• বিদ্যাধরীর পাড় দখল করে বেআইনি  নির্মাণকাজ, ক্ষোভে ফুঁসছে স্থানীয়রা
    বর্তমান | ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: যত দিন যাচ্ছে ততই বিপন্ন হয়ে পড়ছে বিদ্যাধরী নদী। অভিযোগ, নদীর পাড় দখল করে তৈরি হচ্ছে দোকান ও বসতবাড়ি। নির্মাণের সংখ্যা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। এর ফলে আগামী দিনে বিপদের আশঙ্কা দেখা দেবে বলে মনে করছে সাধারণ মানুষ। পাড় দখল কে করেছে? এই নিয়ে শুরু হয়েছে তৃণমূল ও সিপিএমের তরজা।


    হাড়োয়া, মিনাখাঁ ও দেগঙ্গার বুক চিরে বয়ে গিয়েছে বিদ্যাধরী নদী। এক সময় এই নদীর উপর ছিল সাধারণ মানুষের জীবিকা। মাছ চাষ হতো। যোগাযোগের মাধ্যমও ছিল এই নদী। কিন্তু কালের নিয়মে ক্রমশ বিপন্ন হয়ে পড়ছে। কোথাও গতিপথ হারিয়েছে বিদ্যাধরী। আবার কোথাও আবর্জনায় ভরেছে। কচুরিপানা এবং অজানা গুল্ম জন্মাচ্ছে নদীতে। ফলে রুদ্ধ নদীর প্রবাহমানতা। আর অসাধু কিছু মানুষ নদীর তীরে সুযোগ বুঝে নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। হাড়োয়ার কেন্দুয়া বাজার এলাকাতে নদীর পাড় দখল করে তৈরি হয়েছে কংক্রিটের বাড়ি। কোথাও বা নদী দখল করে চলছে নির্মাণ। চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে ইমারতি সামগ্রী। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় পঞ্চাশটিরও বেশি কংক্রিটের বাড়ি তৈরি হয়েছে। ফিরোজ শাহ নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘বিদ্যাধরী নদী বিপন্ন। জল বাড়লে ভয়ঙ্কর ক্ষতি হতে পারে কেন্দুয়া বাজার সহ পার্শ্ববর্তী এলাকার। যতদিন যাচ্ছে দখলদারির সংখ্যা বেড়েই চলেছে। দ্রুত প্রশাসনের ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’ গোপাল সাহা নামে অন্য এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘নদীর তীর দখল করে নির্মাণ হচ্ছে। বহুদিন ধরেই হচ্ছে। কে কাকে বলবে বলুন? বলার কিছুই নেই।’ বিদ্যাধরী বাঁচাও কমিটির সদস্যরা এ নিয়ে বারেবারে আওয়াজ তুলেছেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। কমিটির সদস্য মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘প্রশাসনের উচিত নদীকে বাঁচানো।’ হাড়োয়া পঞ্চায়েতের প্রধান সিরাজুল ইসলাম মোল্লা বলেন, ‘দখলদারি বাম আমলে হয়েছে, তৃণমূল আমলে হয়নি। নতুন করে দখল হচ্ছে তা জানা নেই। কেউ যদি আমাদের দলের নাম ভাঙিয়ে করে তাহলে সেটা মেনে নেওয়া হবে না।’ তৃণমূলের তোলা অভিযোগ অস্বীকার করেছে সিপিএম। হাড়োয়া লোকাল কমিটির সদস্য শেখ সাইনুরুজ্জামান বলেন, ‘তৃণমূলের লজ্জা নেই বলে এসব কথা বলছে। আসলে ওরা নিজেরা দখল করে আমাদের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে।’ এতকিছুর মধ্যেও বিদ্যাধরীকে বাঁচানোর আর্জি জানিয়ে চলেছেন পরিবেশ কর্মীরা। প্রদীপ সরকার নামে এক কর্মীর কথায়, ‘বিদ্যাধরী দীর্ঘদিন ধরেই দখল হয়ে চলেছে। রাজনীতি না করে নদীকে বাঁচানো দরকার। প্রশাসন সজাগ হলেই দখলদারি বন্ধ হবে।’ -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)