• চলন্ত ট্রেনে মহিলা নিগ্রহ, জিআরপির গাছাড়া মনোভাবে ব্যাপক ক্ষুব্ধ যাত্রীরা
    বর্তমান | ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, বোলপুর: চলন্ত ট্রেনে মহিলা নিগ্রহের ঘটনায় প্রশ্ন উঠল যাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে। যাত্রীদের অভিযোগ, জিআরপি‌র নিয়মিত টহলের অভাবেই দিনে দুপুরে এরকম ঘটনা ঘটছে। পূর্ব রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওড়া ডিভিশনের সাঁইথিয়া, ব্যান্ডেল, বেলুড় ও কালনার মতো গুরুত্বপূর্ণ চারটি জিআরপি থানায় অফিসার ইনচার্জ নেই। তদারকির লোক নেই বলেই এই গা ছাড়া মনোভাব জিআরপি কর্মীদের। এই সুযোগকেই কাজে লাগাচ্ছে দুষ্কৃতীরা। দিন দুয়েক আগে তারাপীঠ থেকে ফেরার পথে একদল হিন্দিভাষী যুবকের হাতে চলন্ত ট্রেনে নিগৃহীত হন এক যুবতী ও তাঁর পরিবার। পূর্বরেলের বিভিন্ন টোল ফ্রি নম্বর সহ বর্ধমান ও নৈহাটি জিআরপিতে অভিযোগ জানিয়েও কোনও কাজ হয়নি বলে জানিয়েছেন নিগৃহীতার পরিবার। তাঁরা অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। এই ঘটনায় জিআরপি এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি বলেই জানা গিয়েছে। গত ১৩ ডিসেম্বর তারাপীঠ থেকে পুজো দিয়ে ফিরছিলেন গড়িয়ার এক মেকআপ আর্টিস্ট ও তাঁর পরিবার। কামরার ভিতরে বসাকে কেন্দ্র করে একদল হিন্দিভাষী যুবকদের সঙ্গে ওই মহিলার পরিবারের বিবাদ বাঁধে। তারপরেই ওই মহিলার কলার ধরে তাঁকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এমনকী তাঁকে চলন্ত ট্রেন থেকেও ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। একজন মহিলার গায়ে হাত তুললেও সহযাত্রীরা কোনও প্রতিবাদ করেননি বলেও অভিযোগ। তিনি বলেন, ট্রেনের মধ্যে থাকা জরুরি টোল ফ্রি ১৩৯ নম্বরে ফোন করি। কিন্তু কোনও সাড়া মেলেনি। এরপর বর্ধমান জিআরপি সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। বারবার জিআরপি সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেখে ওই যুবকের দল আমাকে ধর্ষণেরও হুমকি দেয়। এরপর কোনওক্রমে নৈহাটি জিআরপি সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারি। পুলিস আসতেই অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়, তাদের সঙ্গে থাকা মহিলাদের ধরতে বলি। ‌কিন্তু জিআরপি কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। জিআরপির এই ভূমিকায় আমরা অত্যন্ত হতাশ। পরে অবশ্য সাঁইথিয়ার জিআরপি আধিকারিক খোঁজ নিলেও এখনও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি বলেই জানতে পারছি।


    চলন্ত ট্রেনে নিয়মিত নজরদারি ও টহল হয় না বলে যাত্রীদের অভিযোগ। হাওড়া থেকে প্রচুর পর্যটক ও পুণ্যার্থী তারাপীঠ, বেলুড় প্রভৃতি জায়গায় সারা বছর আসেন। এতে রেলের প্রচুর আয় হয়। কিন্তু যাত্রী ও মহিলাদের সুরক্ষায় রেল কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনাও প্রশ্নের মুখে। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র অবশ্য জিআরপি তথা রাজ্য পুলিসের উপরই দায় চাপিয়েছেন। জিআরপির হাওড়া ডিভিশনের পুলিস সুপারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন তোলেননি। ‌মেসেজ এবং ই-মেলেরও জবাব দেননি। অভিযোগ করা হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সাঁইথিয়ার এক জিআরপি আধিকারিক। 
  • Link to this news (বর্তমান)