বাংলাদেশের জলপথ ধরে উত্তর-পূর্ব ভারতে পণ্য পরিবহণের সুযোগ বাড়ল, উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই তিনটি জাহাজের উদ্বোধন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর
বর্তমান | ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বাংলাদেশের বর্তমান উত্তপ্ত পরিস্থিতে সেদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কে ‘শীতলতা’ চলছে। কিন্তু এই পরিস্থিতিতেও বাংলাদেশের জলপথ ব্যবহার করে (ইন্দো বাংলাদেশ প্রোটোকল রুট) কলকাতা-হলদিয়া বন্দর থেকে উত্তর-পূর্ব ভারতে পণ্য পরিবহণ আরও সম্প্রসারিত হচ্ছে। রবিবার কলকাতা বন্দর থেকে অভ্যন্তরীণ জাতীয় জলপথ ব্যবহার করা তিনটি পণ্যবাহী জাহাজের যাত্রার সূচনা করেন কেন্দ্রীয় জাহাজমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনওয়াল। এর মধ্যে একটি জাহাজ ‘এমভি ত্রিশূল’ জাতীয় জলপথ ছাড়াও বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ জলপথ ব্যবহার করে অসমের পাণ্ডু যাবে। অন্য দু’টি জাহাজ ‘এমভি আই’ এবং ‘এমভি হোমি ভাবা’র গন্তব্য যথাক্রমে পাটনা ও বারাণসী। অভ্যন্তরীণ জলপথ ব্যবহার করে পণ্য পরিবহণ প্রকল্পের জন্য বিশেষ ভর্তুকি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। এই প্রকল্পটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘জলবাহক’। ৩০০ কিমির বেশি দূরত্বে পণ্য পাঠালে পরিবহণ খরচের ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়ের ব্যবস্থা আছে। জাতীয় জলপথ ১ নম্বর (গঙ্গা), ২ নম্বর (ব্রহ্মপুত্র) এবং ১৬ নম্বর (বরাক) নদী দিয়ে পণ্য পরিবহণ করলে এই সুবিধা মিলবে।
শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন বাংলাদেশের জলপথ ব্যবহার করে অসমসহ উত্তর-পূর্ব ভারতে পণ্য পরিবহণের চুক্তি সম্পাদিত হয়। ইতিমধ্যে এই জলপথ ব্যবহার করে পণ্য পরিবহণ শুরু হয়েছে। আগামী দিনে এই পথে পণ্য পরিবহণ আরও বাড়বে বলে কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা ইনল্যান্ড ওয়াটারওয়েজ অথরিটি আশা করছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং শীর্ষ সরকারি আধিকারিকরা এদিনের ভাষণে জলপথে পণ্য পরিবহণ ব্যবস্থা সম্প্রসারণের সুবিধার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।
উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে জলপথে সংযোগ স্থাপনের জন্য ইন্দো-বাংলাদেশ প্রোটোকল রুটে মোট ৮টি রুট চিহ্নিত করা হয় দুই দেশের মধ্যে চুক্তিতে। এর মধ্যে একটি রুট দিয়ে এখন কলকাতা-হলদিয়া বন্দর হয়ে পণ্যবাহী জাহাজ চলছে। সুন্দরবনের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশের জল সীমানায় প্রবেশ করে জাহাজগুলি। তারপর সেগুলি প্রবেশ করে বাংলাদেশের নদীপথ ধরে অসমের ধুবড়িতে। সেখান থেকে জাহাজ যায় অসমের পাণ্ডু ও শিলঘাটে।
বাংলাদেশের জলপথ ছাড়াও ১ এবং ২ নম্বর জাতীয় জলপথ ব্যবহার করে জাহাজগুলি। ১ নম্বর জাতীয় জলপথটি গঙ্গার উপর হলদিয়া থেকে প্রয়াগরাজ পর্যন্ত বিস্তৃত। ২ নম্বর জাতীয় জলপথ বিস্তৃত ব্রহ্মপুত্র নদীতে অসমের ধুবড়ি থেকে সাদিয়া পর্যন্ত। অসমের পাণ্ডুতে যে জাহাজটি যাচ্ছে তার দুটি বার্জ যুক্ত করা আছে। এতে মোট ১৫০০ টন সিমেন্ট পাঠানো হয়েছে। পাটনা ও বারাণসীর দুটি জাহাজে যথাক্রমে ১০০০ টন জিপসাম ও ২০০ টন কয়লা পাঠানো হয়েছে। জলপথে কলকাতা থেকে পাণ্ডু যেতে ১৫ দিন, পাটনা যেতে সাতদিন ও বারাণসী ১৪ দিন নির্দিষ্ট করেছে জলপথ পরিবহণ সংস্থা।