• বিজয় দিবসের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে কুলিকের মিলিটারি ফরেস্ট
    বর্তমান | ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, রায়গঞ্জ: বাংলাদেশে অস্থির পরিস্থিতির মধ্যে ১৬ ডিসেম্বর সেদেশে পালিত হবে বিজয় দিবস। ১৯৭১ সালে ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানের হাত থেকে স্বাধীনতা ছিনিয়ে নিয়েছিল বাংলাদেশ। এবং তাতে পূর্ণ সহযোগিতা করেছিল ভারত। সেই ইতিহাস সকলেরই জানা। কিন্তু ইতিহাসের মধ্যেও আরও একটি ইতিহাস আজও অক্ষত এপার বাংলার রায়গঞ্জে।


    উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ কুলিক ফরেস্টের একটি অংশ মিলিটারি ফরেস্ট নামে পরিচিত। এই মিলিটারি ফরেস্টে মিশে রয়েছে দু’দেশের সৌহার্দ্য বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা। তবে বর্তমান সময়ে দু’দেশের সম্পর্ক বেশ চর্চিত দুই দেশের রাজনৈতিক মহলে। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের পাশাপাশি ভারত বিদ্বেষী মনোভাব ক্ষত সৃষ্টি করেছে এদেশের নাগরিকদের মনে। যে মাটিতে একসময় যুদ্ধের প্রস্তুতি হয়েছিল, সেই মাটিকেই অপমান করছে বর্তমান বাংলাদেশ। পূর্ব পাকিস্তানকে বাংলাদেশে রূপান্তর করতে ভারত যে পদক্ষেপ নিয়েছিল তা ভুলতে বসেছে সে দেশের সরকার। তবে এই মিলিটারি ফরেস্ট সেসময় বাংলাদেশিদের স্বাধীনের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিল


    স্থানীয়রা জানান, এই মিলিটারি ফরেস্ট নামের পিছনে রয়েছে ইতিহাস। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের সেনাকে সরাতে বাংলাদেশিদের এপারে এনে তাদের প্রশিক্ষণ দিত ভারতীয় সেনা। সেই প্রশিক্ষণে জন্য ব্যবহৃত বাঙ্কার কিংবা ফায়ারিং স্পট আজও রয়েছে। সেই মিলিটারি ফরেস্টের জায়গাটিকে স্থানীয় তরুণ, যুবকরা এখনও প্রশিক্ষণের কাজে লাগান। তাঁদের প্রশিক্ষণ দেন রায়গঞ্জের বাসিন্দা সঞ্জিৎ যাদব। তিনি বলেন, রায়গঞ্জের এই ফরেস্টের সঙ্গে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জড়িয়ে রয়েছে। সেই ইতিহাস বিজড়িত জায়গায় এখন রায়গঞ্জের তরুণ, যুবকরা প্রশিক্ষণ নেন। কীসের প্রশিক্ষণ? সেনাবাহিনীতে শারীরিক পরীক্ষায় পাশ করার জন্য এখানে দৌড় প্র্যাক্টিস করেন। 


    মিলিটারি ফরেস্ট নিয়ে গবেষণা করেছেন বিশিষ্ট শিক্ষক প্রিয়রঞ্জন পাল।  তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে এপ্রিল মাসে মুক্তি যুদ্ধ শুরু হয়। কুলিক ফরেস্টকে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করেছিল ভারতীয় সেনা। তবে বর্ষায় বন্যার কারণে এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রকে পরবর্তীতে দার্জিলিংয়ের পানিঘাটা এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। 


    ভারত বন্ধুদেশ হিসেবে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ালেও লাগাতার ভারত বিদ্বেষী মনোভাবের পিছনে একটি অংশের চক্রান্তকে দায়ী করেছেন প্রিয়রঞ্জনবাবু। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধকে ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে দেওয়ার চেষ্টা করছে কোনও এক শক্তি। তবে তা কোনওভাবেই সম্ভব নয়। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারত সাহায্য করেছিল। রায়গঞ্জের মিলিটারি ফরেস্ট সেই ইতিহাসের সাক্ষী।
  • Link to this news (বর্তমান)