ফিশ মার্কেট তৈরিতে উদ্যোগী পুরসভা, থাকছে কমিউনিটি হল
বর্তমান | ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪
সংবাদদাতা, নবদ্বীপ: ইলিশ, চিংড়ি হোক, বা রুই-কাতলা, ট্যাংরা-নবদ্বীপ শহরের কেন্দ্রীয় বাজারে এরকম হরেক কিসিমের মাছ মিলবে। খুচরো ব্যবসার পাশাপাশি পাইকারি মাছ বিক্রিও হবে একই বাজারে। নবদ্বীপ পুরসভার উদ্যোগে শহরের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে সেন্ট্রাল ফিশ মার্কেট বা কেন্দ্রীয় মৎস্য বাজার গড়ার কাজ জোরকদমে চলছে। ভাগীরথীর তীরে দণ্ডপাণিতলায় এই বাজারটি গড়ে উঠলে ক্রেতাদের পাশাপাশি মাছ বিক্রেতাদেরও সুবিধা হবে।
মৎস্য দপ্তরের বরাদ্দ প্রায় ২ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকায় ১৪৫৭.১৪ বর্গমিটার জমিতে মাছ বাজারটি তৈরি হচ্ছে। এখানে উন্নত পদ্ধতিতে সেন্ট্রাল ফ্রিজারের মাধ্যমে মাছ সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকবে। প্রায় ছয়মাস আগেই এই মাছবাজারটি তৈরি শুরু হয়েছিল। এখন জোরকদমে ভবন সহ নানা পরিকাঠামো গড়া হচ্ছে। খুব তাড়াতাড়ি বাজারটি উদ্বোধনের পরিকল্পনা রয়েছে। পুরসভার চেয়ারম্যান বিমানকৃষ্ণ সাহা বলেন, মূলত মৎস্যজীবীদের নানা সমস্যার সমাধান করবে এই বাজার। পাইকারি ও খুচরো-দু’ভাবেই মাছ বিক্রি হবে। নবদ্বীপের মানুষও এখানে নানারকম মাছ খুঁজে পাবেন। এই প্রকল্পে ভাগীরথী-তীরবর্তী দুঃস্থ মৎস্যজীবীদের কীভাবে সুযোগ-সুবিধা দেওয়া যায়- সেটা আমরা দেখছি।
নদী-তীরবর্তী মৎস্যজীবী ও মাছ ব্যবসায়ীরা এখানে ব্যবসা করতে পারবেন। ফলে নদীয়ালি মাছও এই বাজারে মিলবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, এই কেন্দ্রীয় মাছ বাজারে তিনটি ব্লক থাকছে। প্রথম ব্লকে মাছ বিক্রেতাদের জন্য প্রায় ৪০টি দোকান তৈরি হচ্ছে। দ্বিতীয় ব্লকে কোল্ড স্টোরেজ, সাইকেল গ্যারেজ, ক্যান্টিন, বিদ্যুতের পাওয়ার রুম, মৎস্যজীবীদের জন্য কমিউনিটি হল গড়া হচ্ছে। তিন নম্বর ব্লকে পুরুষ ও মহিলাদের পৃথক শৌচাগার সহ নানা পরিকাঠামো থাকবে।
শহরের প্রবীণ বাসিন্দা ফটিক কুণ্ডু বলেন, একটা সময় ভাগীরথী নদী থেকে ট্যাংরা, কাজরি, কই, মৌরলা, চিংড়ি সহ নানারকম মাছ মিলত। এখন শহরের বিভিন্ন জায়গায় বাজার রয়েছে। কোনদিন কোথায় কোন মাছ পাওয়া যাবে-বোঝা দুষ্কর। কেন্দ্রীয় মাছবাজারে সবরকম মাছই মিলবে বলে আশা করছি।
প্রতিদিনই ভাগীরথীতে মাছ ধরেন পরেশ রাজবংশী, ভরত রাজবংশীরা। তাঁরা বলেন, রোজই নদীতে কমবেশি মাছ পাই। কিন্তু সেই মাছ পাড়ায় পাড়ায় বিক্রি করে তেমন দাম পাই না। এই বাজারে ক্রেতাদের ভিড় হবে। তাই এখানে সঠিক দাম পাওয়া যাবে বলে আশা করছি।
প্রাচীন মায়াপুরের রাজবংশীপাড়ার বাসিন্দা রবি রাজবংশী বলেন, এই বাজারটি চালু হলে আমাদের মতো ক্ষুদ্র মাছ ব্যবসায়ীদের খুবই উপকার হবে। এখান থেকে পাইকারি দামে মাছ কিনে পাড়ায় পাড়ায় বিক্রি করতে পারব।