• কল্যাণেশ্বরী মন্দিরে এসি প্রতীক্ষালয়ের উদ্বোধন
    বর্তমান | ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কল্যাণেশ্বরী: মা কল্যাণেশ্বরী মন্দিরের সামনে বড় এসি প্রতীক্ষালয়ের উদ্বোধন করলেন আসানসোলের মেয়র বিধান উপাধ্যায়। এই প্রতীক্ষালয় তৈরিতে খরচ হয়েছে ৮ লক্ষ ১২ হাজার টাকা। রবিবার এই প্রতীক্ষালয়ের উদ্বোধনে খুশি ভক্তরা। এদিন বহু ভক্ত মায়ের মন্দিরে পুজো দিতে এসেছিলেন। মন্দির চত্বরে প্রতীক্ষালয়ের দাবি মিটলেও দীর্ঘদিন ধরে পার্কিংজোন না থাকায় যানজট সমস্যায় নাকাল হতে হচ্ছে এলাকার বাসিন্দা ও পুজো দিতে আসা ভক্তরা। সে বিষয়ে আজও সুরাহা দিতে পারেনি পুরসভা বা প্রশাসন। এদিন ঘটা করে যাত্রী প্রতীক্ষালয়ের উদ্বোধন উপলক্ষেও পুজো দিতে এসে গাড়ি রাখার সমস্যায় জেরাবার হন ভক্তরা। কল্যাণেশ্বরী মন্দিরের কাছেই রয়েছে মাইথন জলাধার। সেখানে শাসক দলের স্বাগত তোরণের উদ্বোধন করেন এলাকার বিধায়ক। কিন্তু, অভিযোগ উঠেছে পিকনিক করতে আসা গাড়ি থেকে পঞ্চায়েত সমিতির নির্ধারিত লিজদার টাকা তুললেও পরিষ্কার করা হচ্ছে না পিকনিক স্পট। 


    পশ্চিম বর্ধমান জেলার খ্যাতনামা পর্যটন ক্ষেত্র হিসাবে একটি স্থানের নামই সবার আগে উঠে আসে। বহু প্রাচীন মা কল্যাণেশ্বরী মন্দির ও লাগোয়া মাইথন জলাধার। সারা বছর ধরেই এই দুটি জায়গায় বাংলা ও ঝাড়খণ্ডের হাজার হাজার মানুষ আসেন। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে এখানে তিল ধারনের জায়গা থাকে না। জেলার একমাত্র খ্যাতনামা পর্যটন স্থল হলেও উন্নয়ন হয়নি বললেই চলে। এতদিনে স্থানীয় কাউন্সিলার মুনমুন মুখোপাধ্যায়ের উদ্যোগে সেখানে এসি প্রতীক্ষালয়টি গড়ে তোলে পুরসভা। গরম ও বর্ষায় এতে বহু মানুষ উপকৃত হবেন। প্রতীক্ষালয় তৈরি হওয়ায় এলাকাবাসী সাধুবাদ জানিয়েছেন। 


    কিন্তু কল্যাণেশ্বরীর মূল সমস্যা অন্য। তিনদিকে রাস্তা তাঁর মাঝে মায়ের মন্দির। সেখানে গাড়ি রাখার কোনও জায়গা নেই। রাস্তার পাশেই গাড়ি বাইক দাঁড় করিয়ে রেখে দেওয়া হয়। রাস্তার উপর দিয়ে পর্যটকদের পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের গাড়িও মালপত্র নিয়ে যাতায়াত করে। যার ফলে মন্দিরের সামনে যানজট নিত্যদিনের সঙ্গী। বহু সময়েই ভক্তদের দীর্ঘ লাইন মন্দির চত্বর ছাড়িয়ে রাস্তা পর্যন্ত চলে আসে। সেদিন সমস্যা আরও বাড়ে। ভক্তদের বহু দিনের আর্জি সেখানে একটি পার্কিং জোন গড়া হোক। যদিও পুরসভা বা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তার কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। 


    এদিন রবিবার থাকায় পর্যটকের ঢল নেমেছিল মাইথনে। জনসংযোগ করতে এদিনই স্থানীয় বিধায়ক মাইথনের কাছে দলীয় তোরণের উদ্বোধন করেন। তার কাছেই মাইথন অভিমুখে যাওয়া গাড়ি গুলি থেকে টাকা তোলা হচ্ছে। পঞ্চায়েত সমিতির টেন্ডারে লিজ নিয়ে বাস পিছু ২৫০, উইঙ্গার ধরনের গাড়ি পিছু ২০০, ছোট গাড়ি ১৫০, অটো, টোটো ৫০, বিশেষ দিনে বাইক পিছু ৩০ টাকা তুলছে বেসরকারি সংস্থা। জানা গিয়েছে, তাদেরই দায়িত্ব মাইথন পিকনিক স্পট  পরিচ্ছন্ন রাখা। রবিবার গিয়ে কিন্তু পরিচ্ছন্নতার লেশ মাত্র দেখা যায়নি। 


    সর্বত্র নোংরা পড়ে রয়েছে। কাক, কুকুর গোরুও খাবার খাচ্ছে। তারই কাছে বসে মানুষও খাবার খাচ্ছে। পর্যটকদের অভিযোগ, পিকনিক করা এলাকাটি পরিষ্কার করতে লোককে টাকা দিতে হবে। তাহলে পঞ্চায়েত সমিতি কী পরিষেবা দিচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন পর্যটকরা। 


    আসানসোলের মেয়র তথা বারাবনির বিধায়ক বলেন, বহু মানুষের দাবি মেনে প্রতীক্ষালয় গড়া হয়েছে। ওখানে কোনও জমি পাওয়া যাচ্ছে না বলেই পার্কিং জোন করা যায়নি। তবে মাইথন পিকনিক স্পট যাতে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকে সেদিকে নজর রাখা হবে।-নিজস্ব চিত্র 
  • Link to this news (বর্তমান)