প্রকাশ্য রাস্তায় সব্জি বিক্রেতাকে কুপিয়ে খুনের চেষ্টা তিন যুবকের, গ্রেপ্তার এক
বর্তমান | ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: রবিবার দুপুরে প্রতিবেশীর বাড়িতে পিকনিক হবে। তার জন্য সব্জি আনতে বেরিয়েছিল স্থানীয় তিন যুবক। কিন্তু, আব্দার ষোলাআনা। সব্জি নিলেও টাকা দিতে নারাজ তারা। এ নিয়ে সব্জি বিক্রেতার সঙ্গে তুমুল বচসা হয় ওই যুবকদের। বচসার জেরে সব্জি বিক্রেতা সফি আহমেদকে (২৭) কুপিয়ে খুনের চেষ্টা করে তারা। ওই বিক্রেতা এখন আশঙ্কাজনক অবস্থায় এন আর এস হাসপাতালে ভর্তি। রবিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে তালতলা থানা এলাকার আঘা মেহেদি স্ট্রিটে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তালতলা থানায় খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অভিযুক্তদের নাম মহম্মদ মানোয়ার, আফ্রিদি এবং সইফ। তদন্তে নেমে মহম্মদ মানোয়ারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। এলাকায় পুলিস মোতায়েন করা হয়েছে।
আঘা মেহেদি স্ট্রিট ঘিঞ্জি এলাকা। সেখানে এদিন বাজার করতে বেরিয়েছিল তিনজন যুবক। দোকান থেকে ছ’-সাত রকমের সব্জি নেয় তারা। দোকানটি চালান মূলত সফির বাবা। তবে রবিবার বেচাকেনার চাপ থাকায় তিনি বাবাকে সাহায্য করতে এসেছিলেন। ব্যাগ ভরে বাজার নেওয়ার পর টাকা না দিয়েই চলে যাওয়ার চেষ্টা করে অভিযুক্তরা। তাদের টাকা দিতে বলেন সফির বাবা নিশো আহমেদ। মানোয়ার সাফ জানিয়ে দেয়, ‘টাকা নেই’। বিনামূল্যেই দিতে হবে তাদের। তখন নিশো তাদের সব্জি রেখে দিতে বলেন। তাতেই বেজায় খেপে যায় তিন যুবক। প্রকাশ্য রাস্তায় ব্যবসায়ীকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। প্রতিবাদ করেন সফি। এরপরেই পকেট থেকে ছুরি বের করে সরাসরি যুবকের পেটে ঢুকিয়ে দেয় মানোয়ার। তার সঙ্গে ছিল আফ্রিদি ও সইফ। এলোপাথারি ছুরি চালানো হয় বলে অভিযোগ। রক্তাক্ত হয়ে পড়ে গোটা এলাকা। প্রকাশ্য রাস্তায় এমন দৃশ্য দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন স্থানীয়রা। তাঁরাই মানোয়ারকে ধরে ফেলেন। অবস্থা বেগতিক বুঝে চম্পট দেয় বাকি দুই অভিযুক্ত।
স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত আহত সফিকে এন আর এস মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যান। ট্রমা কেয়ার সেন্টারে ভর্তি করা হয় তাঁকে। দ্রুত অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা করা হয়। সূত্রের খবর, তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গোটা ঘটনা জানায় পুলিসকে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিস। আহতের বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের চেষ্টার মামলা রুজু করেন তদন্তকারীরা। মূল অভিযুক্ত মানোয়ারকে গ্রেপ্তার করেন তাঁরা। ঘটনাস্থল থেকে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছেন তদন্তকারীরা। পুলিস জানিয়েছে, বাকি দু’জনের খোঁজ চলছে। দ্রুত ফেরারদের গ্রেপ্তার করা হবে। এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। নাজিমা বেগম নামে এক মহিলার কথায়, বাজারের মধ্যেই খুনের চেষ্টার ঘটনা ঘটছে। আমরা কেউই নিরাপদে নেই। পুলিসি টহলদারির প্রয়োজন রয়েছে।