• ১২৫জোড়া পাত্রপাত্রীর বিয়ের আসর বর্ধমানের কাঞ্চননগরে
    বর্তমান | ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: সকাল থেকে ভেসে আসছে সানাইয়ের সুর। বাজছে বাজনা। কখনও শোনা যাচ্ছে ‘শ্বশুড়বাড়ি জিন্দাবাদ আবার কখনও কানে আসছে ‘মেহেন্দি লাগাকে রাখনা’। বেলা গড়াতেই উলুধ্বনি আর মন্ত্রোচ্চারণে যেন মধুর বৃন্দাবন হয়ে উঠেছিল বর্ধমানের কাঞ্চননগরের কঙ্কালেশ্বরী মন্দির চত্বর। তারই মধ্যে অনেক যুবক-যুবতী ভবিষ্যতে একসঙ্গে চলার শপথ নিচ্ছে। লাল বেনারসী পরে বসে রয়েছে ১২৫জন পাত্রী। ধুতি আর পাঞ্জাবি পরে বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন সম সংখ্যক পাত্র। বরকর্তা বেশে হাজির বিধায়ক খোকন দাস। কনেদের হাতে তুলে দিচ্ছেন সোনার অলঙ্কার। সেই সঙ্গে প্রত্যেক দম্পতীকে উপহার হিসাবে দেওয়া সাইকেল, সেলাই মেশিন, আলমারি, আলনা পরপর সাজানো রয়েছে। সন্ধ্যা নামতেই বিয়ের আসরে হাজির হলেন রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, অভিনেতা অঙ্কুশ, জেলাশাসক আয়েশা রানি এ, পুলিস সুপার সায়ক দাস। ভিআইপিদের তালিকা লম্বা। কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়, বর্ধমানের চেয়ারম্যান পরেশ সরকার-কে নেই সেই তালিকায়। রাতে বিয়ের শেষে ভূরিভোজেরও আয়োজন করা হয়েছিল। ছিল জিভে জল আনা মেনু। বিধায়ক খোকন দাস বলেন, প্রতি বছরই গণবিবাহের আয়োজন করি। এবার ১২৫ জোড়া পাত্রপাত্রীর বিয়ে দেওয়া হল। ওদেরকে বিভিন্ন আসবাবপত্র দেওয়ার পাশাপাশি চাল, ডাল সবকিছুই দেওয়া হয়েছে। কনেদের সাজানোর জন্য আলাদা ব্যবস্থা ছিল। ব্যান্ডপার্টি সহ বিভিন্ন বাজনার সহকারে বরদের টাউনহল থেকে কাঞ্চননগরে আনা হয়েছিল।


    বিয়ে করতে এসেছিলেন হুগলির ভদ্রশ্বরের মণীষা চৌধুরী। তিনি বলেন, এমন পরিবেশে বিয়ে করতে পেরে ভালোই লাগছে। একসঙ্গে এতজনকে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে দেখলাম। নতুন জীবন শুরুর আগে নতুন অভিজ্ঞতার সাক্ষী থাকলাম। এক কনের বাবা শম্ভু দাস বলেন, আমাদের আর্থিক অবস্থা ভালো নয়। এমন জমজমাট করে বিয়ে দিতে পারতাম না। মেয়েকে বিধায়ক সোনার অলঙ্কার দিয়েছেন। আলমারি, আলনা সব কিছুই তিনি দিয়েছেন। আমি এত কিছু দিতে পারতাম না। এক পাত্রর আত্মীয়া সুনীতা শর্মা বলেন, মন্দিরে সামনে মা’কে সাক্ষী রেখে ওরা নতুন জীবন শুরু করল। এটা কম বড় পাওনা নয়। মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, এটা প্রশংসনীয় উ঩দ্যোগ। বিয়ের জন্য যা কিছু দরকার সবটাই এখানে ছিল। পাত্রপক্ষ বরযাত্রীও এনেছিল। তাদের খাওয়ার বন্দোবস্ত করা হয়। কনেপক্ষের লোকজনদেরও আপ্যায়ন করা হয়েছিল। এদিন মেনুতে  মাছ মাংস ও মিষ্টি সহ হরেক পদ ছিল।


    বিয়ের এমন পরিবেশ দেখে খুশি অভিনেতা অঙ্কুশও। তিনি বলেন, সবার নতুন জীবন ভালো হোক। উদ্যোক্তা খোকন দাস বলেন, বিয়ের জন্য সারা বছর ধরে প্রস্তুতি নেওয়া হয়। পাত্র বা পাত্রীর লোকজন আগে থেকে বিয়ের জন্য আবেদন করেন। তাঁদের জন্য কানের, আংটি সহ অন্যান্য অলঙ্কার তৈরি করার প্রস্তুতিও আগে থেকেই শুরু হয়। তারপর নির্দিষ্ট দিন ঠিক করে গণবিবাহের আসর বসানো হয়।
  • Link to this news (বর্তমান)