সংবাদদাতা, বোলপুর: শান্তিনিকেতনের সিংহসদন ও পুরনো ঘণ্টাতলার ঘণ্টা বদল করল পাঠভবন কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘদিনের পুরনো ওই ঘণ্টাগুলি ফেটে যাওয়ায় ঠিকমতো আওয়াজ হচ্ছিল না। পাশাপাশি, সেগুলো ভেঙে পড়ে পড়ুয়াদের জখম হওয়ার আশঙ্কাও তৈরি হয়েছিল। এতে প্রায় ৮০ হাজার টাকা হয়েছে বলে পাঠভবন সূত্রে জানা গিয়েছে। নতুন ঘণ্টা পেয়ে খুশি খুদে পড়ুয়ারা। পুরনো ঘণ্টাগুলি পাঠভবন সংগ্রহশালায় সংরক্ষিত রাখা হয়েছে। সিংহ সদন ও ঘণ্টাতলা বিশ্বভারতী তথা শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্য। বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির প্রথম যুগে এগুলি তৈরি হয়। ছাত্রছাত্রী মহলে এই দু’টি স্থাপত্য খুবই জনপ্রিয়। বৌদ্ধধর্মের প্রতি রবীন্দ্রনাথের অনুরাগ ছিল। সেই কারণেই সারনাথের বৌদ্ধ স্থাপত্যের অনুকরণে ঘণ্টাতলা নির্মাণ করা হয়। পরিকল্পনা করেন শিল্পী সুরেন কর। বিশ্বভারতীর ইতিহাস থেকে জানা যায় ১৯১৯ সালে প্রীতি দেবীর (যিনি লেডি রানু মুখার্জি নামে পরিচিত ছিলেন) ছাত্রীবৃত্তির ৩০ টাকা এই স্থাপত্য তৈরিতে ব্যবহৃত হয়েছিল। তবে ঘণ্টা বদলানোর বিষয়টি ক্যাম্পাসে নতুন নয়। আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ে ঘণ্টাতলার ঘণ্টাটি চুরি যাওয়ার পরেও তা প্রতিস্থাপিত হয়েছিল। বিশ্বভারতীর রীতি অনুযায়ী, আশ্রম প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠান শুরুর আগে তিনবার ঘণ্টা বাজানো হয়। এছাড়া, সকলকে একত্রিত করতেও সিংহসদনের ঘণ্টা বাজানো হয়। পাঁচবার ঘণ্টা বাজানোর মাধ্যমে আশ্রমবাসী তথা আবাসিক ছাত্রছাত্রীদের বিপদ সংকেত দেওয়া হয়। এছাড়া, এখনও পাঠভবনের প্রাত্যহিক বৈতালিক ও ক্লাস শেষ হলে ঘণ্টা বাজিয়েই পর্ব শেষের জানান দেওয়া হয়। শান্তিনিকেতনে ঘণ্টা বাজানোর এই রীতি শুরু করেছিলেন জ্ঞানেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। পাঠভবনের অধ্যক্ষা বোধিরূপা সিংহ বলেন, ঘণ্টাগুলিতে ফাটল ধরার জন্য এর পরিবর্তন জরুরি হয়ে পড়েছিল। বিষয়টি বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য বিনয়কুমার সরেনকে জানিয়েছিলাম। কর্তৃপক্ষ ইতিবাচক উদ্যোগ নেওয়ায় তাদের ধন্যবাদ জানাই।