• বাসের মেয়াদ বাড়াতে স্বাস্থ্যকেই মাপকাঠি করার দাবিতে মামলা
    আনন্দবাজার | ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪
  • বাসের আয়ু নয়, বাস বাতিল করার ক্ষেত্রে বিবেচ্য হোক সেটির স্বাস্থ্য। এমনই দাবি জানিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে বাসমালিকদের ছ’টি সংগঠন। রাজ্য সরকার ছাড়াও কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রক এবং রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের বিরুদ্ধে ওই মামলা সম্প্রতি হাই কোর্টে দায়ের করা হয়েছে। বৃহত্তর কলকাতা এলাকায় ১৫ বছরের পুরনো বাসের পারমিট নবীকরণ না করার সরকারি সিদ্ধান্তের ‘অস্পষ্টতা’ নিয়েও ওই মামলায় প্রশ্ন তোলা হয়েছে বলে বেসরকারি বাসমালিক সংগঠন সূত্রের খবর। তাদের অভিযোগ, কলকাতায় গণ পরিবহণের যাত্রীদের ৪০শতাংশের ভারই বেসরকারি বাস বহন করে। তাই ১৫ বছরের গেরোয় বহু বাস এক লপ্তে বাতিল হয়ে গেলে তার আঁচ সার্বিক পরিবহণ ব্যবস্থার উপরে এসে পড়বে। দুর্ভোগে পড়বেন অসংখ্য মানুষ।

    সরকারি পরিবহণ আইন অনুযায়ী, ১৫ বছরের পুরনো বাস প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং দূষণ সংক্রান্ত পরীক্ষা দিয়ে কলকাতার বাইরে চলতে পারে। বাসমালিকদের প্রশ্ন, স্বাস্থ্য এবং দূষণ সংক্রান্ত পরীক্ষায় উতরে গেলে ১৫ বছরের পুরনো বেসরকারি বাস কলকাতায় তুলনামূলক ভাবে অন্যান্য নতুন বাসের সঙ্গে চলতে পারবে না কেন? যাবতীয় শর্ত পূরণ করলে ১৫ বছরের পুরনো ব্যক্তিগত গাড়িকে যদি চলার অনুমতি দেওয়া যায়, তা হলে একই শর্তে বেসরকারি বাসকে ছুটতে দিতে সমস্যা কোথায়?

    পুরনো বাসের পারমিট নবীকরণ করার ক্ষেত্রে সেটির স্বাস্থ্যের খুঁটিনাটি বিষয় খতিয়ে দেখুক সরকার, এমনই দাবি জানাচ্ছেন তাঁরা। সেই সঙ্গে বাস ও অন্যান্য গাড়ির আয়ু নিয়ে কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রকের সাম্প্রতিক পর্যবেক্ষণ এবং প্রস্তাবিত নতুন আইনের খসড়ার প্রসঙ্গও উল্লেখ করছেন বাসমালিকেরা। ওই খসড়ায় সব রকম গাড়ির বিপুল মূল্য বৃদ্ধি এবং আধুনিক প্রযুক্তির কথা মাথায় রেখে সেগুলির গড় আয়ু বাড়িয়ে ২০ বছর করার কথা বলা হয়েছে। তারই সূত্র ধরে নিজেদের দাবি তুলে ধরতে মরিয়া বেসরকারি বাসমালিকদের সংগঠনগুলি।

    এই প্রসঙ্গে বেসরকারি বাসমালিকদের সংগঠন ‘সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিস’-এর সাধারণ সম্পাদক টিটু সাহা বলেন, ‘‘এখন যে সমস্ত বাস চলছে, সেগুলির ইঞ্জিন উন্নত, প্রযুক্তি আধুনিক। ফলে, বাস থেকে দূষণ ছড়ানোর মাত্রা যে কমেছে, সেই বিষয়টি বিবেচনা করা হোক। ‘অল বেঙ্গল বাস-মিনিবাস সমন্বয় সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক রাহুলচট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘১৫ বছর বয়স হয়ে যাওয়ার কারণে পারমিটের নবীকরণ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করুক সরকার।’’

    রাজ্যের পরিবহণ দফতর অবশ্য বাসমালিকদের দাবিদাওয়া নিয়ে সহানুভূতিশীল বলে আগেই জানিয়েছেন দফতরের মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী। ওই মামলার শুনানির দিন এখনও ধার্য হয়নি। তবে, বাসমালিকেরা বাস বাঁচানোর স্বার্থে দ্রুত মামলার নিষ্পত্তি চাইছেন।

  • Link to this news (আনন্দবাজার)