• পাচারের সময় গ্রেপ্তার ঝাড়খণ্ডের ড্রাগ ডিলার
    বর্তমান | ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: বিপুল পরিমাণ মাদক পাচারের সময় ঝাড়খণ্ডের দুই মাদক মাফিয়াকে গ্রেপ্তার করল বহরমপুর থানার পুলিস। স্পেশাল টাস্ক ফোর্স ও বহরমপুর থানার পুলিস যৌথ অভিযান চালিয়ে শনিবার রাতে প্রায় ২২ হাজার বোতল নিষিদ্ধ কাশির সিরাপ বাজেয়াপ্ত করে। সেই সঙ্গে মহম্মদ  জিল্লুর রহমান ও বাবলু প্রসাদ গুপ্ত নামে ঝাড়খণ্ডের দুই মাদক মাফিয়াকে গ্রেপ্তার করে। তাদের বাড়ি ঝাড়খণ্ডের সাহেবগঞ্জ এলাকায়। উদ্ধার হওয়া সিরাপের দাম প্রায় ৪৫ লক্ষ টাকা বলে পুলিস জানিয়েছে। রবিবার  ধৃতদের বহরমপুরের বিশেষ মাদক আদালতে তুলে পুলিসি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তরা এই সিরাপ কোথা থেকে নিয়ে আসছিল, তা জানতে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছেন বহরমপুর থানার তদন্তকারী আধিকারিকরা। 


    পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, বহরমপুরের ফতেপুর এলাকায় ১২ নম্বর জাতীয় সড়কে শনিবার রাতে নাকা তল্লাশি করছিল পুলিস। হরিয়ানার একটি ট্রাক থামিয়ে তল্লাশি করতেই এই বিপুল পরিমাণ নিষিদ্ধ সিরাপ উদ্ধার হয়। ট্রাকের কন্টেনারের দরজা খুলতেই বিভিন্ন বাক্সে নানা ধরনের সামগ্রীর দেখা মেলে। তার মধ্যে কয়েকটি সাদা চটের বস্তার মধ্যে সুন্দরভাবে প্যাকিং করা ছিল এই বিপুল পরিমাণ কাশির সিরাপ। 


    বহরমপুর থানার আইসি উদয়শঙ্কর ঘোষ বলেন, এসটিএফ এবং আমরা যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে এই ট্রাকটিকে আটক করি। কন্টেনারের ভিতরে বিভিন্ন সামগ্রীর মধ্যে লুকিয়ে এই সিরাপ পাচার করা হচ্ছিল। দুই ড্রাগ ডিলারকে আমরা পাকড়াও করেছি। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এই চক্রের সঙ্গে আর কারা কারা জড়িত আছে তা জানার চেষ্টা চলছে।  উদ্ধার হওয়া এই সিরাপে অতিরিক্ত পরিমাণে কোডাইন আছে। যা মাদক হিসেবে খুবই জনপ্রিয়। 


    উল্লেখ্য, উত্তরপ্রদেশই এখন নিষিদ্ধ কাশির সিরাপ তৈরির আতুঁড়ঘর। যোগীরাজ্যেরই বিভিন্ন জায়গায় বেআইনিভাবে তৈরি হচ্ছে এই সিরাপ। সড়কপথে তা ঢুকছে বাংলায়। এরপর সীমান্ত পেরিয়ে তা চলে যাচ্ছে বাংলাদেশে। এদিন আটক হওয়া এই বিপুল পরিমাণের সিরাপও মুর্শিদাবাদ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পাচারের পরিকল্পনা ছিল দুষ্কৃতীদের। কিন্তু, তার আগেই পুলিস ট্রাকটিকে আটক করে।


    জেলা পুলিসের এক আধিকারিক বলেন, এরাজ্যে এই ধরনের সিরাপ তৈরি হয় না। কিন্তু, এর চাহিদা রয়েছে বাংলাদেশে। এই অবস্থায় এখানকার কারবারিরা উত্তরপ্রদেশ থেকে সিরাপ আনার জন্য যোগাযোগ করছে। 


    জানা গিয়েছে, গোরক্ষপুর, প্রয়াগরাজ, মিরাট, কানপুর সহ কয়েকটি জায়গায় বেআইনিভাবে কাশির সিরাপ তৈরি হচ্ছে। ওইসব অঞ্চলে ব্যাঙের ছাতার মতোই গজিয়ে উঠেছে এই সিরাপ তৈরির অনেক কারখানা। স্থানীয়ভাবে এগুলি বিক্রি হয়ই। তার পাশাপাশি পাচার হয় বিভিন্ন রাজ্যেও। এরাজ্যের চোরাকারবারিরা উত্তর প্রদেশের কারখানা মালিকদের প্রস্তাব দেয় বাংলাদেশে কাশির সিরাপ পাঠানোর জন্য। তাদের বিপুল টাকার লোভ দেখানো হয়। তাতে রাজিও হয় যোগীরাজ্যের অসাধু কারবারিরা। এভাবে বড় বড় ট্রাকে ভরে মাল পাঠাচ্ছে তারা। বিভিন্ন রুটে তা ঢুকছে এরাজ্যে।
  • Link to this news (বর্তমান)