পারেখ মামলার পুনর্বিবেচনার দাবিতে মঞ্চ গড়ে গণসাক্ষর সংগ্রহে নামলেন ছাতনার মানুষজন। ধনঞ্জয়ের বিচারের দাবিতে খাড়া হওয়া ওইসব মানুষজনের দাবি, গণসাক্ষর করে তারা রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাবেন যাতে মামলার পুনর্বিবেচনা করা হয়।
কলকাতায় হেতাল পারেখ হত্যাকান্ডে দোষী সাব্যস্ত করে ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের ফাঁসির নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। ২০০৪ সালে সেই নির্দেশ কার্যকরও করা হয়। কিন্তু ঘটনার প্রায় ২০ বছর পর ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়কে নির্দোষ দাবি করে সেই ঘটনার মামলা পুনরায় চালুর দাবিতে রীতিমত মঞ্চ গড়ে আন্দোলনে নামলেন ছাতনার মানুষ। ধনঞ্জয়ের প্রকৃত বিচারের দাবিতে এই আন্দোলনে যোগ দিলেন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষও। প্রাথমিকভাবে এলাকায় গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে ওই মঞ্চ রাষ্ট্রপতির কাছে মামলা পুনরায় চালুর আবেদন জানাবে।
হেতাল পারেখ হত্যাকান্ডে ছাতনার কুলুডিহি গ্রামের বাসিন্দা ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় প্রায় ১৪ বছর কারাবাসের পর আদালতের নির্দেশে ২০০৪ সালের ১৪ আগষ্ট তাঁকে ফাঁসি দেওয়া হয়। ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের ফাঁসির পর থেকেই স্থানীয়রা দাবি করতে থাকেন ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় নির্দোষ ছিলেন। তাঁর প্রতি অবিচার করা হয়েছে। তিলোত্তমা কান্ডের পর স্থানীয়দের সেই দাবি এবার আন্দোলনের রূপ নিতে চলেছে। স্থানীয়দের উদ্যোগে ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় মামলা পুনর্বিচার মঞ্চ গড়ে ওই মামলা পুনরায় চালু করার দাবিতে সরব হয়েছেন স্থানীয়রা।
ওই আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষও। ইতিমধ্যেই ওই মামলা রি ওপেন করার দাবিতে গণস্বাক্ষর অভিযান শুরু হয়েছে। গণস্বাক্ষরিত আবেদন পত্র পাঠানো হবে দেশের রাষ্ট্রপতির কাছে। মঞ্চের দাবি এই মামলা পুনরায় চালু হলেও ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়কে আর ফেরানো সম্ভব নয়। কিন্তু মামলায় তাঁকে নির্দোষ প্রমাণ করতে পারলে ছাতনার মাটি যে ধর্ষকের মাটি নয় তা যেমন প্রমাণিত হবে তেমনই ত্রুটিমুক্ত বিচার ব্যবস্থা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে তা হয়ে উঠবে একটি মাইল ফলক। আপাতত সেই লক্ষ্যেই এই আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মঞ্চের আন্দোলনকারীরা।