• জঞ্জাল সাফাই না হওয়ায় আসানসোলে মারামারি
    বর্তমান | ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: তিনমাস ধরে পুরসভা জঞ্জাল সাফাই করছে না। এই অভিযোগ তুলে বরিবার আসানসোলের কল্যাণপুরে তুমুল বিক্ষোভ দেখালেন স্থানীয়রা। নব অন্যন্যা কো-অপারেটিভ সোসাইটির বাসিন্দাদের একাংশ বিপুল জঞ্জাল নিয়ে জুবলিমোড় থেকে ভগৎ সিং এলাকায় যাওয়ার রাস্তায় ফেলে আগুন ধরিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। যার জেরে রাস্তা অবরুদ্ধ হয়ে যায়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভকারীদের এ‌ই আ঩ন্দোলনের বিরোধিতা করেন স্থানীয় কাউন্সিলার তথা বরো চেয়ারম্যান অনির্বাণ দাস। তারপরই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। কাউন্সিলার ও তাঁর অনুগামীদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের তুমুল বাকযুদ্ধ শুরু হয়। এমনকী, ধস্তাধস্তি ও মারধরের ঘটনা ঘটে। বিশাল পুলিসবাহিনী এসে বিক্ষোভকারীদের এলাকা থেকে সরিয়ে দেন। বরো চেয়ারম্যান দাঁড়িয়ে থেকে রাস্তা থেকে জঞ্জাল সরানোর পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।


    আসানসোল পুরসভার মেয়র বিধান উপাধ্যায় বলেন, অত্যন্ত অনভিপ্রেত ঘটনা। কোনও এলাকার গাছ ঝোপ-জঙ্গল কাটার পর পুরসভারকে তা সরিয়ে ফেলার জন্য আবেদন করতে হয়। নির্দিষ্ট অর্থ জমা করার পর পুরসভা সেই কাজ করে। তা না করে বাসিন্দাদের একাংশ রাস্তায় সেই জঞ্জাল ফেলে দেওয়া অন্যায়। আমরা পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। 


    রাজ্য সরকারের হাউসিং বোর্ডের পক্ষ থেকে আসানসোলের কল্যাণপুর এলকায় নব অন্যন্যা কো-অপারেটিভ হাউসিং সোসাইটি গড়ে আবাসন করা হয়। এখন সেই আবাসনে ১৯৩টি পরিবার থাকে। সোসাইটির সম্পাদক কংগ্রেস নেতা প্রসেনজিৎ পুইতণ্ডি। সোসাইটি ক্ষমতাশীল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে স্থানীয় কাউন্সিলারের সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। কাউন্সিলারকে না জানিয়েই মেয়রের মাধ্যমে সোসাইটির একাধিক কাজ তারা করিয়ে নেয়। এই অবস্থায় এই আবাসন প্রকল্পের সামনেই জমতে থাকা অবর্জনা নিয়ে এলাকায় ক্ষোভ বাড়ছিল। এদিন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। সেখানে কেউ মৃত প্রাণীর দেহ ফেলে দেওয়ায় দুর্গন্ধের জেরে বাসিন্দাদের একাংশ ক্ষুব্ধ হয়ে এলাকার সামনে জমে থাকা সব নোংরা রাস্তা এনে ফেলে দেয়। সেখানে আগুনও লাগিয়ে দেওয়া হয়। এরপরই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এই রাস্তাটি আসানসোলের অন্যতম প্রবেশপথ। প্রতিনিয়ত শয়ে শয়ে গাড়ি যাতায়াত করে। জঙ্গাল ফেলে রাস্তা অবরোধ করে যানজট শুরু হয়ে যায়। পুলিসকর্মীরা উপস্থিত হয়। তারপরই আসেন স্থানীয় কাউন্সিলার তথা এলাকার বরো চেয়ারম্যান। যাঁকে মারধরের ঘটনাতেও জড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। 


    সোসাইটির সম্পাদক প্রসেনজিৎ পুইতণ্ডি বলেন, আমরা স্যানেটারি সুপারভাইজারকে আড়াই হাজার টাকা জমা করেছি। তিনি জানিয়েছিলেন, নোংরা পরিষ্কার করে দেবেন। কিন্তু তিনমাস ধরে তিনি কোনও কাজ করেননি। আমাদেরকেও আগে জানানো হয়নি, এই ধরনের জঙ্গাল ফেলতে পুরসভাকে আলাদা করে টাকা দিতে হয়। দুর্গন্ধে এলাকায় থাকা যাচ্ছে না। তাই বাসিন্দারা রাস্তাতেই জঙ্গালগুলি এনে ফেলে দেয়। এরপরই কাউন্সিলার ও তাঁর গুণ্ডাবাহিনী আমাদের উপর চড়াও হয়ে মারধর করেছে। আমরা মুখ্যমন্ত্রীকে পুরো বিষয়টি লিখিতভাবে জানিয়ে চিঠি দিচ্ছি। বরো চেয়ারম্যান অনির্বাণ দাস বলেন, আমাকে মারতে এলে, আত্মরক্ষা করার অধিকার আমার আছে। দু’ঘণ্টা ধরে রাস্তা অবরোধ করে রেখেছিল। রাস্তা থেকে জঙ্গাল সরাতে যাওয়ার পর ওরাই আমার উপর চড়াও হয়।-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)