• ফাঁসির ২০ বছর পর ‘পুনর্বিচার চাই’ স্লোগান ধনঞ্জয়ের বাঁকুড়ার গ্রামে! তৈরি আন্দোলনের মঞ্চ
    আনন্দবাজার | ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪
  • হেতাল পারেখ ধর্ষণ ও খুনে ২০০৪ সালে ফাঁসি হয়েছিল ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের। ২০ বছর পর আরজি কর-কাণ্ডের আবহে সেই ধনঞ্জয়ের মামলায় পুনর্বিচারের দাবিতে সরব হল একটি মঞ্চ। তাদের দাবি, ধনঞ্জয় নির্দোষ ছিলেন। সেই মামলা যত দিন না পুনরায় চালু হচ্ছে, তত দিন তাদের আন্দোলন চলবে। প্রাথমিক ভাবে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে মামলা আবার চালু করার দাবিতে রাষ্ট্রপতিরও দ্বারস্থ হতে চলেছে সেই মঞ্চ।

    ১৯৯০ সালের ৫ মার্চ হেতাল পারেখ হত্যাকাণ্ড নাড়িয়ে দিয়েছিল গোটা রাজ্যকে। কলকাতায় নিজের আবাসনেই নৃশংস ভাবে খুন করা হয়েছিলেন ওই তরুণীকে। তদন্তে একমাত্র অভিযুক্ত হিসাবে আবাসনের নিরাপত্তারক্ষীর দায়িত্বে থাকা ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের নামই উঠে এসেছিল। পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। দীর্ঘ ১৪ বছর কারাবাসের পর আদালতের নির্দেশে ২০০৪ সালের ১৪ অগস্ট তাঁকে ফাঁসি দেওয়া হয়। ঘটনার পর থেকেই ধনঞ্জয়ের গ্রাম কুলুডিহি-সহ ছাতনার মানুষ দাবি করে আসছিলেন, ধনঞ্জয় দোষী নয়। তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। একাধিক বার বিষয়টি নিয়ে সরবও হয়েছেন স্থানীয়েরা।

    সম্প্রতি আরজি কর-কাণ্ডের আবহে ৩৪ বছর আগে ঘটে যাওয়া হেতাল পারেখ হত্যাকাণ্ডও চর্চায় উঠে আসে। মূলত ধনঞ্জয়ের গ্রামের বাসিন্দাদের উদ্যোগেই মঞ্চ গঠিত হয়। নাম দেওয়া হয় ‘ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় মামলা পুনর্বিচার মঞ্চ’। রবিবার ছাতনা বাসুলি মন্দিরে পুজো দিয়ে মঞ্চের পদাধিকারী ও কর্মীরা মামলার পুনর্বিচারের দাবিতে স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযান শুরু করেন। রাজ্য জুড়ে এই স্বাক্ষর সংগ্রহ করে তা রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানোর লক্ষ্য নিয়েছে ওই মঞ্চ।

    মঞ্চের আহ্বায়ক চন্দ্রচূড় গোস্বামী বলেন, ‘‘আমরা মনে করি ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের প্রতি অবিচার হয়েছে। উনি দরিদ্র পরিবারের সন্তান হওয়ায় ওঁকে বলি দেওয়া হয়েছিল। হেতাল পারেখ হত্যা মামলা পুনরায় চালু করার আবেদন জানাচ্ছি। ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন স্তরে আলোচনা হয়েছে। আমরা মঞ্চের তরফে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে মামলা পুনরায় চালু করার দাবিতে রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন জানাব। এই মামলা পুনরায় চালু হলে আমরা নিশ্চিত, দেশের ত্রুটিমুক্ত বিচার ব্যবস্থার ক্ষেত্রে তা মাইলফলক হয়ে থাকবে।’’

    মঞ্চের সহ আহ্বায়ক তথা ছাতনার বাসিন্দা জীবন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আমরা দল মত নির্বিশেষে এই মঞ্চ গড়েছি। আমরা প্রত্যেকে মনে করি, ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় নির্দোষ ছিলেন। আদালত পুনরায় মামলা চালু করলে সত্য সামনে চলে আসবে। একই সঙ্গে সারা দেশের কাছে প্রতিষ্ঠিত হবে ছাতনা ধর্ষকের মাটি নয়। তা প্রকৃত অর্থেই বড়ুচণ্ডীদাসের মাটি। যত দিন পর্যন্ত সেই মামলা পুনরায় চালু না করা হচ্ছে, তত দিন আমাদের এই আন্দোলন চলবে।’’

  • Link to this news (আনন্দবাজার)