• রামনগরে ধুন্ধুমার, জাতীয় সড়ক অবরোধ
    বর্তমান | ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কাঁথি: কন্টাই কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের নির্বাচন ঘিরে রামনগরে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হল। রামনগর কলেজে ভোট চলাকালীন ভোটদানে বাধা ও ভোটার স্লিপ কেড়ে নেওয়ার অভিযোগে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে তুমুল ঝামেলা বাধে। ভোট কেন্দ্রের সামনে সঙ্গে শাসক দলের সঙ্গে এঁটে উঠতে পারেনি বিজেপি। দলের রাজ্য কমিটির সদস্য তপন মাইতি ও জেলা কমিটির সদস্য তারাপদ মাইতির নেতৃত্বে বিজেপির নেতা-কর্মীরা দীঘাগামী জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন। এনিয়ে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। কাঁথি শহরে ক্ষেত্রমোহন বিদ্যাভবনে ভোট চলাকালীন এক ভুয়ো ভোটারকে পাকড়াও করে পুলিস। কোলাঘাট থানার কোলা ইউনিয়ন হাইস্কুলে ভোট চলাকালীন তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে তীব্র উত্তেজনা ছড়ায়। একইভাবে উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি হয় হেঁড়িয়া শিবপ্রসাদ ইন্সটিটিউশনেও।


    রবিবার সকাল থেকেই টানটান উত্তেজনায় কন্টাই কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের নির্বাচন শুরু হয়। পূর্ব মেদিনীপুরে মোট ১০টি জায়গায় ভোট হয়। এছাড়াও পশ্চিম মেদিনীপুরের মধ্যে বেলদা এবং কলকাতায় ওই ব্যাঙ্কের বড়বাজার শাখায় নির্বাচন হয়। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে কাঁথি ও এগরার পাঁচটি ভোট গ্রহণ কেন্দ্রে নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল আধা সেনা। পোলিং প্রেমিসেস এলাকায় আধা সামরিক জওয়ানরা ছিলেন। গেটের বাইরে নিরাপত্তায় ছিল জেলা পুলিস। এদিন নন্দকুমার থানার মহারাজা নন্দকুমার মহাবিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, জাতীয় সড়কের দু’ধারে তৃণমূল, বিজেপি ও সিপিএম বড় ক্যাম্প করে প্রার্থীদের নামের তালিকা ধরে ভোটারদের বোঝাচ্ছেন। ওই কলেজে গোটা তমলুক মহকুমা এলাকার ব্যাঙ্কের সদস্যদের ভোট ছিল। প্রতিটি ক্যাম্পে ছিল ভিড়। জাতীয় সড়কের ধরে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের সামনে বারবার জটলা সরাতে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায় পুলিসকে।


    সকালেই হেঁড়িয়া শিবপ্রসাদ ইন্সটিটিউশনে তৃণমূল-বিজেপি বাদানুবাদে উত্তেজনা ছড়ায়। খেজুরি-১ ও ২, নন্দীগ্রাম-১ ও ২ ও  চণ্ডীপুর এলাকার ব্যাঙ্কের সদস্যরা এখানেই ভোট দেন। ভোট উপলক্ষ্যে হেঁড়িয়ায় যানজটে হাঁসফাঁস অবস্থা। ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ঢোকার মুখে বিজেপি নেতা প্রলয় পাল সহ আরও বেশ কয়েকজন পুলিস কর্মীদের সঙ্গে তীব্র বচসায় জড়ান। তাঁদের অভিযোগ, ভোটারদের পরিচয়পত্র ছাড়াই ভিতরে যেতে দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে বহিরাগতরাও ভিতরে চলে যাচ্ছে। ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের সামনে জটলা সরাতে পুলিসকে নাস্তানুবাদ হতে হয়।


    কোলাঘাট থানার কোলা ইউনিয়ন হাইস্কুলে ভোট চলাকালীন প্রচুর বহিরাগত জড়ো ছিল। ভোটারদের স্লিপ ছিঁড়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। রাস্তার উপর তৃণমূল ও বিজেপি কর্মীদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি, ঠেলাঠেলি হয়। সেই সময় বিজেপির সংখ্যালঘু সেলের জেলা সভাপতি শেখ সাদ্দাম হোসেন আক্রান্ত হন বলে অভিযোগ। এনিয়ে প্রবল উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। কাঁথি শহরে কন্টাই ক্ষেত্রমোহন বিদ্যাভবনের ভোটের দিকে এদিন গোটা শহরবাসীর নজর ছিল। কারণ, এই আসনে তৃণমূল কংগ্রেসের দুই কাউন্সিলার গোঁজ প্রার্থী। শেষ মুহূর্তে ভোটগ্রহণ কেন্দ্র বদল হওয়ায় আধা সেনা মোতায়েন ছিল। এদিন ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, ডিএসপি(ডিঅ্যান্ডটি) আবু নুর হোসেনের নেতৃত্বে দুই ইন্সপেক্টর সহ প্রায় একশো পুলিস নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে। স্কুল ক্যাম্পাসের মধ্যে আধাসেনা। প্রত্যেক দলের প্রার্থীরা গেটের সামনে দাঁড়িয়ে। ছোটখাট বিষয় নিয়েই মাঝেমধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। বেলা দেড়টা নাগাদ একজন ভুয়ো ভোটারকে সেখান থেকে পাকড়াও করে পুলিস। একইভাবে কাঁথির রঘুনাথ আয়ুর্বেদ মহাবিদ্যালয়, চন্দ্রামণি ব্রাহ্ম বালিকা বিদ্যালয়, নামাল কালীপ্রসাদ বিদ্যাপীঠ এবং এগরায় জেড়খান গয়াপ্রসাদ বিদ্যাপীঠে আধা সেনার নিরাপত্তায় নির্বিঘ্নে ভোট হয়।
  • Link to this news (বর্তমান)