কাঁকসায় নেই হিমঘর, বাধ্য হয়ে কম দামে আলু বিক্রি করতে হচ্ছে চাষিদের
বর্তমান | ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪
সংবাদদাতা, মানকর: আলু চাষের মরশুম শুরু হয়েছে। কিন্তু বাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আলু বিক্রি করে লাভের মুখ আর দেখতে পাচ্ছেন না কাঁকসার চাষিদের একাংশ। কারণ কাঁকসা ব্লকে কোনও হিমঘর নেই। ফলে ফসল রাখতে গেলে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে গলসি বা আউশগ্রামে যেতে হয়। অভিযোগ, হিমঘর চেয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েও লাভ হয়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কাঁকসার বিভিন্ন এলাকায় বছরভর বিভিন্ন ফসলের চাষ হয়। তবে আমলাজোড়া, ত্রিলোকচন্দ্রপুর, বনকাটি সহ একাধিক পঞ্চায়েত এলাকায় আলুর চাষ হয়। কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ব্লকে প্রায় ২৫০ হেক্টর জমিতে প্রতি বছর আলুর চাষ হয়ে থাকে। চাষিরা জানান, বিঘা প্রতি ৮০ থেকে ৯০ বস্তা করে আলু ফলন হয়। এক বস্তা আলুর পরিমাণ ৫০ কেজি। কিন্তু প্রতি বছর চাষের খরচ বাড়ছে। সাধারণত মার্চের প্রথম দিকেই আলু মাঠ থেকে তোলা হয়। সেই সময় বস্তা প্রতি দাম খুবই অল্প থাকে। হিমঘর না থাকায় বাধ্য হয়ে সেই টাকাতেই আলু বিক্রি করতে হয়। ফলে ক্ষতির মুখে পড়তে হয় চাষিদের। কাঁকসার চাষি তন্ময় ঘোষ বলেন, ব্লকে হিমঘর না থাকায় আমাদের সমস্যা হয়। দূরের হিমঘরে আলু রাখতে বস্তা পিছু গাড়ি ভাড়া প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ টাকা করে পড়ে যায়। তার সঙ্গে হিমঘরের ভাড়া রয়েছে। ফলে বহু চাষির সামর্থ্য না থাকায় হিমঘরে আলু না রেখে অল্পদামে তখনই বিক্রি করে দিতে বাধ্য হন। অনেকে কম টাকায় খোলা বাজারেও আলু বিক্রি করেন। চাষিরা জানান, বিকল্প পদ্ধতি হিসেবে যে মাঠে আলু তোলা হয়। সেই মাঠেই একটি জায়গায় প্রথমে আলুগুলিকে রাখা হয়। তার উপরে দেওয়া হয় খড়ের আচ্ছাদন। তিনটিস্তরে এই আচ্ছাদন দেওয়া হয়। যাতে খড় উড়ে না যায় সেজন্য দড়ি দিয়ে বাঁধা হয়। তবে এভাবে সর্বোচ্চ এক থেকে দেড় মাস আলু রাখা যায়। বেশি সময় এভাবে রাখলে আলু নষ্ট হয়ে যায়। চাষিদের একাংশের অভিযোগ, আউশগ্রাম বা গলসি এলাকার হিমঘরে স্থানীয় চাষিদের ফসল রাখার জন্য আগ্রাধিকার দেওয়া হয়। ফলে অনেক সময় এমনও হয়েছে কাঁকসা থেকে ফসল নিয়ে গিয়ে দিনভর দাঁড়িয়ে থেকে ফসল নিয়ে ফিরতে হয়েছে। এই বিষয়ে পশ্চিম বর্ধমান জেলা পরিষদের কৃষি, সেচ ও সমবায় কর্মাধ্যক্ষ সমীর বিশ্বাস বলেন, আমরা জেলা পরিষদ থেকে চাষিদের এই সমস্যার বিষয়ে আলোচনা করেছি। সমস্যার কীভাবে সুরাহা হয় তা নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে।